ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে খেলুক পৃথ্বী, ময়াঙ্করা

বছরের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট সিরিজে ভারতীয় দলের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের লড়াই দেখেছিলাম।  আশা জেগেছিল, বছরের মাঝামাঝি ইংল্যান্ড সিরিজে বিরাট কোহালির ভারতীয় দল একটা বড়সড় চমক দেখাবে। কিন্তু সেই আশা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হল ।

Advertisement

অশোক মলহোত্র

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৫৬
Share:

ফাইল চিত্র।

ইংল্যান্ড ৩৩২ ও ৪২৩-৮ ডি

Advertisement

ভারত ২৯২ ও ৫৮-৩

বছরের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট সিরিজে ভারতীয় দলের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের লড়াই দেখেছিলাম। আশা জেগেছিল, বছরের মাঝামাঝি ইংল্যান্ড সিরিজে বিরাট কোহালির ভারতীয় দল একটা বড়সড় চমক দেখাবে। কিন্তু সেই আশা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হল ।

Advertisement

এমনিতেই ইংল্যান্ড সফর যে কোনও ক্রিকেটারের কাছেই একটা কঠিন চ্যালেঞ্জ। এখানে বল নড়বে। আবহাওয়া কখনও রোদ-ঝকঝকে, কখনও বা মেঘলা-বৃষ্টিস্নাত। বিষাক্ত সব সুইং অপেক্ষা করে থাকে ক্রিকেটারদের টেস্ট-দক্ষতা পরীক্ষা করার জন্য। ইংল্যান্ডের মাটিতে এই চ্যালেঞ্জ সামলাতে গিয়ে এ বার বিরাট কোহালি, চেতেশ্বর পূজারা ও ভারতীয় পেসাররা বাদে বাকিরা ব্যর্থ।

বিশেষ করে ব্যর্থ ওপেনিং জুটি। মুরলী বিজয় আগে বিদেশে ভাল খেললেও এ বার সেই ফর্ম দেখাতে ব্যর্থ। শিখর ধওয়নও বুঝিয়ে দিল, বিদেশের মাটিতে টেস্ট খেলার জন্য ও তৈরি নয়। এ বারের ইংল্যান্ড সফরে কোনও ভারতীয় ওপেনার শতরান করেননি। করার চেষ্টাও দেখিনি। হাতের কাছে বিরাট কোহালির মতো ক্রিকেটার রয়েছেন, যিনি গত ইংল্যান্ড সফরে ব্যর্থ হওয়ার পরে, এই সিরিজে রানের পর রান করে যাচ্ছেন। শিখররা তাও বিরাটের মতো চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটারের কাছ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইটা শিখতে পারেন না।

ইংল্যান্ড সফর আপাতত শেষ। সামনে রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভারত সফর। তার পরে বছরের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়া যাবে ভারতীয় দল। তার জন্য আমি প্রথমেই ওপেনিং জুটি পাল্টে ফেলার পরামর্শ দেব। অনেকে এই প্রসঙ্গে কে এল রাহুলের ভবিষ্যৎ জানতে চাইবেন। আমি রাহুলকে রেখে দেওয়ার পক্ষপাতী। কারণ ওর টেকনিক ভাল। বয়সটাও কম। আমার মতে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকেই আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সিরিজের কথা ভেবে পৃথ্বী শ ও ময়াঙ্ক অগ্রবালকে ওপেনিংয়ে নিয়ে আসা হোক। এই দু’টো ছেলেই ঘরোয়া ক্রিকেট ও ভারতীয় ‘এ’ দলের হয়ে প্রচুর রান করেছে। এটাই ওদের সুযোগ দেওয়ার মোক্ষম সময়। বিদেশে ভারত ‘এ’-র হয়ে শতরান পাওয়ায় আত্মবিশ্বাসও রয়েছে। সুযোগ পেলে পৃথ্বীরা হতাশ করবে না। বিশেষত পৃথ্বী বা ময়াঙ্ক তিনটে স্লিপ, একটা গালি, একটা ফরোয়ার্ড শর্ট লেগ, একটা ব্যাকওয়ার্ড শর্ট লেগ রেখে টেস্টে বোলার আক্রমণ শুরু করলে তাঁকে, পাল্টা আক্রমণও করতে পারেন।

নির্বাচক থাকার সময় দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের কথা মনে পড়ছে। সে বার জাহির খান, অজিত আগারকর, আশিস নেহরারা সফল হননি। তার পরে দেশের মাটিতে ইংল্যান্ড সিরিজে আমরা ওই তিন বোলারকে বাদ দিই। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মোহালিতে টিনু যোহানন, সঞ্জয় বাঙ্গাররা খেলেছিলেন। এ বার সময় এসেছে নতুন ওপেনার খেলানোর।

এই ইংল্যান্ড সিরিজে ওপেনাররা বড় ইনিংস খেলতে পারেননি বলেই বার বার চাপে পড়েছে ভারতীয় মিডল অর্ডার। এই জায়গায় চেতেশ্বর পূজারা ও অজিঙ্ক রাহানেকে আমি রেখে দেওয়ার পক্ষপাতী। ওরা দু’জনেই ভাল ব্যাটসম্যান। দরকার একটু আত্মবিশ্বাস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দেশের মাটিতে যদি ওরা ব্যর্থ হন, তা হলে হনুমা বিহারী, করুণ নায়ার, শ্রেয়স আইয়ার রয়েছেন। বিশেষ করে আমি হনুমার কথা বলব। ছেলেটা ওভালে চাপের মুখে যে ভাবে অর্ধশতরানের ইনিংস খেলেছে তা প্রশংসার। ম্যাচ টেম্পারামেন্টও বেশ ভাল। ইরানি কাপে অবশিষ্ট ভারতের হয়ে ১৮০ রান করেছিল হনুমা। উইকেটকিপার হিসেবে কিন্তু ঋষভ পন্থ চলবে না টেস্ট ক্রিকেটে। সুখবর, ঋদ্ধিমান সুস্থ হয়ে উঠছেন। অস্ট্রেলিয়ায় ওঁকে দলে লাগবে। ।

এ বার বোলিং। উমেশ, সিরাজ, ভুবনেশ্বর, খলিল, ইশান্ত, শামি, বুমরাদের লম্বা লাইন পেস আক্রমণে। কাজেই জোরে বলে আর ভারতকে ভয় পাওয়ানো যাবে না। তবে কুলদীপ যাদবকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্টে খেলিয়ে দেখে নেওয়া হোক। বিদেশে টেস্টে তিন পেসারের সঙ্গে কুলদীপ ও জাডেজা ভাল বোলিং আক্রমণ। অশ্বিন দেশে যতটা সফল, বিদেশে ততটা নন। আর হার্দিককে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে পাঠানো হোক। ওকে আগে বোলিং বা ব্যাটিংয়ের কোনও একটায় আন্তর্জাতিক মানে সেরা হতে হবে। মাঝারি মানের অলরাউন্ডাররা কখনও দুনিয়া কাঁপাতে পারেননি। কপিল, হ্যাডলি, জাক কালিসরা সেটাই দেখিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন