গলে ফিরে এসে ভাল লাগছে। সমুদ্রের ধারে সুন্দর এই মাঠটা আমার অনেক সুখস্মৃতির প্রতীক। ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজ খেলার শেষ প্রস্তুতিও এই মাঠে। আপনাদের দেশের বিরুদ্ধে অনেক কঠিন যুদ্ধ লড়েছি। চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা আর চিরস্থায়ী বন্ধুত্ব— দুটোই উপভোগ করেছি। আমাদের উপমহাদেশীয় প্রতিবেশীর বিরুদ্ধেই যে জীবনের শেষ সিরিজ খেলব, এর চেয়ে মানানসই কিছু হয় না।
এটাই আমার শেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা। চাইব গল আর তার পর কলম্বোতেও টিমের হয়ে প্রচুর রান করে সফল ভাবে বিদায় নিতে। কিন্তু এই সিরিজটা যেন ফেয়ারওয়েল সিরিজ না হয়ে দাঁড়ায়। দুটো টিমের জন্যই এটা নতুন ভবিষ্যতের সিরিজ। যে ভবিষ্যৎ আকার পাবে কিছু তরুণ, উত্তেজক প্রতিভার মাধ্যমে।
শ্রীলঙ্কার দৃষ্টিকোণ থেকে বলতে পারি, বছরদুয়েক আগে সনৎ-মুরলী-ব্যাস আর পরে মাহেলা-দিলশানের অবসরের পর আমরা এখন প্রচণ্ড ভাঙাগড়ার একটা সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। ওদের শূন্যতা ভরাট করাটা সহজ নয়। নতুন যে প্লেয়াররা এসেছে তারা অনভিজ্ঞ হতে পারে, কিন্তু দেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার খিদে আর প্রতিভা ওদের মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণে আছে। তবে আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। সবাই সব সময় জিততে চায়। কিন্তু আমাদের দুর্বলতাগুলোর কথা মাথায় রেখে বলছি, এটা অসম্ভব। হালফিলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ হার প্রচণ্ড হতাশাজনক। আরও বেশি করে, কারণ আমরা গর্ব করি যে ঘরের মাঠে আমরা অপরাজেয়। কিন্তু তরুণ প্লেয়াররা যত দিন শিখবে আর উন্নতি করবে, তত দিন পর্যন্ত বলা যাবে না শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট শেষ হয়ে গিয়েছে।
ভারতও ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ওদের টিমে অনেক প্রতিভা আছে যারা প্রচুর খাটছে। টিমে নিজের জায়গা পাকা করার পাশাপাশি লম্বা আর সফল কেরিয়ার গড়ার জন্যও। ভারতের মতো বিরাট দেশে জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার লড়াইটা তীব্র। বিভিন্ন প্লেয়াররা এই চাপটা কী ভাবে সামলায়, দেখতে আগ্রহ হচ্ছে।
শ্রীলঙ্কার এই সুন্দর দক্ষিণ প্রান্তে ঝোড়ো হাওয়া আর প্রচণ্ড বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। তাতে খেলার উপর কতটা প্রভাব পড়বে জানি না। তবে ভিজে হোক বা শুকনো, গল পিচের চরিত্র খুব একটা পাল্টাবে না। যারা খাটতে ইচ্ছুক, তারা প্রচুর রান পাবে। শেষ দু’দিন দু’দলের স্পিনাররা ভাল সাহায্য পাবে।
এমনিতে গল উইকেটে সাফল্যের চাবিকাঠি হল প্রথম ইনিংসে ভাল ব্যাট করা। জুনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভাল শুরু করেও আমরা মাত্র ৩০০ করেছিলাম। তার পর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে হয়েছিল, পাক ব্যাটসম্যানরা কী ভাবে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিচ্ছে। বুধবার থেকে আমরা অবশ্য উল্টোটা করার লক্ষ্য নিয়ে নামব। ম্যাচের শুরু থেকেই ভারতকে চাপে ফেলে দেব।