বোলাররা ভয় পায় কিন্তু স্বীকার করে না, হুঙ্কার গেলের

১৯৯৯ সালে থেকে তিনি বিশ্বকাপ খেলছেন। ‘‘নতুনরা হালফিলে দারুণ চ্যালেঞ্জের সামনে ফেলে দিচ্ছে। ব্যাপারটা এক সময় যতটা সহজ ছিল, এখন আর ততটা নেই,’’ বলছেন গেল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৯ ০৪:২৪
Share:

প্রত্যয়ী: সেরা ফর্মে আছেন, বলে দিচ্ছেন ‘ইউনিভার্স বস’। ফাইল চিত্র

ক্রিস গেল মনে করেন, সব বোলারই এখনও তাঁকে ভয় পায়। এবং মজা করে জুড়ছেন, ‘অবশ্য ক্যামেরার সামনে ওরা সেটা স্বীকার করে না।’’ সঙ্গে এটাও মানছেন, কম বয়সিদের বিরুদ্ধে এখন আর আগের মতো অনায়াসে যে কোনও ম্যাচ তিনি খেলে দিতে পারেন না।

Advertisement

ইংল্যান্ডে ক্যারিবিয়ান মহাতারকা এ বার পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলবেন। ১৯৯৯ সালে থেকে তিনি বিশ্বকাপ খেলছেন। ‘‘নতুনরা হালফিলে দারুণ চ্যালেঞ্জের সামনে ফেলে দিচ্ছে। ব্যাপারটা এক সময় যতটা সহজ ছিল, এখন আর ততটা নেই,’’ বলছেন গেল। কেন এমনটা মনে করছেন সে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন, ‘‘আজকাল অত তাড়াতাড়ি যা ইচ্ছে তাই করতে পারি না। আগে যা পারতাম।’’

এত কিছু বলেও প্রায় হুঙ্কার দিয়ে তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘তবু আজও বোলাররা সবাই আমাকে ভয় পায়। ওরা জানে ‘ইউনিভার্স বস’ কী করতে পারে। জানি, এটা মাথায় রেখেই আমার বিরুদ্ধে সবাই খেলে। নিশ্চয়ই আমাকে দেখে ভাবে, আমিই ভয়ঙ্করতম ব্যাটসম্যান। ক্রিকেট ইতিহাসে কেউ কখনও এত ভয়ঙ্কর ছিল না। অবশ্য ক্যামেরার সামনে এটা স্বীকার করে না। আপনি ওদের কাছে যান না। ওরা কিন্তু বলে দেবে, আমাকে আদৌ আর ভয় পায় না। কিন্তু ওদের মনে কী আছে সেটা আমি ভাল করেই জানি।’’

Advertisement

বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বুধবার প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যদিও সেই ম্যাচে তিনি খেলেননি। ম্যাচের আগে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন ৩৯ বছরের গেল। সেখানে তিনি আরও বলেছেন, ‘‘বিশ্বাস করুন এখনও ক্রিকেটটা খেলতে ভালবাসি। বলতে পারেন উপভোগ করি। তা ছাড়া চিরকালই ফাস্টবোলারদের বিরুদ্ধে খেলে আলাদা আনন্দ পেয়েছি। এই আবেগটা কখনও কখনও আমার সেরা খেলাটা বার করে আনে। ব্যাট করার সময় যে কোনও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার জন্য তৈরি থাকি।’’

বছরের শুরুতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজে দুরন্ত খেলে গেল অবসর প্রায় নিয়ে ফেলেছিলেন। পরে মত পাল্টান। সেই সিরিজে গেল ৪২৪ রান করেন। গড় ১০৬। মাত্র চার ম্যাচে শুধু ছক্কাই মেরেছিলেন ৩৯টি। সেই সঙ্গে ওয়ান ডে-তে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানও করেন। সেই ইনিংসের সৌজন্যে সবচেয়ে বড় রানের ইনিংস গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

অথচ একটা সময় গেল প্রায় ৩০ মাস ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ওয়ান ডে খেলেননি গেল। সেটা ২০১৫ সালে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে যাওয়ার পরে। যখন মনে হয়েছিল, গেল আর কখনও ওয়ান ডে খেলবেন না, ঠিক তখনই তাঁকে দলে ফেরানো হয়, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে। ঘটনা হচ্ছে, দলে ফিরে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনের প্রতিযোগিতা থেকেই তিনি দুরন্ত ফর্মে রয়েছেন। প্রত্যাবর্তনের পরে ১৯ ইনিংসে রান ৯৩০। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে তিনিই সবচেয়ে অভিজ্ঞ এখন। ২৮৯টি ওয়ান ডে-তে তাঁর মোট রান ১০,১৫১।

এখনও এই ছন্দ ধরে রাখছেন কী করে? এমন প্রশ্নে গেলের জবাব, ‘‘একটাই কারণ। খেলাটা ভালবাসি। কখনও কখনও খেলোয়াড়েরা বুঝতে পারে না কোন সময় অবসর নেবে। হয়তো আপনি ভাবছেন যে, এই সময় জীবনের সেরা ফর্মে আছেন। কিন্তু সেটাও সাময়িক। একটা সময় চলে যেতেই হবে। কিন্তু আসল ব্যাপার হচ্ছে খেলাটা উপভোগ করা। যেটা আমার ক্ষেত্রে সত্যি। এখনও ক্রিকেট উপভোগ করি। প্রচুর মজা পাই। বিশেষ করে দারুণ একটা দলের সঙ্গে যখন খেলি।’’ গেল আরও যোগ করেছেন, ‘‘অনেক কিছুই আমার খেলায় আর বেঁচে থাকার ছাপ ফেলে। দলের ছেলেরাই একটা উদ্দীপনার সৃষ্টি করে। ভক্তেরা সব সময় চায়, শুধুই ছক্কা মারি। বলতে পারেন এ সবই আমার ভিতরে একটা আলাদা তাগিদ বা খিদে তৈরি করে। ওই মাঠে নেমে নিজেকে প্রমাণ করতে হবে গোছের ভাবনা ভাবতে হয় না।’’

সদ্য শেষ হওয়া আইপিএলেও দারুণ ফর্মে ছিলেন গেল। কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের হয়ে ১৩ ম্যাচে করেছেন ৪৯০। আত্মবিশ্বাসী ক্যারিবিয়ান তারকা বলেছেন, ‘‘এখনও আমার রিফ্লেক্স ভাল। বল ঠিকঠাক ব্যাটে লাগাই। এ বারের আইপিএল-ও খুব খারাপ খেলিনি। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আমাদের হোম সিরিজে কী হয়েছে সে তো সবাই জানে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, ক্রিকেটটা এখনও খেলছি। মাথায় রেখেছি, নিয়মিত খেলে যেতেই হবে। এখন ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপে খেলতে এসেছি। এটা অনেক দিনের টুর্নামেন্ট। আমাকে দেখতে হবে, নিজের মানসিকতাটা যেন ঠিক থাকে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন