অনিল পাশে থাকায় আশা করি বিদেশেও এই ফর্ম দেখাবে অশ্বিন

ভারতীয়দের শক্তির সামনে ব্ল্যাক ক্যাপদের পুরোপুরি আত্মসমর্পণ। সফরকারী দল কোনও সময়ই বিরাট কোহালি আর ওর ছেলেদের মানানসই হয়ে উঠতে পারেনি। হোয়াইটওয়াশ-ই এই সিরিজের যথার্থ রেজাল্ট।

Advertisement

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৬ ০২:২৯
Share:

ভারতীয়দের শক্তির সামনে ব্ল্যাক ক্যাপদের পুরোপুরি আত্মসমর্পণ। সফরকারী দল কোনও সময়ই বিরাট কোহালি আর ওর ছেলেদের মানানসই হয়ে উঠতে পারেনি। হোয়াইটওয়াশ-ই এই সিরিজের যথার্থ রেজাল্ট। বিদেশিদের অনুকূলে হয়তো একটা বা দু’টো সেশন গিয়েছে। কিন্তু শেষমেশ ভারত ক্রিকেটের প্রতিটা বিভাগেই নিউজিল্যান্ডের উপর কর্তৃত্ব দেখিয়েছে। যার ফলে তিনটে টেস্টই খুব সহজে জিতল আমাদের ছেলেরা।

Advertisement

গত হোম সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকানদের যে ধরনের পিচ সাজিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেই তুলনায় এই সিরিজের পিচগুলো অবশ্যই ভাল ছিল। কোনও ভেনুর উইকেটেই ধুলো ওড়েনি। বরং টিপিক্যাল উপমহাদেশীয় উইকেট ছিল। যে ধরনের পিচে টেস্টের চতুর্থ এবং পঞ্চম দিনে একটুআধটু চিড় ধরে। সেটারও ব্যতিক্রম ছিল ইডেন গার্ডেন্স উইকেট। ভাল টেস্ট ম্যাচের সব কিছু মজুত ছিল এ বার ইডেনের পিচে। এবং ভারতীয় দল তার উপর নিজেদেরকে শীর্ষে তুলে নিয়ে গিয়েছিল বিপক্ষের তুলনায় অনেক ভাল স্কিলের দাপটে।

ইনদওরে তৃতীয় টেস্টে ভারত দুই ইনিংসেই তাদের শ্রেষ্ঠত্ব কায়েম করে ফেলে। বিরাটের সুপার্ব ডাবল সেঞ্চুরি আর রাহানে ও পূজারার জোড়া সেঞ্চুরির সৌজন্যে। তবে সফরকারীদের পাল থেকে যাবতীয় হাওয়া শুষে নিয়েছিল বিরাট-রাহানের অসাধারণ পার্টনারশিপটা। পূজারার এই সিরিজে ভাল ফর্ম যাচ্ছিল। কিন্তু ওর দরকার ছিল একটা ভাল শুরুকে তিন অঙ্কের রানে পরিণত করতে পারাটা। কারণ এই একটা ব্যাপার ও বারবার মিস করছিল। আশা করি ইনদওরে পূজারার দ্বিতীয় ইনিংসটা ভবিষ্যতে ওকে বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগাবে।

Advertisement

আর সবার উপরে ব্ল্যাক ক্যাপস অশ্বিনাহত! ভারতীয় অফস্পিনার দলের বাকি বোলারদের সাহায্য পেয়েছে বটে। কিন্তু রবিচন্দ্রন অশ্বিন নিজেকে নিঃসন্দেহে সব বোলারের চেয়ে আলাদা হিসেবে প্রমাণ করেছে। অশ্বিনের বোলিং লাইনের প্রচুর উন্নতি হয়েছে। বৈচিত্র বেড়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, বোলিংয়ের সময় নানান চেষ্টা করা থেকে নিজেকে বিরত রাখেনি। আমি দারুণ আশাবাদী, নেট আর ড্রেসিংরুমে ওর পাশে অনিল থাকায় অশ্বিন এই বিধ্বংসী ফর্ম ঘরের মাঠে ভারতের ১৩ টেস্টের পরে বিদেশ সফরেও ধরে রাখবে।

মঙ্গলবার দ্বিতীয় ইনিংসে নিউজিল্যান্ড যেন স্রেফ ওদের ভবিতব্যের কাছে আত্মসমর্পণ করল। অশ্বিনের বৈচিত্রের বিরুদ্ধে ওদের ব্যাটসম্যানরা কত তাড়তাড়ি হেনস্থার হাত থেকে বাঁচে, যেন সেটাই চাইছিল। বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট দলের স্বীকৃতি-পুরস্কার ভারতের হাতে চলে আসার ইঙ্গিত ইনদওরে দিনভরই দেখা যাচ্ছিল। কোনও সন্দেহ নেই এই পুরস্কার এখন অনেক দিন ভারতের হাতে থাকবে।

ভারত প্রথম ইনিংস ৫৫৭-৫ ডিঃ

নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস ২৯৯

ভারত দ্বিতীয় ইনিংস (আগের দিন ১৮-০) বিজয় রান আউট ১৯, গম্ভীর ক গাপ্টিল বো পটেল ৫০, পূজারা নঃআঃ ১০১, কোহালি এলবিডব্লিউ পটেল ১৭, রাহানে নঃআঃ ২৩, অতিরিক্ত ৬, মোট ২১৬-৩ ডিঃ। পতন ৩৪, ১১০, ১৫৮। বোলিং: বোল্ট ৭-০-৩৫-০, পটেল ১৪-০-৫৬-২, স্যান্টার ১৭-১-৭১-০, হেনরি ৭-১-২২-০, নিশাম ৪-০-২৭-০।

নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস ল্যাথাম এলবিডব্লিউ উমেশ ৬, গাপ্টিল এলবিডব্লিউ জাডেজা ২৯, উইলিয়ামসন এলবিডব্লিউ অশ্বিন ২৭, টেলর বো অশ্বিন ৩২, রঞ্চি বো অশ্বিন ১৫, নিশাম ক কোহালি বো জা়ডেজা ০, ওয়াটলিং নঃআঃ ২৩, স্যান্টার বো অশ্বিন ১৪, পটেল বো অশ্বিন ০, হেনরি ক শামি বো অশ্বিন ০, বোল্ট ক ও বো অশ্বিন ৪, অতিরিক্ত ৩, মোট ১৫৩। পতন: ৭, ৪২, ৮০, ১০২, ১০৩, ১১২, ১৩৬, ১৩৮, ১৩৮। বোলিং: শামি ৭-০-৩৪-০, উমেশ ৮-৪-১৩-১, অশ্বিন ১৩.৫-২-৫৯-৭, জা়ডেজা ১৬-৩-৪৫-২।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন