আক্রান্ত: রবিন বিশ্বাসের চোখে এখনও ব্যান্ডেজ। ফাইল চিত্র
চুয়াল্লিশ বছর আগের স্মৃতি হঠাৎ যেন ফিরে এল কলকাতা ফুটবলে!
১৯৭৩-এর কলকাতা লিগের ডার্বিতে রেফারি বিশ্বনাথ দত্তকে চোখে ঘুষি মেরেছিলেন মোহনবাগানের সুকল্যাণ ঘোষ দস্তিদার। চোট এতটাই গুরুতর ছিল যে, পরে আর বাঁশি মুখে মাঠে নামতে পারেননি বিশ্বনাথবাবু।
সোমবার আই এফ এ লিগ সাব কমিটির সভায় সে রকম আশঙ্কাই প্রকাশ করে গেলেন প্রথম ডিভিশনের তালতলা দীপ্তি ও ডালহৌসি ম্যাচে আক্রান্ত রেফারি রবিন বিশ্বাস। ডালহৌসির তিন ফুটবলারের প্রহারে চোখে আঘাত পেয়েছিলেন রবিন। রক্ত ঝরেছিল। এখনও ব্যান্ডেজ বাঁধা। চোখ ঝাঁপসা। এই অবস্থায় এ দিন রাজ্য ফুটবল সংস্থার অফিসে এসে রবিন বলেন, ‘‘আমার চোখের যা অবস্থা তাতে আর কোনও দিন হয়তো রেফারিং করতে পারব না। দোষীদের কড়া শাস্তি হোক।’’ রাতে বনগাঁর বাড়ি থেকে ফোনে বেকার রবিন বললেন, ‘‘আমি গত বছর জাতীয় রেফারি হয়েছি। আমার চাকরি নেই। রেফারিং করে যা পাই, তাতেই চলে। এখন আমার কী হবে সেটাই বলেছি সভায়। কাল (মঙ্গলবার) আবার হাসপাতালে যাব। এখনও চোখে ভাল করে দেখতে পাচ্ছি না।’’
রেফারির বক্তব্য এবং সে দিনের আক্রমণের ক্লিপিংস দেখার পর অভিযুক্ত ডালহৌসির তিন ফুটবলার রানা মুখোপাধ্যায়, বিরা ওরাঁও এবং ভিনসেন্ট বিবেক দাশ-কে তিন বছর সাসপেন্ড করল আই এফ এ। আর ডালহৌসি ক্লাবকে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ওই টাকা দেওয়া হবে প্রহৃত রেফারিকে। আই এফ এ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, ‘‘আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে চেয়েছিলাম। সেটা দিয়েছি।’’
কিন্তু কেন আজীবন নির্বাসন দেওয়া হল না? আইএফএ সচিবের দাবি, ‘‘আমরা আরও শাস্তি দিতে পারতাম। পাঁচ বছর বা দশ বছর। কিন্তু সেটা দিইনি কারণ ফুটবল কেড়ে নিতে চাইনি ওদের পা থেকে।’’ রেফারি রবিনের দৃষ্টি কেড়ে নিতে চাওয়া আক্রমণকারীদের জন্য এই ‘সহানুভূতি’ কেন, প্রশ্ন থেকেই গেল।
এ দিকে শিলিগুড়িতে কলকাতা ডার্বির গন্ডগোল নিয়ে আইএফএ-র সভা পিছিয়ে গেল। তা হবে ১৩ নভেম্বর।