ছবি রয়টার্স।
ওয়ান ডে ক্রিকেটে ২৮৯ ইনিংসে তাঁর সংগ্রহ ১০১৫১ রান। ২৫টি সেঞ্চুরির মালিক তিনি। গড় ৩৮.১৬। ফেব্রুয়ারি মাসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চারটি ওয়ান ডে-তে ৪২৪ রান করেছেন। যার মধ্যে ছিল ৩৯টি ছয়। গড় ১০৬। সেই ক্রিস গেলের স্বপ্ন এ বার বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চ্যাম্পিয়ন করা।
চল্লিশ ছুঁইছুঁই গেল নিজেকে পরিচয় দেন ‘ইউনিভার্স বস’ নামে। প্রচণ্ড জোরে বোলারদের মাথার উপর দিয়ে বল উড়িয়ে দেওয়া দারুণ উপভোগ করেন তিনি। ওভালে ২০০৯ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার পেসার ব্রেট লি এ ভাবেই শিকার হয়েছিলেন বিধ্বংসী গেলের। যে ভাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তারকা ছয় মেরেছিলেন, তা আগে কখনও দেখেননি ওভালের দর্শকেরা। গেল সম্পর্কে বলা হয়, বোলারদের ন্যূনতম জায়গাও দিতে চান না। খোলাখুলিই বলেন, বোলারেরা স্বীকার না করলেও তাঁকে ভয় পান। তবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ‘ইউনিভার্স বস’ বলেছেন, ‘‘তরুণেরা এখন দারুণ ভাবে উঠে আসছে। ফলে আগের মতো ব্যাপারটা সহজ নয়। তা ছাড়া আগে আমার গতিও বেশি ছিল।’’
৩১ মে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে সম্ভবত এটাই শেষ বিশ্বকাপ হতে চলেছে গেলের। তা হলে বিশ্বকাপ শুরুর আগে কি উদ্বেগ বাড়ছে ‘ইউনিভার্স বস’-এর? গেলের হুঙ্কার, ‘‘দুশ্চিন্তায় তো রয়েছে বোলারেরা। ইউনিভার্স বসের কী ক্ষমতা সেটা ওরা খুব ভাল জানে। আমি নিশ্চিত ওদের মনের মধ্যে থাকবে— বিশ্ব ক্রিকেটের সব চেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাটসম্যানের বিরুদ্ধে খেলতে হচ্ছে।’’ এখানেই শেষ নয়। তিনি যোগ করেছেন, ‘‘তবে ক্যামেরার সামনে কেউ ওদের প্রশ্ন করলে বলবে, আমাকে ভয় পায় না। কিন্তু ক্যামেরার পিছনে বলবে, এই সেই ব্যাটসম্যান।’’
জোরে বোলারদের বিরুদ্ধে লড়াই যে সব চেয়ে বেশি উপভোগ করেন, তাও জানিয়েছেন গেল। অতীতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ডের সঙ্গে সংঘাতের জেরে বেশ কিছু ম্যাচ না খেলা গেল বলেছেন, ‘‘আমি সব সময়ই জোরে বোলারদের বিরুদ্ধে খেলতে আনন্দ পাই। কারণ, অনেক সময় এগুলো আমাকে তাতিয়ে দেয়। আমি এই চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসি। দর্শকেরা সব সময় আমার ছয় দেখতে চান।’’
ইংল্যান্ডের মাটিতেই প্রথম দুটো বিশ্বকাপে (১৯৭৫ ও ১৯৭৯) চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জয়ের অন্যতম কারিগর ছিলেন বাঁ হাতি কিংবদন্তি ক্লাইভ লয়েড। বোলারদের আতঙ্ক ছিলেন তিনি। গেলও বাঁ হাতি। জামাইকান তারকা কি পারবেন পূর্বসূরির পথে হেঁটে ৪০ বছর পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করতে? আত্মবিশ্বাসী গেলের জবাব, ‘‘প্রমাণ করার কিছু নেই। বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটাই একমাত্র লক্ষ্য।’’