কেদারের বলে আউট উইলিয়ামসন। উচ্ছ্বাস ভারতীয়দের। রবিবার ওয়েলিংটনে। ছবি: এএফপি।
সিরিজ জেতা হয়ে গিয়েছিল আগেই। রবিবার ওয়েলিংটনে দেখার ছিল ভারত ৪-১ ফলে নিউজিল্যান্ড থেকে ওয়ানডে সিরিজ জিততে পারে কিনা। আর ঠিক সেটাই করে দেখাল টিম ইন্ডিয়া। ৩৫ রানে পঞ্চম ওয়ানডে জিতল রোহিতের দল।
২৫৩ রানের জয়ের লক্ষ্য তাড়া করে ৪৪.১ ওভারে ২১৭ রানে শেষ হল কেন উইলিয়ামসনের কিউইরা। সর্বাধিক ৪৪ করলেন অলরাউন্ডার জেমস নিশাম। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি তাঁকে অসামান্য তৎপরতায় রান আউট করার সঙ্গে সঙ্গে ভারতের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। উইলিয়ামসন (৩৯), টম লাথামরা (৩৭) কেউ বড় রান পাননি। লেগস্পিনার যুজবেন্দ্র চহাল (৩/৪১) ভারতের সফলতম বোলার। মহম্মদ শামি (২/৩৫), হার্দিক পান্ড্য (২/৫০), কেদার যাদব (১/৩৪), ভুবনেশ্বর কুমাররা (১/৩৮) ভাগাভাগি করে নিলেন উইকেট।কিউই ইনিংসে আগাগোড়া চাপ রেখে গেলেন বোলাররা।
অথচ, একসময় আশঙ্কাই বাড়ছিল। হ্যামিলটনের পর ওয়েলিংটনেও ফের সুইংয়ের সামনে নাজেহাল দেখাচ্ছিল ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। উঁকি মারছিল ৯২ রানে শেষ হওয়ার অভিশপ্ত স্মৃতি। কিন্তু প্রধানত অম্বাতি রায়ুডুর লড়াকু ইনিংসের সুবাদে ভদ্রস্থ রান তুলল ভারত। ৪৯.৫ ওভারে সব উইকেট খুইয়ে তুলল ২৫২। পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ৩-২ করার জন্য নিউজিল্যান্ডের দরকার ২৫৩ রান।
আরও পড়ুন: সব প্রশ্নের জবাব দিল মিডল অর্ডার, পঞ্চম একদিনের ম্যাচ জেতার নেপথ্যে কে...
আরও পড়ুন: ‘চোটের হাত থেকে রেহাই সচিন, ব্র্যাডম্যানও পাননি’
আরও পড়ুন: তোমার ব্যাটে রান চাইছি! খোয়াজাকে স্লেজিং ডিকওয়েলার, দেখুন ভিডিয়ো
অথচ, একসময় আশঙ্কাই তাড়া করছিল ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের। চতুর্থ একদিনের ম্যাচের পুনরাবৃত্তির ছবিই দেখা যাচ্ছিল ওয়েস্টপ্যাক স্টেডিয়ামে। ১৮ রানে পড়ে গিয়েছিল চার উইকেট। ধুঁকছিল ভারতের ইনিংস। সেখান থেকে পঞ্চম উইকেটে অম্বাতি রায়ুডু ও বিজয় শঙ্করের ৯৮ রানের জুটি শুরুর চাপ কাটিয়ে দিল। রায়ুডু শেষ পর্যন্ত করলেন ৯০। ১১৩ বলের ইনিংসে মারলেন আটটি চার ও চারটি ছয়।
ম্যাচের সেরা রায়ুডু করলেন ৯০। ছবি: এএফপি।
রায়ুডুর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে তার আগে রান আউট হলেন ছয় নম্বরে নামা বিজয় শঙ্কর (৪৫)। সাতে নেমে ৪৫ বলে ৩৪ করলেন কেদার যাদব। ষষ্ঠ উইকেটে রায়ুডু-কেদার যোগ করলেন ৭৪ রান। এরপর ঝড় তুললেন হার্দিক পান্ড্য। সাত নম্বরে নেমে ২২ বলে করলেন ৪৫। তার মধ্যে পাঁচটি ছক্কা ও দু’টি চার। এর মধ্যে লেগস্পিনার টড অ্যাস্টলকে মারা ছয়ের হ্যাটট্রিকও রয়েছে। হার্দিকের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংই আড়াইশোর পথ গড়ে দেয়। যা একসময় কল্পনারও বাইরে ছিল।
টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। কিন্তু নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে। সুইং সহায়ক পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে ভাঙন ধরান ম্যাট হেনরি (৩/৩৯) ও ট্রেন্ট বোল্ট (৪/৩৫)। দশ ওভারের মধ্যে ১৮ রানে পড়ে যায় চার উইকেট। হ্যামিলটনের মতো ৯২ রানে ইনিংসে দাঁড়ি পড়ার আশঙ্কা ঘিরে ধরে ভারতীয় দলকে। সেই ম্যাচ আট উইকেটে জিতে পাঁচ ম্যাচের একদিনের সিরিজে ৩-১ করে ব্যবধান কমিয়েছিল নিউজিল্যান্ড।
ধোনি বোল্ড। উচ্ছ্বসিত ট্রেন্ট বোল্ট। ছবি: এএফপি।
রবিবার রোহিত (২) প্রথমে ফেরেন। তাঁকে বোল্ড করেন হেনরি। এর পর ফেরেন তাঁর সঙ্গী ওপেনার শিখর ধওয়ন (৬)। বোল্টের বলে তিনি ক্যাচ দেন হেনরিকে। ১৭ রানে পড়ে তৃতীয় উইকেট। হেনরির বলে মিচেল স্যান্টনারকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শুভমান গিল (৭)। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কেরিয়ারের প্রথম দুই ম্যাচেই ব্যর্থ হলেন তিনি। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট সারিয়ে ফেরা মহেন্দ্র সিংহ ধোনি (১) ফেরেন সঙ্গে সঙ্গেই। বোল্টের বলে অফস্টাম্প ছিটকে যায় তাঁর। ১৮ রানে চার উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে ভারত।
এদিন ভারত প্রথম এগারোয় তিনটি বদল করে। দীনেশ কার্তিকের পরিবর্তে দলে আসেন ধোনি। বাঁ-হাতি পেসার খলিল আহমেদের পরিবর্তে দলে আসেন ডানহাতি পেসার মহম্মদ শামি। চায়নাম্যান কুলদীপ যাদবের পরিবর্তে দলে আসেন অলরাউন্ডার বিজয় শঙ্কর।
(আইসিসি বিশ্বকাপ হোক বা আইপিএল, টেস্ট ক্রিকেট, ওয়ান ডে কিংবা টি-টোয়েন্টি। ক্রিকেট খেলার সব আপডেট আমাদের খেলা বিভাগে।)