সাইনার চেয়ে বেশি নজর কাড়লেন সিন্ধু

সাইনা নেহওয়ালের হলটা কী? স্ম্যাশ ঠিক মতো হচ্ছে না। প্লেসিং-এর ক্ষেত্রেও বারবার সমস্যা হচ্ছে। সার্ভিস ভুল করছেন। তাঁকে বেশ টেনসডও দেখাচ্ছিল।

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

রিও দে জেনেইরো শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৩০
Share:

ব্যাডমিন্টনের দুই কন্যাই এগোলেন। ছবি: পিটিআই এবং এপি।

সাইনা নেহওয়ালের হলটা কী?

Advertisement

স্ম্যাশ ঠিক মতো হচ্ছে না। প্লেসিং-এর ক্ষেত্রেও বারবার সমস্যা হচ্ছে। সার্ভিস ভুল করছেন। তাঁকে বেশ টেনসডও দেখাচ্ছিল।

ব্রাজিলের অচেনা প্রতিদ্বন্দ্বী লোহানি ভিসেন্তে-কে হারাতে লন্ডনে ব্রোঞ্জজয়ীর জিভ বেরিয়ে গেল। ১০-১০, ১২-১২ লড়তে লড়তে শেষ পর্যন্ত ২১-১৭ প্রথম গেমে জয়। পরের গেমে তো পিছিয়ে পড়লেন এক সময়। শেষ পর্যন্ত ২১-১৭ কোনওক্রমে জয়। কেন এমন হল তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে হায়দরাবাদির মন্তব্য, ‘‘প্রথম ম্যাচ। একটু সমস্যা হয়েছে। তার পর আমার প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলিয়ান। সারা স্টেডিয়াম ওর হয়ে গলা ফাটানোয় বাড়তি উদ্যমে খেলছিল মেয়েটা। ঠিক আছে। সামনে আরও কঠিন ম্যাচ।’’ এটা দেশের অন্যতম সেরা মহিলা ক্রীড়াবিদের তিন নম্বর অলিম্পিক্স। বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর বললেন, ‘‘পদকের কথা এখন ভাবছি না। আমরা কঠিন গ্রুপে পড়েছি। প্রথম লক্ষ্য কোয়ার্টার ফাইনাল।’’ আপনি কি নিজের খেলায় সন্তুষ্ট? প্রশ্ন শুনে থতমত খেয়ে যান দেশের সব রাষ্ট্রীয় সম্মান পেয়ে যাওয়া সাইনা। বললেন, ‘‘ঠিক আছে। খুশি নই বলব না। আবার খুশি তা-ও বলব না। জিতেছি। পরের ম্যাচ নিয়ে এখন ভাবব।’’

Advertisement

সাইনা কঠিন জয় পেলেও প্রথম অলিম্পিক্স খেলতে আসা পুসারলা বেঙ্কট সিন্ধু জিতলেন অনায়াসে। কার্যত দাঁড়াতেই দিলেন না হাঙ্গেরির লরা সারোসিকে। ২১-৮, ২১-৯। তাতে অবশ্য দারুণ উচ্ছ্বসিত নন সিন্ধু। বলছিলেন, ‘‘আমার প্রথম অলিম্পিক্স। প্রথম ম্যাচ নিয়ে টেনশন ছিল। প্রতিপক্ষ খুব শক্তিশালী ছিল না।’’ বলছিলেন লম্বা-রোগাটে চেহারায় কোর্টে বাঘিনীর মতো দাপিয়ে বেড়ানো পিভি। এটা সাইনা এবং পিভির গ্রুপের প্রথম ম্যাচ ছিল। আর একটা ম্যাচ, তার পর প্রি-কোয়ার্টারের লড়াই। পিভি বলছিলেন, ‘‘পদক জয়ের কথা ভেবেই এসেছি। অলিম্পিক্স উপভোগ করছি। নাদাল, সেরিনা, জকোভিচদের সঙ্গে দেখা হল। ফেল্পস আর বোল্টের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছে আছে। সারা বিশ্বে এত টুর্নামেন্ট খেলে বেড়াই, কোথাও তো এত তারকা খেলোয়াড় থাকে না।’’

আপনি লম্বা বলেই কি স্ম্যাশের উপর জোর দিচ্ছিলেন? পিভি বললেন, ‘‘কোচ বলেছিলেন, সেটাই করে গিয়েছি।’’ সাইনা নীল জামা পরে এলেও আপনি হলুদ গেঞ্জি পরে এসেছিলেন ব্রাজিলের দর্শকদের সমর্থন পেতে? হেসে ফেলেন পিভি। বলেন, ‘‘তেমন কিছু নয়। মনে হল তাই পরে এলাম।’’

সবচেয়ে বড় কথা হল, পিভির সঙ্গে সারাক্ষণ কোচ গোপীচন্দ লেগে থাকলেন, বারবার উঠে পরামর্শ দিলেন, সাইনার ক্ষেত্রে সেটা এক বারও দেখা গেল না। কার্যত মনে হল লাইন দিয়ে পাশাপাশি কোর্টে ঢোকা ছাড়া প্রাক্তন ব্যক্তিগত কোচের সঙ্গে বাক্যালাপ ছিল না সাইনার। দু’টো গেমের বিরতির সময় চেয়ার ছেড়ে উঠলেন না গোপীচন্দ, সাইনাও তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে বা জল খেয়ে সময় কাটিয়ে দিলেন। বরং উল্টোটা হল পিভির ক্ষেত্রে। জল থেকে তোয়ালে সব এগিয়ে দিলেন গোপীচন্দ।

লন্ডনে সাইনার ব্রোঞ্জ জয়ের পিছনে গোপীর অবদান ছিল প্রচুর। সারাক্ষণ লেগে থাকতেন তিনি। তার পর গোপীর অ্যাকাডেমি ছেড়ে সাইনা চলে যান অন্য কোচের কাছে। বিমলকুমারের কাছে আপাতত কোচিং করেন সাইনা। ফলে গোপী এ বার বাজি ধরেছেন পিভি সিন্ধুকে নিয়েই। সেটা প্রথম ম্যাচেই প্রকাশ্যে। সাইনার কষ্টার্জিত জয়ের দিনে পিভির অনায়াস জয় হয়তো তারই ইঙ্গিত। এ দিন অবশ্য মেয়েদের ডাবলসে জ্বালা গাট্টা আর অশ্বিনী পোনাপ্পা হারলেন জাপানের কাছে। ফল ১৫-২১, ১০-২১।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন