আটলেটিকো দে কলকাতার মোবাইল ভ্যান উদ্বোধনে হাবাসের সঙ্গে প্রসেনজিত্। শনিবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
ফিকরু তেফেরার বদলি খুঁজতে হিমশিম খাচ্ছেন আটলেটিকো দে কলকাতার কোচ আন্তোনিও হাবাস।
গার্সিয়াদের কোচের বহিরঙ্গ দেখলে অবশ্য সেটা বোঝার উপায় নেই! শনিবার বিকেলে প্রথমে অভিনেতা প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে এটিকে-র মোবাইল ভ্যান উদ্বোধন করলেন যুবভারতীতে। তার পরে ফুটবলারদের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টা করতে করতে স্টেডিয়ামে ঢুকে পড়লেন। তবে চেন্নাইয়ান এফসি ম্যাচে ফিকরু না থাকায় তিনি কতটা চাপে, সেটা প্রথমে বোঝা গেল সাংবাদিক সম্মেলনে। যেখানে হাবাস না এলেও তাঁর দলের দুই ফুটবলার কিংশুক দেবনাথ এবং লেস্টার ফার্নান্দেজ বলে গেলেন, “ফিকরুকে না পাওয়াটা সব সময়ই চাপের। ওর মতো স্ট্রাইকার দলে থাকলে এমনিতেই আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। চেন্নাইয়ান ম্যাচ আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই ম্যাচে ফিকরু থাকলে সুবিধা হত।”
ফিকরুর অনুপস্থিতিতে কিংশুকদের কোথায় সমস্যা হচ্ছে, সেটা পরে হাবাসের প্র্যাকটিসে ফুটে উঠল। আর তা হল, বলজিতের সঙ্গে ফরোয়ার্ডে কে? হাবাস শুরুতে আর্নালকে জুড়ে দিয়ে চেষ্টা করলেন। কিন্তু দেখে মনে হল, আর্নালের খেলায় খুব একটা সন্তুষ্ট নন স্প্যানিশ কোচ। তাই পরে হোফ্রেকেও একবার দেখে নিলেন। কিন্তু চেন্নাইয়ানকে হারাতে শেষমেশ কোন ফুটবলারকে সামনে খেলবেন, তা নিয়ে এখনও দ্বিধায় এটিকে কোচ। টিমের সহকারী কোচ ব্যারেটো বলছিলেন, “ফিকরুর বদলি হয় না। ও যে ফর্মে রয়েছে, তাতে ও খেললে গোটা টিমের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যেত।”
আসলে ম্যাচে ফিকরুকে পাওয়া যাবে, তা ধরেই টিম সাজাচ্ছিলেন হাবাস। কিন্তু তাঁর শাস্তি বহাল থাকায় এখন ইথিওপিরায় স্ট্রাইকারের বদলি খুঁজতে হিমশিম অবস্থা এটিকে কোচের। তবে সমস্যা যে শুধু ফিকরুকে নিয়ে তা কিন্তু নয়। পদানিও খেলতে পারবেন না মঙ্গলবারের ম্যাচে। হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট। তাই সোমবার প্রথম দলের দু’জন ফুটবলারকে ছাড়াই সম্ভবত ‘মিশন-চেন্নাই’-এ বেরোচ্ছে কলকাতার আটলেটিকো।
যদিও শুরু থেকেই আহত ফুটবলারদের সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার প্রথা চালু হাবাসের দলে। লুই গার্সিয়া এবং ম্যানেজার রজত ঘোষদস্তিদারের উদ্যোগে আগেও ডেঞ্জিল ফ্রাঙ্কোর মতো ফুটবলারকে দলের জার্সি দেওয়া হয়েছে। চোটের জন্য তিনি আর এই টুর্নামেন্টে খেলতে পারবেন না জেনেও (৬ নভেম্বর অস্ত্রোপচার) কেরল ব্লাস্টার্স ম্যাচে তাঁকে টিমের সঙ্গে রাখা হয়। গোয়া ম্যাচে আহত গার্সিয়া এবং লাল-কার্ড দেখা রাকেশ মাসিকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু এ বার আর সেই পথে আটলেটিকো হাঁটছে না কেন? টিমের এর কর্তা বললেন, “ওরা এখানে থাকলে ফিটনেস ট্রেনিং করতে পারবে। কেন না ওরা যত তাড়াতাড়ি সুস্থ হবে, ততই সুবিধা টিমের।”
হাবাসের আরও একটা চিন্তা হল, গার্সিয়াকে এই ম্যাচে পাওয়া গেলেও তাঁর শুরু থেকে খেলার সম্ভাবনা কম। টিম সূত্রের খবর, এখনও নাকি নব্বই মিনিট খেলার মতো জায়গায় আসেননি তিনি। তবে স্পেনের ট্রেনিং যে কতটা বদলে দিয়েছে ভারতীয় ফুটবলারদের, সেটা শনিবার স্বীকার করে নিলেন কিংশুক। বলছিলেন, “সারা জীবন স্টপারে খেললেও হাবাস আমাকে এখানে রাইট ব্যাক খেলাচ্ছেন। কিন্তু আমার অসুবিধা হচ্ছে না। উল্টে স্পেনে ট্রেনিং করে এমন বোঝাপড়া তৈরি হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে আমি নতুন পজিশনেই বেশি স্বচ্ছন্দ।”
এ দিকে, হাবাসের দু’ম্যাচ শাস্তি মুকুবের পরে এ বার তাঁর জরিমানা কমানোর আবেদনও করা হল এটিকে-র পক্ষ থেকে। শনিবার ফেডারেশনের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির কাছে সেই মেল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।