মহড়া: মোহালিতে অনুশীলনের আগে কোহালি। আজ তাঁর মুখে কি দেখা যাবে এই হাসি, সেটাই দেখার। টুইটার
টানা ছয় ম্যাচে হার। বিরট কোহালির মতো ক্রিকেটারের পক্ষে এই টানা ব্যর্থতা সহ্য করা আদৌ কি সম্ভব? তার চেয়েও বড় প্রশ্ন, আইপিএলে তাঁর দলের এই ধারাবাহিক হারের প্রভাব বিশ্বকাপে তাঁর পারফম্যান্সেও প্রভাব ফেলবে না তো? সেই জরুরি প্রশ্ন নিয়েই উত্তাল ভারতীয় ক্রিকেটমহল।
অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন তারকা ব্র্যাড হগ অবশ্য সেই আশঙ্কা খারিজ করে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, কোহালি যে প্রজাতির ক্রিকেটার তাতে চলতি আইপিএলে তাঁর দলের ব্যর্থতার বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়বে না কোহালির উপরে। পুরনো মেজাজেই ভারত অধিনায়ককে দেখা যাবে। তিনি বলেছেন, ‘‘এই চিন্তা অমূলক বলেই মনে করি আমি। আইপিএলে কী হয়েছে, তার কোনও প্রভাবই ওর উপর পড়বে না। বিশ্বকাপে বিরাটকে ক্রিকেটপ্রেমীরা পরিচিত মেজাজেই দেখতে পাবেন।’’
তবে এটাও ঠিক, চলতি আইপিএলে ব্যাটসম্যান কোহালিকে এখনও আগ্রাসী মেজাজে দেখাও যায়নি। এখনও পর্যন্ত ছয় ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর দলের অধিনায়কের মোট রান ২০৩। সর্বোচ্চ রান ৮৪। রানের গড় ৩৮. ১৫। স্ট্রাইক রেট ১৩০.৫৭। অনেকেই মনে করছেন, দলের টানা হারের প্রভাব কোহালির ব্যাটিংয়েও থাবা বসিয়েছে। যার ফলে টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটের ক্রিকেটে কোহালিকে আগে যেরকম সংহারক মেজাজে দেখা যেত, সেই ছবিটাই এ বার বিরল হয়ে পড়েছে। কেকেআরের প্রাক্তন চায়নাম্যান স্পিনার বলেছেন, ‘‘আমি কোনও অবস্থাতেই ব্যাটসম্যান বিরাটকে নিয়ে আতঙ্কের কারণ দেখতে পাচ্ছি না। ও ক্রিকেট নিয়ে যে গভীর চিন্তাভাবনা করে এবং যে দর্শন নিয়ে ক্রিকেট খেলে, সেখানে ওকে নিয়ে নেতিবাচক কিছু চিন্তাই করা যায় না। আমি ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের আশ্বস্ত করতে পারি, বিশ্বকাপে কোহালিকে আপনারা আগের মতোই আগ্রাসী মেজাজে দেখতে পাবেন। আইপিএলের ফল দিয়ে বিরাটকে বিশ্লেষণ করতে গেলে ঠকতে হবে।’’
আজ, শনিবার মোহালিতে আবার নতুন পরীক্ষায় নামতে চলেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। প্রতিপক্ষ হিসেবে থাকবে আর অশ্বিনের কিংস ইলেভেন পঞ্জাব। প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় তারকা জানিয়ে দিয়েছেন, মাত্র দু’এক জন ক্রিকেটারের উপর নির্ভর করে ম্যাচ খেলতে নামলে পরিণতি ভয়ঙ্কর হবেই। সেটা আবারও হয়েছে আরসিবির ক্ষেত্রে। হগ বলেছেন, ‘‘গোটা দলটাই তো দুই ক্রিকেটারের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। সকলেই মনে করছে প্রত্যেক ম্যাচে কোহালি এবং এ বি ডিভিলিয়ার্স রান করে দেবে। সেটা ভাবলে চলে না কি? অতিরিক্ত কোহালি এবং এবি নির্ভরতাই বড় কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জানি না, টিম ম্যানেজমেন্ট অথবা আরসিবি ফ্র্যাঞ্চাইজি আধিকারিকরা বিষয়টি নিয়ে কেন আলোচনায় বসার প্রয়োজন অনুভব করছেন না। বিশদে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে বিশ্লেষণ করে বিকল্প ভাবনার পথে হাঁটতে হবে। না হলে আরসিবি-র এই বিবর্ণ ছবিতে পরিবর্তন আসবে না।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত ছয়টি ম্যাচে আরসিবির মাঝের সারির ব্যাটসম্যানেরা কিছুই করতে পারেনি। এটা তো কোনও অবস্থাতেই কাঙ্ক্ষিত নয়। সমস্ত ম্যাচে তো কোহালি অথবা ডিভিলিয়ার্স রান পাবে না। তা হলে সেই সময়ে সাহস নিয়ে প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করবে কে? এই আরসিবি দলের ব্যাটিং লাইন-আপই ম্যাচ জেতার জন্য কার্যকরী নয়।’’
শুধু তাই নয়। হগ মনে করেন, আরসিবি বোলিংও অত্যন্ত অপরিণত এবং ছন্নছাড়া। হগ বলেছেন, ‘‘ডেথ ওভারে আরসিবি বোলারদের পারফম্যান্স দেখে বিরক্ত। পরিকল্পনা নেই। এ ভাবে একটা দল কোনও ম্যাচ জিততে পারে না। আরসিবি কর্তাদের ভাবনায় পরিবর্তন আনতেই হবে।’’