যে অস্থায়ী গ্যালারি নিয়ে চিন্তায় মোহনবাগান। যে গ্যালারি দেখতে যাবেন আইএফএ কর্তারা।
মোহনবাগানের যুক্তি খারিজ করে দিয়ে তাদের কোর্টেই ডার্বির বল ঠেলে দিয়েছে আইএফএ। ৭ সেপ্টেম্বর মোহন-ইস্ট ম্যাচ করতে অনড় পেরেন্ট বডি।
আইএফএ-র অনড় মনোভাব এবং যুক্তি দেখে বাগান আবার নতুন নতুন প্রশ্ন তুলে ডার্বি পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় নেমেছে।
ভেস্তে যাওয়া ম্যাচের রিপ্লের তারিখ নিয়ে তাদের দাবি খারিজ হয়ে যাওয়ার পর শনিবার বিকেল থেকে ফের অন্য নাটক শুরু বাগান কর্তাদের। কল্যাণী স্টেডিয়ামে তাদের সমর্থকদের নিরাপত্তা নেই জানিয়ে এবং বদলে যুবভারতীতে ডার্বি করার জন্য আইএফএকে এ দিন সন্ধ্যেয় চিঠি দিল বাগান। যা করাটা অসম্ভব জেনেও। কারণ, এ দেশে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের জন্য এখন জোরকদমে কাজ চলছে যুবভারতীর। খুঁড়ে ফেলা হয়েছে মাঠের পাশের অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাক। ভেঙেচুরে তৈরি হচ্ছে গ্যালারি থেকে প্রেসবক্স। বসছে নতুন লিফট। অক্টোবরে ফিফার প্রতিনিধিরা আসবেন মাঠ দেখতে। তার আগেই কাজ শেষ করতে চাইছে রাজ্য সরকার। তারা যুব বিশ্বকাপের আগে কাউকেই মাঠ দিতে রাজি নয়। সে জন্য আইএসএলে এটিকের সব হোম ম্যাচ পাঠানো হয়েছে রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে। প্রশ্ন উঠেছে, সব কিছু জেনেও তা হলে কেন যুবভারতীতে ডার্বি আয়োজনের জন্য আইএফএকে চাপ দিচ্ছে বাগান?
কল্যাণী মাঠের এখন এই অবস্থা। শনিবার।
বুধবারের কলকাতা ডার্বি কি কোনও মতেই খেলতে চাইছে না মোহনবাগান? না, খেলার আগে নানা নাটক করে পাল্টা চাপের খেলায় নেমেছে? যাতে সে দিনের ম্যাচে রেফারির উপরও আগাম চাপ রাখা যায়! নানা দাবি জানিয়ে চিঠি পাঠালেও ডার্বি খেলা নিয়ে এ দিন অবশ্য ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বাগান সচিব অঞ্জন মিত্র। ‘‘ম্যাচ হবেই। তবে দেখতে হবে কল্যাণী স্টেডিয়ামের সব কিছু ঠিক আছে কি না?’’ কিন্তু আপনারা তো এত দিন কল্যাণীতে ডার্বি খেলার ব্যাপারে কোনও আপত্তি তোলেননি? হঠাৎ এখন আপত্তি কীসের? প্রশ্ন উঠলে বাগান সচিব বলেন, ‘‘পিডব্লিউডি যদি ওই মাঠের অস্থায়ী গ্যালারিকে ফিট সার্টিফিকেট দেয়, তা হলে আমরা খেলব।’’ কিন্তু ম্যাচ পিছিয়ে দেওয়ার কথাও তো বলেছেন নতুন চিঠিতে? বাগান সচিবের উত্তর, ‘‘দেখুন না কী হয়।’’
বাগান যে এ রকম একটা ‘সমস্যা’র কথা তুলতে পারে সেটা মনে হয় জানতেন আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি এ দিন লিগ সাব কমিটির সভার পর বলেন, ‘‘কল্যাণীর গ্যালারি-সহ পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে দু’একদিনের মধ্যেই যাব। কোনও সমস্যা হবে না।’’
লিগ সাব কমিটির সভায় বাগানের দাবি খারিজ হয়ে যায়। গত বছরে ঠিক একই অবস্থায় ৩১ অগস্টের ভেস্তে যাওয়া এরিয়ান ম্যাচ ১৪ সেপ্টেম্বর খেলেছিল বাগান। তার আগে খেলেছিল কলকাতা লিগের পুলিশের সঙ্গে ম্যাচ এবং ডার্বি-ও। সেই পরিস্থিতি সামনে এনে আইএফএ তাই বাগানকে জানিয়ে দিয়েছে, তারা সূচি নিয়ে কোনও নিয়ম ভাঙেনি। যে চিঠি হাতে পাওয়ার আগেই বাগান সচিবের চিঠি অবশ্য চলে আসে আইএফএ-তে। তাতে লেখা, ‘কল্যাণীর মাঠ ডার্বি খেলার পক্ষে উপযুক্ত নয়। এ রকম বড় ম্যাচ হতে পারে শুধু যুবভারতীতে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলুন। প্রয়োজনে ডার্বি পিছিয়ে দিন। সমর্থকদের নিরাপত্তা দিন।’
এই চিঠি পেয়েও অবশ্য কড়া প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি আইএফএ সচিব। বললেন, ‘‘ডার্বি বুধবারই হবে। সব দিক খতিয়ে দেখেই আমরা কল্যাণীতে ম্যাচ দিয়েছি। সব কাগজপত্র হাতে নিয়ে ম্যাচটা করব। বাগানকে আশ্বস্ত করে চিঠি দিচ্ছি!’’ যা থেকে পরিষ্কার, কোনও অবস্থাতেই ডার্বি নিয়ে বাগানের সঙ্গে যুদ্ধে পিছু হটতে নারাজ আইএফএ।
ছবি: ইন্দ্রজিৎ মুখোপাধ্যায় ।