হনুমা বিহারী

‘ওয়াল’-এর জন্মদিনে অস্ট্রেলিয়ায় ডিফেন্সের বীরগাথা বিহারী, অশ্বিনের

প্রায় তিন ঘণ্টার কাছাকাছি ব্যাট করে ম্যাচ বাঁচিয়ে দিলেন হনুমা বিহারী এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২১ ১৪:০২
Share:

দুরন্ত ইনিংস খেলার পর নায়ক বিহারীকে অভিবাদন নেতা রাহানের। ছবি টুইটার

আজ, সোমবার রাহুল দ্রাবিড়ের জন্মদিন। সেদিনই ভারতীয় ক্রিকেটের ‘দ্য ওয়াল’-এর জন্মদিনে এমন পারফরম্যান্স উপহার দিল ভারতীয় দল, যা সাম্প্রতিক অতীতে শেষ কবে দেখা গিয়েছে মনে করতে পারছেন না অনেকেই। প্রায় তিন ঘণ্টার কাছাকাছি ব্যাট করে ম্যাচ বাঁচিয়ে দিলেন হনুমা বিহারী এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিন

Advertisement

যশ হ্যাজলউডের বলে বোল্ড হয়ে চেতেশ্বর পুজারা যখন প্যাভিলিয়নের দিকে হাঁটা দিয়েছেন, তখনও দিনের খেলা শেষ হতে বাকি ৪৪ ওভার। স্কোরবোর্ডে দেখাচ্ছিল, ২৭২ রানে ৫ উইকেট পড়ে গিয়েছে ভারতের। ক্রিজে তখন চোট পাওয়া বিহারী। পেনকিলার ই়ঞ্জেকশন নিয়ে খেলতে নামার অপেক্ষায় থাকা রবীন্দ্র জাডেজা তখন ড্রেসিংরুমে নবদীপ সাইনির পাশে বসে। টিভির এপারে থাকা আপামর ভারতবাসীকে অবাক করে নামতে দেখা গেল অশ্বিনকে।

তারপরের তিন ঘণ্টায় যা দেখা গেল, সেটা যে সম্ভব হবে অতি বড় ক্রিকেটপ্রেমীও কল্পনা করতে পারেননি। শরীরের সর্বাঙ্গে আঘাত পেয়েও দাপটে ব্যাটিং করে গেলেন ‘বোলার’ অশ্বিন। চলতি সিরিজে অফ ফর্মে থাকা বিহারী সম্ভবত জীবনের সেরা ইনিংস খেললেন এদিন। নেথান লায়নকে গোটা দিনে যে ভাবে সামলালেন, তা গর্বিত করবে প্রত্যেককেই। চাপের মুখে এই দুই ব্যাটসম্যানের দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মনোভাব ভারতের লজ্জা বাঁচিয়ে দিল। পেনকিলার ইঞ্জেকশন খেয়ে ব্যাট করতে নামতে হল না জাডেজাকেও।

Advertisement

আরও খবর: ভারতের দাবি মানল অস্ট্রেলিয়া, বেরল সমাধানসূত্র, ব্রিসবেনেই চতুর্থ টেস্ট

আরও খবর: ১৬১ বলে ২৩! সেঞ্চুরির চেয়েও দামি হনুমার অপরাজিত ইনিংস

অনেকেরই এদিনের ম্যাচ দেখে মনে পড়ে যাচ্ছে ২০০৭-এ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে লর্ডসের সেই ম্যাচ। পাহাড়প্রমাণ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েও সেদিন ইংরেজ বোলারদের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়াই করেছিলেন কোনও এক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। উল্টোদিকে একের পর এক উইকেট পড়তে থাকলেও তিনি ছিলেন অবিচল। এক উইকেটে ম্যাচ বাঁচায় ভারত।

দিনের শুরুটা খুবই খারাপ হয়েছিল ভারতের। চতুর্থ বলেই ফিরে যান অজিঙ্ক রাহানে। শর্ট লেগে দাঁড়ানো ম্যাথু ওয়েডের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। সকাল সকাল টিভি খুলে বসে পড়া ভারতীয় সমর্থকরা তখনই অশনি সংকেত দেখতে শুরু করেছিলেন।

কিন্তু চোট পাওয়া ঋষভ পন্থ যেন ‘দেবদূত’ হয়ে দেখা দিলেন। কেন ব্যাট হাতে তাঁকে টিম ম্যানেজমেন্ট ঋদ্ধিমান সাহার থেকে বেশি নির্ভরযোগ্য মনে করে, সেটা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন। শুরু থেকেই চালিয়ে খেলছিলেন। চেপে বসেছিলেন অস্ট্রেলীয় বোলারদের উপর। মূলত তাঁর জন্যেই মিচেল স্টার্ক, হ্যাজেলউড, কামিন্সরা চাপে পড়ে গিয়েছিলেন। ভারতও আচমকাই জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দেয়।

কিন্তু চালিয়ে খেলতে গিয়েই আউট হতে হল পন্থকে। যখন মনে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তাঁর দ্বিতীয় শতরান নিশ্চিত, তখনই লায়নের বলে কামিন্সের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান।

লম্বা পার্টনারশিপ ভেঙে যাওয়ায় চাপে পড়েন পূজারাও। কিছুক্ষণ পর তিনিও ফিরে যান। বিহারীর সঙ্গে যোগ দেন অশ্বিন। পরের তিন ঘণ্টায় যা হল, তা ইতিমধ্যেই ইতিহাসের পাতায় উঠে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন