স্পিন বনাম পেসের লড়াইয়ে শেষ হাসির দাবিদার কোন দল হয় এখন সেটাই দেখার।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটি থেকে প্রথম ওয়ান ডে সিরিজ জিতে ফিরতে পারবে কি না ভারত, সেটা সম্ভবত নির্ভর করবে স্পিনারদের উপরেই।
আজ, মঙ্গলবার পোর্ট এলিজাবেথে সিরিজের পঞ্চম ম্যাচের আগে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা— দুই শিবিরেই স্পিন মন্ত্রের জপ চলছে। সোমবার ভারতীয় নেটে দেখা গেল বিশেষজ্ঞ স্পিনারদের সঙ্গে লেগস্পিন করে চলেছেন আরও একজন বোলার। তিনি মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ম্যাচে ধোনির অবশ্য লেগস্পিন করানোর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে ধোনির সঙ্গে সঙ্গে আরও একজনকেও অনেকটা সময়ই নেটে স্পিন করাতে দেখা গেল। তিনি অক্ষর পটেল। যার ফলে একটা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তা হলে কি কোনও এক জন রিস্টস্পিনারের পরিবর্তে বাঁ-হাতি স্পিনারকে খেলতে দেখা যেতে পারে? যে প্রশ্নের জবাব অবশ্য কিছু পাওয়া যায়নি।
জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা পাল্টা আক্রমণ করেন ভারতীয় স্পিনারদের। যা দেখার পরে বলাবলি শুরু হয়ে গিয়েছে, তা হলে কি ভারতীয় রিস্টস্পিনারদের বল বুঝতে পেরে গিয়েছেন এ বি ডিভিলিয়ার্স, ডেভিড মিলার, হেনরিক ক্লাসেন-রা? সে দিনের ম্যাচে সাত নম্বরে নেমে যিনি পাঁচ বলে অপরাজিত ২৩ রান করেছিলেন, সেই অ্যান্ডিল ফেলুকওয়েও জোর গলায় বলছেন, তাঁরা বুঝে গিয়েছেন ভারতীয় স্পিনাররা কী করতে চাইছেন।
আরও পড়ুন: ‘একটা ম্যাচ হারে চিন্তার কিছু নেই’
ম্যাচের আগের দিন সাংবাদিক বৈঠকে এসে দক্ষিণ আফ্রিকার এই অলরাউন্ডার বলে যান, ‘‘স্পিনের বিরুদ্ধে খেলার জন্য আমরা নেটে বিশেষ ভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। আমরা এখন বুঝতে পারছি, ভারতীয় স্পিনাররা কী করতে চাইছে। আগের ম্যাচে আমাদের গেমপ্ল্যানই ছিল, ক্রিজে যাও, বল দেখো আর সোজা খেল। আমরা সেই মতো খেলেছি।’’
পোর্ট এলিজাবেথের পিচ অবশ্য জোহানেসবার্গের চেয়ে অন্য রকমই লাগছে। উইকেটে কিছুটা ধূসর ভাব আছে। স্পিনাররা সাহায্য পেলেও পেতে পারে। সেন্ট জর্জেস পার্কের এই মাঠে ভারত এখনও কোনও ওয়ান ডে ম্যাচ জিততে পারেনি। তার চেয়েও বড় কথা, ওয়ান ডে-তে দু’শো রানের ওপরেও তুলতে পারেনি কোনও ভারতীয় দল। তবে এখানে শেষ পাঁচ ম্যাচের গড় রান কিন্তু তিনশোর ওপরই ছিল।
পিচের চরিত্র নিয়ে ফেলুকওয়েও বলেছেন, ‘‘আমরা জানি এখানকার পিচ কেমন হতে চলেছে। এটা আমাদের ঘরের মাঠ। আমরা সেই মতো পরিকল্পনা করেই এগোব।’’ দক্ষিণ আফ্রিকার এই অলরাউন্ডারের কথায় স্পষ্ট, আগের ম্যাচের জয় তাঁদের আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। ‘‘ওয়ান্ডারার্সের ম্যাচের পরে আমরা ছন্দ ফিরে পেয়েছি। সেই ছন্দটা ধরে রাখতে চাই,’’ বলেছেন ফেলুকওয়েও।
ভারতীয় দল অবশ্য স্পিনারদের ওপরই ভরসা রাখতে চায়। একই সঙ্গে এই ম্যাচে বিশেষ মাইলস্টোন অপেক্ষা করে থাকতে পারে ধোনির জন্যও। ওয়ান ডে-তে দশ হাজার রান থেকে ৪৬ রান দূরে রয়েছেন ধোনি। এই সিরিজেই প্রথম ভারতীয় উইকেটকিপার হিসেবে ওয়ান ডে-তে চারশো শিকারও হয়ে গিয়েছে তাঁর। ধোনিকে নিয়ে ভারতের ফিল্ডিং কোচ আর. শ্রীধর বলেছেন, ‘‘ধোনির নিজস্ব একটা স্টাইল আছে কিপিংয়ের। আমার মনে হয় এই স্টাইলটা নিয়ে গবেষণা করা যেতে পারে। আমি তো বলব, এই স্টাইলটার নাম দেওয়া যেতে পারে, ‘দ্য মাহি ওয়ে।’
দক্ষিণ আফ্রিকা অবশ্য ধোনি নয়, নিজেদের নিয়েই ভাবতে ব্যস্ত। ফেলুকওয়েও যেমন বলে দিচ্ছেন, ‘‘ওরা কী করতে পারে, তা নিয়ে আমরা ভাবছি না। আমাদের নিজেদের গেমপ্ল্যান অনুযায়ী খেলতে হবে। এটা একটা নতুন ম্যাচ। আমাদেরও নতুন গেমপ্ল্যান থাকবে।’’ কী হতে যাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার গেমপ্ল্যান? ফেলুকওয়েও-র বক্তব্য, ‘‘আমরা একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী তৈরি হচ্ছি। দলের সবাই জানে কাকে কী করতে হবে। আমার মনে হয়, ব্যাটসম্যানদের কাজ হবে ক্রিজে গিয়ে বলটা ভাল করে দেখা এবং সোজা ব্যাটে খেলা।’’