এক উইকেটকিপারের জবাব দিয়ে গেলেন আর এক উইকেটকিপার।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মঞ্চে নায়ক হয়ে উঠলেন আর এক উইকেটকিপার। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার হেনরিক ক্লাসেন (৩০ বলে ৬৯, সাতটা ওভারবাউন্ডারি, তিনটে বাউন্ডারি)। পাল্টা আক্রমণ করার জন্য চার নম্বরে ক্লাসেনকে নামিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এক উইকেটকিপারের জবাব দিয়ে গেলেন আর এক উইকেটকিপার। ক্লাসেন সব চেয়ে বেশি নির্দয় ছিলেন যুজবেন্দ্র চহালের ওপর। ক্লাসেন আউট হওয়ার পরে দায়িত্ব নিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক জে পি ডুমিনি। শেষ পর্যন্ত ১৯ নম্বর ওভারে পর পর দু’টো ছয় মেরে ছ’ উইকেটে ম্যাচ জিতিয়ে দিলেন ডুমিনি। ভারতের চার উইকেটে ১৮৮ রানের জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা ১৮.৪ ওভারে করে ১৮৯-৪। ম্যাচ সেরা ক্লাসেন। সিরিজ এখন ১-১ অবস্থায়। সিরিজের নিষ্পত্তি হবে শনিবার, কেপ টাউনে।
এই ম্যাচে যশপ্রীত বুমরা খেলেননি ফিট না থাকায় তাঁর জায়গায় নামা শার্দূল ঠাকুর খুব খারাপ বল করেননি ঠিকই, কিন্তু বুমরার অভাব মেটাতে পারেননি। তবে ভারত সব চেয়ে বড় ধাক্কা খায় মিডল ওভারে। যে লেগস্পিনার ওয়ান ডে-তে ভারতের বড় অস্ত্র হয়ে উঠেছিল, সেই চহাল কোনও রকম দাগ কাটতে পারেননি এ দিন। চার ওভারে চহাল দিলেন ৬৪ রান। যেখানেই ম্যাচটা বার করে নিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
ভারতীয় ইনিংসেও দাপট ছিল উইকেটকিপারের। অনেক দিন ধরেই ওয়ান ডে-তে পুরনো মেজাজে দেখা যায়নি তাঁকে। সেই ফিনিশার-কেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না দীর্ঘ দিন। যার ফলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল, ধোনিকে কি পরের বছর বিশ্বকাপের নীল নকশায় রাখা উচিত?
রান পেলেন মণীশও। ভারত অবশ্য হেরে গেল। বুধবার। ছবি: এপি
বুধবার রাতে সেঞ্চুরিয়নে সেই সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিল, এতটা হয়তো বলা যাবে না। কিন্তু এটা ভাল করে বোঝা গেল, ধোনি এখনও ফুরিয়ে যাননি। প্রয়োজনের সময় এখনও তাঁর ব্যাট ভরসা দিতে পারে ভারতকে। একটা সময় যখন মনে হচ্ছিল, ভারত হয়তো ১৬৫-১৭০ রানের মধ্যে থেমে যাবে, তখনই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেন ধোনি। করে গেলেন ২৮ বলে অপরাজিত ৫২। মারলেন চারটে চার, তিনটে ছয়। শেষ দু’ওভারে ধোনি নিলেন ২৮ রান। ইয়র্কার বা শর্ট— কোনও বলেই আটকানো যায়নি তাঁকে। শেষ ওভারে ডেন প্যাটারসনকে একস্ট্রা কভারের ওপর দিয়ে মারা ছয়ের মধ্যে দেখা গিয়েছে ধোনির সেই পাশবিক শক্তি। ধোনি এবং মণীশ পাণ্ডের দাপটে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ভারত শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে তুলল ৪ উইকেটে ১৮৮। দু’জনের জুটিতে উঠল ৯৮ রান।
আরও পড়ুন: ধোনি শেষ হয়নি, মত গাওস্করদের
ধোনি যেমন শেষ দিকে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিলেন, তেমন মণীশ পাণ্ডে ভারতের স্কোরবোর্ড সচল রাখার দায়িত্ব নিয়েছিলেন মিডল ওভারে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রাক্তন এই ব্যাটসম্যান (এ বার আইপিএলে খেলবেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে) প্রথম থেকেই সাবলীল ছিলেন। শর্ট বল পেলেই পুল করতে ছাড়েনি। তাঁর ৪৮ বলে অপরাজিত ৭৯ রানে রয়েছে ছ’টা চার, তিনটে ছয়। যার বেশির ভাগই এসেছে পুল শটে। এই ম্যাচে রান পাননি রোহিত শর্মা (০), শিখর ধবন (২৪), কোহালি (১)।