সুনীলদের মতো সস্মিতারাও সাফ চ্যাম্পিয়ন

মেয়ের জন্মদিনে ট্রফি উপহার কোচের

অনবদ্য সস্মিতা মালিক। অসাধারণ ভারতের মহিলা ফুটবল দল। নব্বই মিনিটই বালা, কমলা, ইন্দুমতীদের আক্রমণাত্মক ফুটবলের সামনে দিশাহারা বাংলাদেশ।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:৩২
Share:

ট্রফি নিয়ে শুরু উৎসব।-বিশ্বরূপ বসাক

ভারত - ৩ : বাংলাদেশ - ১

Advertisement

(ডংমেই, সস্মিতা-পেনাল্টি, ইন্দুমতী) (সিরাত জাহান)

অনবদ্য সস্মিতা মালিক। অসাধারণ ভারতের মহিলা ফুটবল দল। নব্বই মিনিটই বালা, কমলা, ইন্দুমতীদের আক্রমণাত্মক ফুটবলের সামনে দিশাহারা বাংলাদেশ।

Advertisement

নিট ফল— মেয়েদের সাফ ফুটবলে চারে চার! চার বারের টুর্নামেন্টে প্রতি বার চ্যাম্পিয়ন ভারত। এ দিনের পর ভারতের ছেলে-মেয়ে উভয় দলই সাফ ফুটবলে সেরা।

ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়নের মেডেল গলায় আবেগে চোখে জল ভারতের কোচ সাজিদ ইউসুফ দারের। এবং তিনিই দিলেন একটা অন্য তথ্য। এ দিনের ম্যাচ জিতে মেয়েদের আন্তর্জাতিক ফুটবলে টানা ১৯ ম্যাচ অপরাজিত ভারত। যার ১৮টাই জয়।

কাশ্মীরের বাসিন্দা সাজিদের মেয়ে আমন ফতেমার জন্মদিন ছিল বুধবারই। মেয়েদের জাতীয় কোচ ফাইনাল শেষে আবেগী গলায় বললেন ‘‘সস্মিতাদেরই আজ আমন ভেবে আশীর্বাদ করেছি। ওদের নিয়েই আজ আমার মেয়ের জন্মদিন আর সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সেলিব্রেশন করব একসঙ্গে।’’

ফাইনালের ১২ মিনিটের মধ্যেই ভারতকে এগিয়ে দিয়েছিলেন ডংমেই গ্রেস। কিন্তু সেই লিড ধরে রাখা সম্ভব হয়নি নিজেদের রক্ষণের ব্যর্থতায়। প্রথমার্ধের একদম শেষ দিকে বাংলাদেশকে সমতায় ফেরান সিরাত জাহান স্বপ্না। হাফটাইমে ম্যাচ ১-১। আর তাতে চাপে পড়ে গিয়েছিল যেন ভারতই। তাই বিরতির পর বিপক্ষ গোলের কাছে বারবার গিয়েও খেই হারিয়ে ফেলছিলেন কমলারা। শেষমেশ দ্বিতীয়ার্ধে ৬২ মিনিটে পেনাল্টি পায় ভারত। বক্সের মধ্যে কমলা দেবীকে ফাউল করেছিলেন বাংলাদেশ ডিফেন্ডার নার্গিস খাতুন।

কিন্তু সেই পেনাল্টি কে নেবেন তা নিয়েও তৈরি হয় নাটকীয় মুহূর্ত। সস্মিতা মালিককে পেনাল্টি নিতে বলা হলে তিনি ইন্দুমতীকে তা মারতে বলেন। হয়তো ফাইনালের টেনশনেই। শেষ পর্যন্ত কমলা এসে সস্মিতাকে বলেন, মাথা ঠান্ডা রেখে পেনাল্টি মারতে। সস্মিতাই নেন পেনাল্টি। এবং বাংলাদেশ গোলকিপার সাবিনা খাতুনের বাঁ দিকে আলতো প্লেসিংয়ে ভারতকে ২-১ এগিয়ে দেন। তার পাঁচ মিনিট পরেই ভারতের তৃতীয় গোল বাংলাদেশের লড়াইয়ের যাবতীয় জোশ যেন ব্লটিং পেপারের মতো শুষে নেয়। পেনাল্টি বক্সের অনেক দূর থেকে বাংলাদেশ গোল লক্ষ্য করে বলটা স্কুপ করে দিয়েছিলেন ইন্দুমতী। কিপার সাবিনা বলের ফ্লাইট বুঝতে না পেরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁর কিছুটা সামনে বল পড়ে মাথার উপর দিয়ে গোলে ঢুকে যায়।

ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানি অবশ্য ভারতের পেনাল্টি নিয়ে অভিযোগ করেন। তাঁর দাবি, ‘‘রেফারি সঠিক সিদ্ধান্ত নেননি। ওটা পেনাল্টি নয়। বিতর্কিত ওই সিদ্ধান্তই আমাদের লড়াই করার মানসিকতা শেষ করে দিল।’’

সস্মিতা স্বীকার করলেন, পেনাল্টি নিতে তিনি ইতস্তত করছিলেন। তবে সেটা এত বড় ম্যাচের চাপেই। তাঁর কথায় ‘‘এই জয় দেশকে উৎসর্গ করছি। পেনাল্টি মারার আগে একটু ভয় হচ্ছিল। কারণ তখন ওই কিকের উপরই আমাদের সব কিছু নির্ভর করছিল। পরে টিমের সবাই সাহস জোগাতে পেনাল্টি মারতে যাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন