বিশ্বজয়ের উল্লাসে! লখনউয়ে হকি যুব বিশ্বকাপ জয়ীরা। ছবি: টুইটার
বদলা, রেকর্ড, স্বপ্ন— রবিবার লখনউয়ের ধ্যানচাঁদ স্টেডিয়ামের ক্যানভাসে কত রঙ।
বদলা— রিওতে বেলজিয়ামের কাছে নক আউটে হেরে ভারতের অলিম্পিক্সের স্বপ্ন শেষ হয়ে যাওয়ার।
রেকর্ড— ১৫ বছর পরে জুনিয়র হকিতে বিশ্বসেরা হওয়ার নজির গড়ার।
স্বপ্ন— অলিম্পিক্স পদক জয়ের।
গোটাটাই এল জুনিয়র হকি বিশ্বকাপের ফাইনালে বেলজিয়ামকে ২-১ হারিয়ে ভারতের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এই প্রথম আয়োজক দেশের চ্যাম্পিয়ন হওয়া। যার পুরস্কার হিসেবে ক্রীড়ামন্ত্রী বিজয় গোয়েল চ্যাম্পিয়ন দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়কে তিন লাখ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।
ভারতীয় দলের পারফরম্যান্স অন্যতম ফেভারিট করে তুলেছিল সিমরনজিতদের টুর্নামেন্টের গোড়া থেকেই। একটাও ম্যাচ হারেনি ভারত এই বিশ্বকাপে। দুরন্ত এই ধারাবাহিকতার রহস্য কী?
প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক ধনরাজ পিল্লাই কৃতিত্ব দিচ্ছেন কোচ হরেন্দ্র সিংহকে। মুম্বই থেকে ফোনে ধনরাজ বললেন, ‘‘এই টিমটাকে বছর তিনেক একসঙ্গে রাখার কাজটা দারুণ ভাবে সামলেছে হরেন্দ্র। দলে খুব একটা চেঞ্জ করেনি। তাই টিমের মধ্যে বোঝাপড়াটা এত ভাল চোখে পড়ছে। এটাই এত ভাল পারফরম্যান্সের অন্যতম কারণ।’’
চার বারের অলিম্পিয়ানের মতে অনূর্ধ্ব-২১ এই দলের তুরুপের তাস হরমনপ্রীত সিংহ। ‘‘যে ভাবে আজ বেলজিয়ামকে ভারতের ইয়ং টিমটা হারাল তাতে আমার মনে হচ্ছে এই টিম থেকে সিনিয়র ইন্ডিয়ায় অনেক প্লেয়ার খেলতে পারে। বিশেষ করে বলব হরমনপ্রীতের কথা। রিও অলিম্পিক্সে এ বার সিনিয়র টিমে ও ছিল। ওর অভিজ্ঞতা তাই বেশি। বড় মঞ্চে কী করে মাথা ঠান্ডা রেখে পারফর্ম করতে হয় সেটা হরমনপ্রীতকে দেখেই বোধহয় জুনিয়র টিমের বাকি প্লেয়াররা বুঝেছে। না হলে ঘরের মাঠে পনেরো-ষোলো হাজার দর্শকের সামনে প্রত্যাশার চাপ সামলে এ ভাবে জেতাটা সহজ নয়,’’ বলেন ধনরাজ।
প্রাক্তন ভারতীয় প্লেয়ারদের অনেকে ভারতের এই সাফল্যের সিংহভাগ কৃতিত্ব দিচ্ছেন কোচ হরেন্দ্রকেও। যিনি ২০১৪-তে জুনিয়র দলের দায়িত্ব নেন। উচ্ছ্বাসে ভাসতে থাকা হরেন্দ্র ম্যাচের পর লখনউয়ে বলেছেন, ‘‘ছেলেদের জিজ্ঞাসা করে দেখুন, এই দলটার দায়িত্ব নেওয়ার পরেই কিন্তু আমি বলেছিলাম আমরা বিশ্বকাপ জিতব। তবে এর কৃতিত্ব আমি নিজে নিতে চাই না। এই জয়ের আসল নায়ক হল এই টিমের ১৮ জন রত্ন। আজ ওদেরই দিন।’’