কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে গোলের পর জিকসন।
ভারতীয় ফুটবলের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়ে থাকল একটা সময়। একটা স্টেডিয়াম। একটা মুহূর্ত। আর একটা নাম। জিকসন সিংহ।
ভারতীয় দলের সব থেকে দীর্ঘদেহী ফুটবলার। যাকে দূর থেকেই চেনা যায় এক বারে। ভারত কোচ মাতোস আগেই জানিয়েছিলেন, কলম্বিয়ার প্লেয়ারদের চেহারা দেখেই তিনি দল নির্বাচন করবেন। আর সেই দলে বিশেষ করে বড় চেহারার জন্যই জায়গা করে নিয়েছিল মণিপুরের এই ছেলে। কে জানত তার মাথাতেই লেখা ছিল ভারতের প্রথম বিশ্বকাপ গোল! বিশ্বকাপে প্রথম গোল করে উচ্ছ্বসিত জিকসন বলল, ‘‘গোল করার পর মনে হচ্ছিল ভাললাগার শেষ সীমায় পৌঁছে গিয়েছি। মনে হচ্ছিস ক্লাউড নাইনে পৌঁছে গিয়েছি। কিন্তু, এই গোলটা তো গুরুত্বহীন হয়ে গেল! কোনও গোলেরই গুরুত্ব থাকে না, যদি কাজে না লাগে।’’
আরও পড়ুন
• বিশ্বকাপে প্রথম গোল ভারতের, অনবদ্য খেলেও মানতে হল হার
অদ্ভুত একটা ভাল লাগার ঘোর আর তার সঙ্গে হারের যন্ত্রণা! খারাপ তো খেলেনি দল। জিকসন বলছিল, ‘‘আমরা আমাদের সেরাটা দেওয়ারই চেষ্টা করেছি। কিন্তু ভাগ্য সঙ্গে ছিল না।’’ রিয়েল মাদ্রিদের জার্সির সঙ্গে সঙ্গে বেঙ্গালুরু এফসির হয়েও খেলার স্বপ্ন দেখা জিকসন এই ভারতীয় দলে এসেছিল মাতোস আসার পরেই। আর সেই জিকসনই এখনও পর্যন্ত সেরা সম্মান দিয়ে গেল কোচকে। মিনার্ভা পঞ্জাব ও চণ্ডীগড় ফুটবল অ্যাকাডেমি থেকে উঠে আসা এই মিডিও ম্যাচ শেষে তাঁর হতাশা চেপে রাখতে পারেনি। তার কথায়, ‘‘দেশের জার্সিতে ফিফা বিশ্বকাপে গোল করার অনুভূতিটাই অসাধারণ। কিন্তু আরও ভাল হয়ে যেত যদি আমরা ম্যাচটা জিততে পারতাম। আমার জন্য এই গোলেরও কোনও মূল্য নেই যত ক্ষণ না জয় আসছে।’’
আরও পড়ুন
• গোল করার উচ্ছ্বাসেই দ্বিতীয় গোল হজম: মাতোস
প্রথম দিকে একটু চাপে ছিল সেটা তার আগেই জানিয়ে গিয়েছে অধিনায়ক এবং জিকসনের তুতো ভাই অমরজিৎ। কারণ, বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে দলে জায়গা পায়নি দীর্ঘদেহী এই মণিপুরী। এটাই ছিল তার প্রথম ম্যাচ। কিন্তু, ম্যাচ শেষে বেশ আত্মবিশ্বাসী শোনাল ভারতের একমাত্র গোলদাতার গলা। শুধু বলে গেল, ‘‘ম্যাচটার ফল হওয়া উচিত ছিল। আমরা চেষ্টা করেছি। কিন্তু হয়নি। এর মধ্যে দিয়েই আমরা প্রতি দিন বুঝতে পারছি আন্তর্জাতিক ফুটবল আসলে কী।’’