প্র্যাক্টিসে নেই রাসেল, তৈরি রাখা হচ্ছে ব্রাথওয়েটকে

আট ম্যাচের মধ্যে কেকেআর যে চার ম্যাচ জিতেছে, প্রত্যেকটিতেই আন্দ্রে রাসেলের অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু বুধবার অনুশীলনের শেষ দিকে নেট বোলারের বাউন্সার আছড়ে পড়ে জামাইকান অলরাউন্ডারের কাঁধে।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:৪২
Share:

আলোচনা: অনুশীলনের ফাঁকে কালিসের সঙ্গে নারাইন। নিজস্ব চিত্র

টানা তিন ম্যাচ হেরে লিগ তালিকার শীর্ষ থেকে ছয় নম্বরে নেমে গিয়েছে কেকেআর। প্লে-অফের দৌড়ে টিকে থাকার জন্য আজ, শুক্রবার ইডেনে আরসিবি-কে হারানো গুরুত্বপূর্ণ দীনেশ কার্তিকের দলের। কিন্তু কার উপর নির্ভর করে বিরাট কোহালিদের হারাবেন নাইট অধিনায়ক? তাঁর দলের সেরা অস্ত্রই যে অনিশ্চিত।

Advertisement

আট ম্যাচের মধ্যে কেকেআর যে চার ম্যাচ জিতেছে, প্রত্যেকটিতেই আন্দ্রে রাসেলের অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু বুধবার অনুশীলনের শেষ দিকে নেট বোলারের বাউন্সার আছড়ে পড়ে জামাইকান অলরাউন্ডারের কাঁধে।

প্রাথমিক এক্স-রে রিপোর্ট অনুযায়ী তাঁর বাঁ কাঁধের হাড় ভাঙেনি, অথবা চিড়ও ধরেনি। কিন্তু যথেষ্ট ব্যথা ও ফোলা ভাব রয়েছে। কার্তিক তো বলেই দিলেন, ‘‘আরও ২৪ ঘণ্টা না কাটলে কিছু বলা যাবে না। কালই বুঝতে পারব ও কোন অবস্থায় রয়েছে। তবে দলগঠনের পরিকল্পনায় রাসেল রয়েছে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: আরসিবির মাস্ট উইন ম্যাচে কেমন হতে পারে নাইটদের প্রথম একাদশ?

পরিকল্পনার মধ্যে রাখা হলেও রাসেল যে সুস্থ হননি, তা বুঝিয়ে দিলেন অধিনায়ক। এ দিন অনুশীলনেও আসেননি রাসেল। জামাইকান অলরাউন্ডারের চোটের কথা মাথায় রেখেই কার্লোস ব্রাথওয়েটকে তৈরি রাখছে কেকেআর। বৃহস্পতিবার ম্যাচের আগের দিন মাঠে নেমেই ব্যাট করতে শুরু করে দেন ব্রাথওয়েট। এত দিন অনুশীলনে এসে শুরুতেই বল করতেন তিনি। কিন্তু এ দিন ঠিক তার উল্টোটা করে গেলেন। এমনকি, এক বারের বেশি ব্যাট করলেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের অলরাউন্ডার। হাব ভাব দেখে বোঝা গেল, একান্তই যদি রাসেল খেলতে না পারেন, সে ক্ষেত্রে ব্রাথওয়েটই

তাঁর পরিবর্ত।

রাসেলের মতোই পেসার-অলরাউন্ডার ব্রাথওয়েট। কিন্তু জামাইকান অলরাউন্ডারের মতো বলে গতি নেই তাঁর। ব্যাটিংও সেই পর্যায়ে করতে পারেন না। কিন্তু রাসেলের মতোই, হয়তো তার চেয়েও বেশি শক্তি রয়েছে ব্রাথওয়েটের। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে শেষ ওভারে বেন স্টোকসকে মারা তাঁর চার ছক্কা আজও তরতাজা ক্রিকেট প্রেমীদের ‘হার্ড ডিস্কে’।

ব্রাথওয়েটের মতোই নেটে দু’বার ব্যাট করলেন কার্তিক। আট ম্যাচে এখনও পর্যন্ত একটি হাফসেঞ্চুরি রয়েছে তাঁর। নিজের ছন্দ ফিরিয়ে আনার জন্যই হয়তো নেটে অতিরিক্ত সময় দিচ্ছেন অধিনায়ক। কেকেআরে রাসেল-নির্ভরতা কমানোর অন্যতম উপায়, কার্তিকের ব্যাটে রান। কিন্তু ইডেনের গতিময় পিচে ডেল স্টেন, নবদীপ সাইনিকে তিনি কী ভাবে সামলান, সেটাই দেখার।

ড্রেসিংরুমের ডান প্রান্তে কেকেআর অনুশীলন করলেও ক্লাব হাউসে উপস্থিত দর্শকের নজর ছিল বাঁ দিকে। সেখানেই অনুশীলন করছিল বিরাট কোহালির দল। মাঠে নেমে ফুটবল খেলে গা ঘামানোর পরে দু’টি নতুন ব্যাট নিয়ে নেটে ঢুকলেন বিরাট। কিছুক্ষণ নকিং করেই ফিরে গেলেন ড্রেসিংরুমে। সে পথে যাওয়ার সময়েই কোহালির নজর কাড়লেন ওড়িশার পিন্টু বেহরা। সারা গায়ে বিরাটের ট্যাটু। এমনকি পিছনে বিরাটের জার্সি নম্বরের ট্যাটুও রয়েছে। পিন্টুর দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসেই ড্রেসিংরুমে ঢুকে গেলেন ভারত অধিনায়ক। পিন্টু বলছিলেন, ‘‘এক লক্ষ টাকা খরচ করে সারা গায়ে বিরাটের ট্যাটু করেছি। আমার দিকে তাকিয়ে ও যে হেসেছে, এটাই অনেক বড় প্রাপ্তি। শুধুমাত্র এই ম্যাচটি দেখার জন্যই ওড়িশা থেকে এসেছি। বিরাটের হাসি মুখ দেখে বাড়ি ফিরতে পারব।’’

আরসিবি-র অন্যতম আকর্ষণ এবি ডিভিলিয়ার্স যদিও এ দিন অনুশীলনে আসেননি। আরসিবি সূত্রে খবর, এবি অসুস্থ। শুক্রবারের কথা ভেবে তাঁকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। বিরাটদের কাছে শুক্রবারের এই ম্যাচ যেন মরণ-বাঁচন লড়াই। ছয় ম্যাচের মধ্যে প্রত্যেকটি জিততে পারলে প্লে-অফে যাওয়ার ক্ষীণ আশা থাকবে। কিন্তু হারলে, প্রতিযোগিতার বাকি ম্যাচগুলো নিয়মরক্ষার হয়ে দাঁড়াবে। তাই সব দিক থেকে তৈরি থাকছে আরসিবি। ইডেনের বাইশ গজের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য এ দিন অভিনব অনুশীলন করালেন কোচ গ্যারি কার্স্টেন। টেনিসে সার্ভ করার ভঙ্গিতে র‌্যাকেট দিয়ে বল মারছেন। সেই বাউন্সারের বিরুদ্ধে মোকাবিলা করতে হচ্ছে মার্কাস স্টোয়নিস, মইন আলিদের। কেকেআর শিবিরে বিষাক্ত পেসার না থাকলেও ইডেনের পিচ থেকে সুবিধা পাবেন যে কোনও পেসার। তাই প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, হ্যারি গার্নিদের সামলানোর প্রস্তুতি নিয়ে রাখলেন স্টোয়নিসরা।

কেকেআর শিবিরেও অভিনব প্রস্তুতির মহড়া। ব্যাটসম্যানদের পপিং ক্রিজের স্টাম্পের সঙ্গে বোলারদের স্টাম্প দড়ি দিয়ে বেঁধে দেওয়া হল। দুই উইকেটের মাঝে যে জায়গা তৈরি হল তাতে বল করে গেলেন সুনীল নারাইন, হ্যারি গার্নি। উইকেটের সোজাসুজি বল করার জন্যই এ ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কিন্তু উইকেটের সোজাসুজি বল করে বিরাট বা এবিকে কি আটকে রাখা যাবে? একজন উইকেটের ভিতরে আসা বল অনায়াসে ফ্লিক করে দেন। অন্য জন তো মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন