অজি এক্সপ্রেস

অশ্বিনকে নিয়ে অত চিন্তার কী আছে

ভারতীয় শিবির মনে হয় একটু দ্বিধায় আছে অশ্বিনকে নিয়ে। ওকে খেলাবে কি খেলাবে না, এই নিয়ে হয়তো দোনোমোনো করছে। ব্যক্তিগত ভাবে আমার মনে হয়, অশ্বিন না খেললে ভারতের ক্ষতি বিশেষ হবে না।

Advertisement

জেফ থমসন

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:২১
Share:

সংশয়: চতুর্থ টেস্ট শুরুর আগে আগ্রহের কেন্দ্রে অশ্বিন। ফাইল চিত্র

সিডনি টেস্টের আগে ভারতীয় দল নিয়ে যা খবর পাচ্ছি, তাতে মনে হচ্ছে ওরা দুই স্পিনার নিয়ে খেলতে পারে। ছকটা খুব খারাপ নয়। বিশেষ করে সিডনিতে। যেখানে সাধারণত স্পিনাররা সাহায্য পেয়ে থাকে। শোনা যাচ্ছে, আর অশ্বিন এখনও পুরো সুস্থ হতে পারেনি। সম্ভবত সিরিজের শেষ টেস্টেও বাইরে থাকতে হবে ওকে।

Advertisement

ভারতীয় শিবির মনে হয় একটু দ্বিধায় আছে অশ্বিনকে নিয়ে। ওকে খেলাবে কি খেলাবে না, এই নিয়ে হয়তো দোনোমোনো করছে। ব্যক্তিগত ভাবে আমার মনে হয়, অশ্বিন না খেললে ভারতের ক্ষতি বিশেষ হবে না। অ্যাডিলেডের দ্বিতীয় ইনিংসে অশ্বিনের বোলিং দেখে আমি খুশি হতে পারিনি। ওখানে সবাই ভেবেছিল, খারাপ হতে থাকা শেষ দিনের পিচে অশ্বিন একাই ম্যাচ জিতিয়ে দেবে। কিন্তু সেটা হয়নি। তা ছাড়া অশ্বিন বেশ কিছু দিন ম্যাচের বাইরেও আছে। মানছি, ও নেটে বল করা শুরু করেছে। কিন্তু নেটে বল করা আর পাঁচ দিনের টেস্টে বল করা পুরো আলাদা ব্যাপার। সপ্তাহ দু’য়েক কেউ যদি খেলার বাইরে থাকে, তা হলে ম্যাচ টাচটা চলে যায়। এটা অনেকটা আট বলের পুল খেলে স্নুকার চ্যাম্পিয়নশিপে নামার মতো। হঠাৎ করে আবার বড় টেবলে নেমে পড়তে হল। তখন আবার ছন্দ ফিরে পেতে সময় লাগবে। আমার সাফ কথা, অশ্বিন যদি একশো ভাগ সুস্থ না থাকে, তা হলে ওকে নিয়ে এত চিন্তা করছে কেন ভারত? ওকে বিশ্রাম দাও। আগের টেস্টে তো অশ্বিনকে ছাড়াই জিতেছে ভারত। আর ওর বদলে যে স্পিনার খেলল, সেই রবীন্দ্র জাডেজা তো ভালই করেছে। মেলবোর্নে যে দলটা টেস্ট জিতিয়েছে, তাদের ওপর আস্থা রাখতেই হবে ভারতকে। ওই দলে একটা পরিবর্তন দেখতে চাই। হনুমা বিহারীকে মিডল অর্ডারে পাঠিয়ে মায়াঙ্ক আগরওয়ালের সঙ্গে একজন বিশেষজ্ঞ ওপেনার দিয়ে ওপেন করানো হোক। আমার আগের কলামেই লিখেছিলাম, টেস্টে ওপেন করার মতো টেকনিক নেই বিহারীর।

সিরিজ জিতে ইতিহাস গড়ার জন্য ভারত একটা খুব সহজ ফর্মুলা মেনে চলতে পারে। টস জিতলে ব্যাট করো। সিডনিতে যা খুব কাজে আসবে। প্রথম দিকে হয়তো বল একটু মুভ করতে পারে, কিন্তু প্রথম দু’দিন সিডনি ব্যাট করার পক্ষে একেবারে আদর্শ। পরের দিকে উইকেট যখন ভাঙবে, স্পিনাররা তুরুপের তাস হয়ে উঠবে। সিডনিতে স্পিনাররা সব সময় সুবিধা পেয়ে এসেছে। এই টেস্টের পিচটা আমি না দেখলেও, আশা করছি, পরের দিকে স্পিনাররা সাহায্য পাবে।

Advertisement

এ বার প্রশ্ন আসছে, এই পিচে ভারতের কি দু’জন স্পিনার খেলানো উচিত? আজ, বৃহস্পতিবার টেস্টের প্রথম দিনের পিচ দেখেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে ভারতকে। ঘূর্ণি পিচ মনে হলে দুই স্পিনারে যাক। অশ্বিন যদি সুস্থ নাও হয়, সমস্যা নেই। ওদের চায়নাম্যান বোলার কুলদীপ যাদব আছে। যে দু’দিকেই বল ঘোরাতে পারে। মনে রাখতে হবে, অস্ট্রেলিয়া কিন্তু স্পিনটা ভাল খেলতে পারে না। ভারত যাকেই খেলাক, চিন্তা করার কোনও কারণ নেই। ভারতই চালকের আসনে রয়েছে। টিম পেনের অস্ট্রেলিয়াই রয়েছে চাপের মধ্যে। আমাকে কেউ যদি প্রশ্ন করেন, অস্ট্রেলিয়া কী ভাবে এই টেস্টটা জিততে পারে, আমি কোনও উত্তর দিতে পারব না। এর কোনও উত্তর আমার কাছে নেই। অস্ট্রেলিয়ার কাছে তো সেই একই ব্যাটিং গ্রুপ আছে। আর যাদের খেলতে হবে বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে। দু’টো দলে তফাত হচ্ছে ব্যাটিং। তিন টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের কেউ সেঞ্চুরি করতে পারেনি। যে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারের ব্যাটিং নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তার নাম প্যাট কামিন্স! উল্টো দিকে ভারতকে দেখুন। বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান ওদের। বিরাট কোহালি। যে সব রকম কঠিন পরিস্থিতিতে রান করতে ভালবাসে। আছে চেতেশ্বর পূজারাও। বোলার হিসেবে কখনওই সে সব ব্যাটসম্যানের বিরুদ্ধে বল করতে পছন্দ করতাম না, যারা বেশি শট খেলে না।

ভারতীয় বোলিং প্রসঙ্গে আসি। যশপ্রীত বুমরা নিশ্চয়ই তেতে আছে। বাইশ গজে যদি ঘাসও থাকে, তা হলে বুমরার সুবিধে হবে। আর একটা কথা। সিডনির ঐতিহ্য যাই হোক না কেন, কোনও এক জেফ থমসন কিন্তু এই মাঠে বল করতে ভালবাসত। কারণ প্রথম দিকে সিডনিতে বল মুভ করত। আর আবহাওয়া উপযোগী হলে সুইংও পাওয়া যেত।

(৩৬০ কর থমসন-কলাম)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন