আগের বার্তোলি (বাঁদিকে)। আজকের বার্তোলি (ডানদিকে)।
চিৎকার করতে পারেন না। কোর্টের সেউ উদ্দামতা হারিয়ে গিয়েছে। দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হয়। তবুও চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে, ‘‘আমি আমার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে চাই। আবার ব্যাট হাতে লড়াই করতে চাই কোর্টে।’’ কিন্তু কেউ শুনতে পায় না। ফিরিয়ে দেওয়া হয় উইম্বলডনের আসর থেকে। এ কেমন রোগ? যার হদিশ এতদিন ডাক্তারদের কাছেও ছিল না।
হঠাৎ দেখলে ভুল হবে। এই কি সেই মারিও বার্তোলি? কঙ্কালসার চেহারা। ২০১৩ সালের উইম্বলডন জয়ী বার্তোলির সঙ্গে ২০১৬র উইম্বলডন থেকে সরে দাঁড়ানো বার্তোলির যে কোনও মিল নেই। হঠাৎই মারিও বার্তোলির শরীরে ঘর করেছে এক ভাইরাস। যার ফলে ক্রমশ রোগা হয়ে যাচ্ছেন তিনি। দ্রুত কমছে ওজন। ডাক্তাররাও তাঁর রোগ নিয়ে রীতিমতো শঙ্কায়। খেলা একদমই বন্ধ। ৩১ বছরের বার্তোলি মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছেন। বার্তোলি নিজেই জানিয়েছেন, তাঁর শরীরে এমন একটি ভাইরাস আক্রমণ করেছে যার নাম ডাক্তাররাও জানেন না। অর্গানিক স্যালাড আর খোসা ছাড়া শসাই এই মুহূর্তে তাঁর খাদ্য তালিকায় রয়েছে। অন্য কিছউ খাওয়া নিষিদ্ধ। এখানেই শেষ নয়, মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে হলে গ্লাভস পরতে হচ্ছে। জল মানেই মিনারেল ওয়াটার ছাড়া অন্য কিছু চলবে না। সেটা পান করা হোক বা অন্য কোনও ব্যবহার হোক। বার্তোলি বলেন, ‘‘আমার জীবন সংশয় দেখা দিয়েছে। আমি শঙ্কিত যেকোনও দিন আমার হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাবে। এটা আমার জীবন নয়। আমি শুধু বেঁচে আছি।’’
বার্তোলি সংশয় প্রকাশ করেছেন, যখন তিনি গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়া, নিউ ইয়র্ক ও ভারতে ঘুরছিলেন তখনই এই ভাইরাস তাঁকে আক্রমণ করে। রাতারাতি ২০ কিলো ওজন কমে গিয়েছে তাঁর। বলেন, ‘‘আমার কষ্ট হচ্ছে। আমার শরীর কিছুই নিতে পারছেন না। আমার বেঁচে থাকাটা নাইটমেয়ার হয়ে গিয়েছে। আমি চাই না এরকম সমস্যা কারও হোক। আমি গ্লাভস ছাড়া মোবাইল ধরতে পারি না। পাঁচ মিনিটের বেশি টাইপ করলেই হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়।’’ খেতে পারেন না কোনও প্রোটিন। অল ইংল্যান্ড ক্লাবে উইম্বলডনে আমন্ত্রণমূলক একটি ডাবলস ম্যাচ খেলার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু টুর্নামেন্টের ডাক্তাররাই তাঁকে সেই খেলা থেকে সরে দাঁড়াতে বলেন। ‘‘আমি খুব খেলতে চেয়েছিলাম। আমি ভাল থাকি যখন আমি কোর্টে থাকি।’’ কিন্তু খেলা হল না বার্তোলির। আর হয়তো ফিরতে পারবেন না কোনও দিনও। যে রোগের নামই জানেন না ডাক্তাররা, সেই রোগ সারাবেন কী করে?
আরও খবর
চৌত্রিশেও স্বপ্নের কামব্যাক ফেডেরারের