কোচ এখন আম্পায়ারও

কুম্বলের কমিটিতে বিচারপতি গব্বর

শিখর ধবন, নামটা শোনামাত্র প্রথম ছবিটা কী ভেসে ওঠে? বোলার-নিধন শেষে গোঁফে তা দেওয়া এক দিল্লিওয়ালা নিশ্চয়ই। ভারতীয় ক্রিকেট যাঁকে ‘গব্বর’ বলে ডাকে, চেনে। কিন্তু যদি বলা হয়, ভারতীয় সংসারে এখন পুরোদস্তুর ‘বিচারপতি’ তিনি, ক্রিকেট বাদে যাঁর কাজ জরিমানা-বিদ্ধ টিমমেটদের আবেদন শোনা, তা হলে?

Advertisement

চেতন নারুলা

সেন্ট কিটস শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৬ ০৪:৪৫
Share:

শিখর ধবন।

শিখর ধবন, নামটা শোনামাত্র প্রথম ছবিটা কী ভেসে ওঠে? বোলার-নিধন শেষে গোঁফে তা দেওয়া এক দিল্লিওয়ালা নিশ্চয়ই। ভারতীয় ক্রিকেট যাঁকে ‘গব্বর’ বলে ডাকে, চেনে। কিন্তু যদি বলা হয়, ভারতীয় সংসারে এখন পুরোদস্তুর ‘বিচারপতি’ তিনি, ক্রিকেট বাদে যাঁর কাজ জরিমানা-বিদ্ধ টিমমেটদের আবেদন শোনা, তা হলে?

Advertisement

বিষম লাগা উচিত এবং উচিত নয়। অনিল কুম্বলের সংসারে এমন অদ্ভুত কাণ্ডকারখানা তো বেশ কিছু দিন ধরেই চলছে!

অদূর অতীতে ভারত বিদেশ সফরে গেলে লোকে অধিনায়ককে প্রথাগত সাংবাদিক বৈঠক করতে দেখেছে। কিন্তু পুরো একটা ড্রাম-সেশন আমদানি করতে দেখেছে বলে তো মনে হয় না। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে রওনা হওয়ার আগে কোহালিরা যা করে গিয়েছেন। গিয়েছেন, কুম্বলে বলেছেন বলেই। আবার ক্যারিবিয়ান উপকূলে পা দিয়ে বারবার স্নরকেলিং, সি ডাইভিং, হর্স রাইডিং— নানা কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত হয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে। এবং এমন ফুরফুরে সংসারে যে গোটা একটা জরিমানা-কমিটি বসে যাবে, যার ‘বিচারপতি’ হবেন শিখর ধবন, কমিটির প্রধান করে দেওয়া হবে আপাত-লাজুক ভুবনেশ্বর কুমারকে, তাতে আর আশ্চর্য কী?

Advertisement

আসলে প্র্যাকটিস সেশনে দেরি করে আসা যে বরদাস্ত করবেন না, আগেভাগে ঘোষণা করে দিয়েছিলেন টিম ইন্ডিয়ার নতুন কোচ। বলে দিয়েছিলেন, দেরি করে এলে পঞ্চাশ ডলার জরিমানা দিতে হবে। কিন্তু বোঝা যায়নি, জরিমানা আদায়ে একটা কমিটি বসিয়ে দেবেন তিনি! তিন জন আছেন কমিটিতে। চেতেশ্বর পূজারা— যিনি অভিযুক্তদের থেকে জরিমানা আদায় করবেন। শিখর ধবন— এক কথায় বিচারপতি। সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটারের যদি মনে হয় জরিমানা হওয়ার মতো কিছুই তিনি করেননি, তা হলে ধবনের কাছে আবেদন করতে পারবেন। এবং ভুবনেশ্বর কুমার। তিনি কমিটি প্রধান, যাঁর প্রধান কাজ তহবিল ঠিক রাখা।

আপাতত যা খবর, তহবিল ফাঁকাই আছে। কাউকে জরিমানা দিতে হয়নি। কিন্তু কুম্বলের এমন অভিনব টিম বন্ডিং স্ট্র্যাটেজি নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে। বলাবলি চলছে, ভারতীয় ক্রিকেটে জন রাইট জমানায় যে ‘বাডি প্রোগ্রাম’ চালু হয়েছিল টিমে সিনিয়র-জুনিয়র দূরত্ব মুছতে, তা নতুন মোড়কে পেশ করেছেন কুম্বলে। ‘বাডি প্রোগ্রামে’ একজন সিনিয়রের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হত এক জুনিয়রকে। এতে টিমের আভ্যন্তরীণ যোগাযোগের অনেক উন্নতি ঘটেছিল। অনিল কুম্বলের স্ট্র্যাটেজিও ইতিমধ্যে হিট। লোকেশ রাহুলের মতো কেউ কেউ বলেও দিচ্ছেন, ‘‘ড্রেসিংরুমের পরিস্থিতি এখন অসাধারণ। মাধেমধ্যেই আমরা নতুন নতুন জিনিস করছি। এতে মাঠে ফোকাস ধরে রাখতে সুবিধে হচ্ছে।’’ শার্দুল ঠাকুরের মতো টিমের কনিষ্ঠতম সদস্যও বলে দিয়েছেন, ‘‘ড্রেসিংরুমে ভাল পরিবেশ রাখা সিনিয়রদের দায়িত্ব। নিজেরটা বলতে পারি যে, অনিল কুম্বলে এবং টিমের সিনিয়রদের কারণে আমি খুবই স্বচ্ছন্দ বোধ করছি।’’

ভাবার কারণ নেই, মাঠের বাইরের অভিনবত্বেই শুধু ডুবে রয়েছেন কুম্বলে। মাঠের মধ্যেও কী ভাবে উন্নতিসাধন সম্ভব, তা নিয়েও খাটছেন। যেমন দ্বিতীয় প্র্যাকটিস ম্যাচে তৃতীয় দিনের খেলা ঘণ্টাখানেক আগে শেষ করে দেওয়ায়, কুম্বলেকে দেখা গেল আম্পায়ারের ভূমিকায় অবতীর্ণ। খেলা শেষ হতে না হতে পিচে নেট টাঙিয়ে দেওয়া হল। ইশান্ত শর্মা, ভুবনেশ্বর কুমার, উমেশ যাদব এবং রোহিত শর্মা— যাঁরা দ্বিতীয় প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলেননি, তাঁরা নেটে নেমে পড়লেন সোজা। মুরলী বিজয়কেও দেখা গেল নামতে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কুম্বলে। পুরো আম্পায়ারের কায়দায় দাঁড়িয়ে থেকে আগাগোড়া সব দেখে গেলেন, ব্যাটসম্যান-বোলারের সঙ্গে কথা বললেন, টিপসও দিলেন প্রয়োজন মতো। দ্রষ্টব্য এখন শুধু একটাই। আর দিন চারেকের মধ্যে শুরু হতে চলা প্রথম টেস্টে ‘জাম্বো থেরাপি’ কতটা কাজে দেয়।

প্রস্তুতি ম্যাচ ড্র

বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশের বিরুদ্ধে ভারতের দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচ ড্র হল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৮০-র জবাবে ভারত প্রথম ইনিসে তুলেছিল ৩৬৪। দ্বিতীয় ইনিংস বিরাট কোহালিদের প্রতিপক্ষ শেষ করে ২২৩-৬ স্কোরে। এ দিন ভারতীয় বোলাররা পাঁচ উইকেটের বেশি ফেলতে পারেননি। অশ্বিন দ্বিতীয় ইনিংসে নিলেন তিন উইকেট। একটি করে উইকেট মহম্মদ শামি ও রবীন্দ্র জাডেজার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন