ইডেনের অবাক করা পিচে বুধবার সারা দিনে পড়ল কুড়ি উইকেট।
সারা দিনে ৫২.৪ ওভারে উঠল ২০৮ রান।
লাফিয়ে ওঠা বলে হাতে চোট পেলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি।
যার পরে বিতর্ক উঠে গেল ইডেনের বাইশ গজ নিয়ে। পুণের পিচ অতিরিক্ত ঘূর্ণি হওয়ায় যেমন বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তেমন ইডেনের বাইশ গজে খলনায়ক হিসেবে উঠে এল অসমান বাউন্স।
যেখানে ঝাড়খণ্ড ১২৫ রানে অল আউট হওয়ার পর সৌরাষ্ট্রও ৮৩ রানে শেষ। ঝাড়খণ্ড ৪২ রানে ম্যাচ জিতলে কী হবে, দলের কোচ, ক্রিকেটাররা উইকেটের তীব্র সমালোচনা করতে করতে ইডেন ছাড়লেন বিকেলে। ইশাঙ্ক জাগ্গি বলেন, ‘‘ইয়ে মহা বেকার উইকেট হ্যায়।’’ ঝাড়খণ্ড কোচ রাজীব কুমারের বক্তব্য, ‘‘এমন উইকেট ওয়ান ডে ক্রিকেটের পক্ষে খারাপ বিজ্ঞাপন। এমন উইকেটে রান তোলা যায় নাকি?’’
ম্যাচের শেষে ধোনি ইডেনের কিউরেটরকে একহাত নিলেন। যা তাঁকে সাধারণত করতে দেখা যায় না। ব্যাট করতে গিয়ে পিচের অসমান বাউন্সের জন্য হঠাৎ উঠে আসা বলে ডানহাতে চোট পান তিনি। এর পর মাঝে মাঝেই তাঁকে গ্লাভস খুলে হাতে ফুঁ দিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ব্যাটিংয়ের সময় যথেষ্ট অস্বস্তিতে দেখা গিয়েছে ঝাড়খণ্ড অধিনায়ককে।
আরও পড়ুন: পুরস্কার মঞ্চে কর্তারা ব্রাত্য, বয়কটের ধ্বনি
প্রাক্তন সিএবি যুগ্মসচিব সুজন মুখোপাধ্যায় ইডেন উইকেটের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এই মাঠের কোনও উইকেট এমন আচরণ করেনি, যা এ দিন করল।
কেন এমন হল?
সুজনের ব্যাখ্যা, ‘‘মঙ্গলবার আমি শহরে ছিলাম না। আইপিএল ওয়ার্কশপ করতে মুম্বই গিয়েছিলাম। মনে হচ্ছে একটু বেশিই জল দিয়ে ফেলেছে মাঠকর্মীরা। আর পিচ ঠিকমতো শুকনো হওয়ার আগেই ঢাকা দিয়ে দিয়েছে। অস্বীকার করার উপায় নেই, এই উইকেটটা আমারও মনের মতো হয়নি। আর্দ্রতা বেশি ছিল। তাই বলের সিম মুভমেন্ট বেশি হচ্ছিল। আমি নিজেই দেখে অবাক হয়ে গিয়েছি।’’
খেলার শেষে মাঠের ধারে কিউরেটরের কাছে ছুটে যান ধোনি। দূর থেকে দেখে মনে হল হাত-পা নেড়ে অনেকক্ষণ ধরে তাঁকে অনেক কথা বলেন ঝাড়খণ্ড অধিনায়ক। উইকেট যতই অপছন্দের হোক, কিউরেটরদের সঙ্গে এতক্ষণ ধরে কথা বলতে দেখা যায় না তাঁকে।
কী বললেন ধোনি তাঁকে?
সুজনের বক্তব্য, ‘‘পিচ নিয়ে ও অভিযোগ করে। আমিও ওকে বোঝানোর চেষ্টা করি কেন গোলমাল হয়েছে। ও সেটা বুঝেছে বলেই মনে হল।’’
সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ইডেনে সারা দিন ধরে ঘটে যাওয়া এইসব ঘটনা কিছুই জানতেন না বলে জানান। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘ওরা যখন জিতেছে, তা হলে পিচ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে কেন?’’
বুধবার অবশ্য ঝাড়খণ্ড-সৌরাষ্ট্র ম্যাচের চেয়ে আলোচনায় বেশি চলে আসে ধোনির হাতে চোট লাগার ঘটনা। সৌরাষ্ট্রের মিডিয়াম পেসার শৌর্য সানন্দিয়ার একটা বল হঠাৎ লাফিয়ে উঠে সোজা ধোনির ডান হাতে এসে লাগে। অবশ্য তাঁর চোট গুরুতর হয়নি বলেই জানান ঝাড়খণ্ড কোচ। দলের স্কোর ৭৫-৪ হয়ে যাওয়ার পরে ধোনি নামেন। একটা চার ও একটা ছয়-সহ ২৪ বলে ২৩ রানের বেশি তুলতে পারেননি। ঈশান কিষাণ ৫৩ ও ইশাঙ্ক জাগ্গি ১২ রান করেন। বাকি সাত ব্যাটসম্যানেরই এক অঙ্কের রান।
দু’দলের পেসাররা মিলে কুড়িটা উইকেটই তুলেছেন। বরুণ অ্যারনকে দিয়ে একই স্পেলে টানা দশ ওভার বল করান ধোনি। চার উইকেট তুলে নেন তিনি। রাহুল শুক্লও চার উইকেট নেন।