প্রশ্নপত্র কঠিন হতেই পাশ করতে পারল না বুমরা-রা

ফিল্ডিংয়ে যে এতটুকুও উন্নতি হয়নি, সেটাও বৃহস্পতিবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল শ্রীলঙ্কা। তিন-তিনটে ক্যাচ পড়ল ভারতীয় ফিল্ডারদের হাত থেকে! চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় টুর্নামেন্টে এত ক্যাচ মিস করলে তো হারতেই হবে।

Advertisement

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৭ ০৪:২৮
Share:

দলের ব্যাটিং গভীরতা কেমন, ইংল্যান্ডে পৌঁছনোর পর তা একাধিকবার বুঝিয়েছে ভারতের ব্যাটসম্যানরা। বোলাররা কিন্তু তা দেখানোর সুযোগ পায়নি। ইংল্যান্ডে এই প্রথম ভারতের বোলিং চাপের মুখে পড়ল আর তাতেই ভেঙে পড়তে দেখা গেল তাদের। প্রশ্নপত্র কঠিন হতেই ডাহা ফেল।

Advertisement

ফিল্ডিংয়ে যে এতটুকুও উন্নতি হয়নি, সেটাও বৃহস্পতিবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল শ্রীলঙ্কা। তিন-তিনটে ক্যাচ পড়ল ভারতীয় ফিল্ডারদের হাত থেকে! চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় টুর্নামেন্টে এত ক্যাচ মিস করলে তো হারতেই হবে।

এ দিন ওভালে ম্যাচটা জিতলে শেষ চারে উঠে যেত ভারত। কিন্তু তার আগেই একটা মধ্যবিত্ত টিমের কাছে হেরে ধনী ভারত তাদের দুর্বলতাগুলো প্রকাশ করে দিল।

Advertisement

তিনশোর ওপর রান তোলার পরে ম্যাচটা যে হারতেও হতে পারে, এটা আসলে অনেকেই ভাবতে পারেনি। ম্যাচ শুরুর আগেও ভারতও হাল্কাভাবেই বোধহয় নিয়েছিল ম্যাচটাকে। না হলে ব্যাটিং সহায়ক উইকেট ও বিপক্ষে একাধিক বাঁ-হাতি ও মোট আটজন ব্যাটসম্যান থাকা সত্ত্বেও কেন আর. অশ্বিনকে বসিয়ে রাখা হল বুঝলাম না। হার্দিক পাণ্ড্য যেখানে দলে রয়েছে, সেখানে দুই স্পিনারে খেলাই যেত। উইকেটে বড় রান তাড়া করা যাবে বুঝেই বোধহয় শ্রীলঙ্কা আটটা ব্যাটসম্যান নিয়ে নেমেছিল এ দিন। ওদের পরিকল্পনাটা ঠিকই ছিল। কিন্তু বিরাটদের পরিকল্পনা বিফলে গেল।

সবচেয়ে অবাক হলাম এটা দেখে যে বিরাট নিজে হঠাৎ বল করতে চলে এল। বল করাল কেদার যাদবকে দিয়েও! এখানেই তো ব্যাটসম্যানদের উপর থেকে চাপটা কমে গেল। তাদের বার্তা দেওয়া হল, দিশাহারা হয়ে গিয়েছে ভারত। তাই আর রাস্তা না পেয়ে বিরাটই বল করতে চলে এল।

আরও পড়ুন: ঝুঁকিহীন ক্রিকেট হারল সাহসী শ্রীলঙ্কার কাছে

এই হতাশার মধ্যেও অবশ্য ভারতের একটাই আশার আলো শিখর ধবনের ফর্মে ফেরা। বেশ কিছু দিন দলের বাইরে থাকার পর কে এল রাহুলের জায়গায় দলে ফিরে নিজেকে ফর্মে ফিরিয়ে আনল ধবন। কেএল রাহুল চোট পাওয়ায় শিখরের কাছে সুযোগটা আসে। এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে ধাপে ধাপে নিজের সেরা ফর্মে ফিরে এল ও। ইংল্যান্ডে পৌঁছে ৪০, ৬০, ৬৮-র পর এ বার ১২৫। আর তাতেই ভারত ৩২১-৬-এর একটা বিশাল পাহাড় তুলে দিয়েছিল শ্রীলঙ্কার সামনে। কিন্তু শ্রীলঙ্কাও ব্যাট করতে নেমে ভারতকে পাল্টা চাপে ফেলে দেয়। তিনটে ক্যাচ পড়ায় এই চাপটা আরও বেড়ে যায় ভারতের।

ফর্মে ফেরার জন্য অনেক গুলো শট শিখরকে বন্ধ করতে হয়েছে। প্রায়ই ওকে গালি দিয়ে স্টিয়ার করতে দেখা যেত। এখন কিন্তু সেটা করে না। বরং স্কোয়ার কাট করছে, সেগুলোও বেশ জোরে। মনঃসংযোগও অনেকটা বেড়েছে। উইকেট ছুড়ে দেওয়ার প্রবণতাও এখন আগের চেয়ে অনেক কম। শট বাছাই এখন অনেক ভাল হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে শট এখন আর নেয় না ও। তা ছাড়া ব্যাটিংয়ের ওপর ওর নিয়ন্ত্রণও এখন আগের চেয়ে অনেক ভাল। গিয়ার তোলা-নামানো একসঙ্গেই করতে পারে ও এখন। একই ব্যাপার চোখে পড়ল শ্রীলঙ্কার গুণতিলকার মধ্যেও। মনে হচ্ছিল যেন ছোট সঙ্গকারাকে দেখছি। কুশল মেন্ডিস ওর সঙ্গে যে ব্যাটিংটা করল, সেটাও এই জয়ের স্তম্ভ। ওরা এ দিন রবীন্দ্র জাডেজাকে টার্গেট করে নিয়েছিল।

তবে আশা করছি শ্রীলঙ্কা ম্যাচের ভুলগুলো দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শুধরে নেবে বিরাটরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন