ফিকরুকে দায়বদ্ধ হতে বললেন

হোটেল আর মাঠ বিভ্রাটে ক্ষোভ হাবাসের

ডুরান্ড, ফেড কাপ বা আই লিগে এ সব হয়। তা বলে আইএসএলের মতো হাইপ্রোফাইল টুর্নামেন্টে! তালিকায় ঠিক করে দেওয়া খাবার, ঘর এবং ইন্টারনেট-সহ প্রয়োজনীয় সুবিধা না মেলায় রবিবার হোটেল বিভ্রাটে সারা দিন ভুগতে হল আটলেটিকো দে কলকাতাকে। সকাল দশটায় পুণে থেকে রওনা হয়ে দশ ঘণ্টা লাগল নতুন হোটেলে থিতু হতে। রাত সাতটায় নতুন হোটেলে ঢুকলেন লুই গার্সিয়া, অর্ণব মণ্ডলরা।

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:২৮
Share:

ডুরান্ড, ফেড কাপ বা আই লিগে এ সব হয়। তা বলে আইএসএলের মতো হাইপ্রোফাইল টুর্নামেন্টে!

Advertisement

তালিকায় ঠিক করে দেওয়া খাবার, ঘর এবং ইন্টারনেট-সহ প্রয়োজনীয় সুবিধা না মেলায় রবিবার হোটেল বিভ্রাটে সারা দিন ভুগতে হল আটলেটিকো দে কলকাতাকে। সকাল দশটায় পুণে থেকে রওনা হয়ে দশ ঘণ্টা লাগল নতুন হোটেলে থিতু হতে। রাত সাতটায় নতুন হোটেলে ঢুকলেন লুই গার্সিয়া, অর্ণব মণ্ডলরা। ফলে পুরো টিমকে একদিন ছুটি দিয়ে বিশ্রাম দেওয়ার যে পরিকল্পনা ছিল আন্তোনিও হাবাসের, তা-ও ভেস্তে গেল।

কোন হোটেলে থাকতে হবে তা ঠিক করে দিয়েছেন আইএসএল সংগঠকরা। গড়াপেটার নজরদারি এবং বিদেশি ফুটবলারদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত। দিল্লির যে হোটেল কলকাতার জন্য নির্ধারিত ছিল, দুপুরে সেখানে খেতে বসে খাবারের মান নিয়ে তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিদেশি ফুটবলাররা। পুণে থেকে যে ভাবে খাবার বানাতে বলা হয়েছিল তা নাকি মানা হয়নি বলে অভিযোগ। ঘরগুলোও গার্সিয়া, হোফ্রেদের পছন্দ হয়নি। টিম ম্যানেজমেন্ট সে কথা জানার পরই হোটেল পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেন। ব্যাগ-পত্তর, কিট নিয়ে ফের যমুনা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের নতুন হোটেলে রওনা দেয় হাবাস ব্রিগেড। পৌঁছয় রাতে। সেখানেও অবশ্য পুরো স্বস্তিতে নেই টিমস্টারের চ্যানেল না থাকায় কেরল ব্লাস্টার্স বনাম চেন্নাইয়ানের ম্যাচই দেখতে পাননি ফুটবলাররা।

Advertisement

কলকাতার জন্য আরও বড় ধাক্কা আসে সন্ধ্যায়। আইএসএলের পক্ষ থেকে টিম ম্যানেজার রজত ঘোষ দস্তিদারকে জানানো হয় সোমবার আধ ঘণ্টার বেশি নেহরু স্টেডিয়ামে অনুশীলন করতে পারবে না কলকাতা। ঘাসের ক্ষতি রুখতেই এই ব্যবস্থা। রজত তা কোচকে জানানোর সঙ্গে সঙ্গেই প্রচণ্ড রেগে যান হাবাস। ক্ষোভে তিনি নাকি চিত্‌কার করে বলতে থাকেন, “আমাদের মাঠে গিয়ে বাইরের টিম দু’দিন পুরো অনুশীলন করছে। আর আমরা মাত্র আধ ঘণ্টা। এর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে।” কোচকে অনেক চেষ্টা করে ঠান্ডা করেন টিম ম্যানেজার। আসলে দিল্লি ম্যাচের জন্য এক ঘণ্টার শিডিউল বানিয়েছিলেন কলকাতা কোচ। সেটা ছাঁটতে হচ্ছে বলেই অশান্ত তিনি। হাবাস সরাসরি চক্রান্তের কথা না বললেও টিমের সঙ্গে আসা কর্তারা অবশ্য এর পিছনে ‘অন্য গন্ধ’ পাচ্ছেন। এক কর্তা বললেন, “রেফারিং আমাদের বিরুদ্ধে যাচ্ছে। না হলে ইতিমধ্যেই শেষ চারে পৌঁছে যেতাম। আবার মাঠ নিয়ে সমস্যা। কোচ এতে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ।” কিন্তু ঘটনা হল, দিল্লিতে সব টিমের জন্যই এই নিয়ম চালু আছে।

এমনিতেই কলকাতা টিমের মধ্যে বেশ কিছু দিন ধরে নানা রকম অশান্তির ধোঁয়া উড়ছে। ফিকরু তেফেরার সঙ্গে পুণে ম্যাচে মাঠেই অন্তত তিন বার তর্কাতর্কি হয়েছিল লুই গার্সিয়ার। টিম সূত্রের খবর, দু’জনের মধ্যে ইগোর লড়াই তুঙ্গে উঠেছে। ফিকরু মাঠে মেজাজ হারাচ্ছেন এবং জনপ্রিয়তা বাড়াতে ‘গ্যালারি শো’ করছেন--- টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে এ রকম অভিযোগ তুলেছেন গার্সিয়া। ইথিওপিয়ান স্ট্রাইকারের দায়বদ্ধতা নিয়েও অভিযোগ। সেই ঝামেলা সামাল দিতে শনিবার রাতে তাঁর সঙ্গে একান্ত আলোচনায় বসেছিলেন কোচ। সেখানে ফিকরুকে নাকি সতর্ক করেন তিনি। টিম কর্তারা অবশ্য বলছেন, “এটা নতুন কিছু নয়। ফিকরুর পাশাপাশি বোরহা, হোফ্রের সঙ্গেও একান্তে কথা বলেছেন কোচ। এটাই তাঁর স্টাইল।” যে তিন ফুটবলার এখনও টিমে সুযোগ পাননি সেই মামুনুল ইসলাম, ক্লাইম্যাক্স লরেন্স, মহম্মদ রফিককে নিয়েও ঝামেলা বাড়ছে। এঁদের একজন হোটেলের লবিতে দাঁড়িয়ে বললেন, “বিদেশিরা সবাই সুযোগ পেল কোনও না কোনও ম্যাচে। আমরা এক মিনিটও খেলার সুযোগ পেলাম না। এ সব করছে গার্সিয়াই।” নিয়মিত সুযোগ না পাওয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ পুণে ম্যাচের গোলদাতা পদানিও। মিক্সড জোনে দাঁড়িয়ে তিনি শনিবার রাতে বলেও গিয়েছেন, “গোল পাচ্ছি তবুও কেন নিয়মিত সুযোগ পাচ্ছি না কোচকে প্রশ্ন করুন।”

আন্তোনিও হাবাস টিমের অন্দরমহলের ক্ষোভ-রাগকে অবশ্য গুরুত্বই দিচ্ছেন না। তিনি আছেন নিজের মেজাজেই। শিডিউল অনুযায়ী মাঠ না পেয়ে ক্ষুব্ধ কলকাতা কোচ হোটেলে ঢুকেই দরজা বন্ধ করে ‘বিশ্রাম’-এ চলে গিয়েছেন। কারও সঙ্গে কথা বলেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন