সৌজন্য: হেরে গেলেও রোহিত শর্মাকে অভিনন্দন জানাতে ভুললেন না নাইট তারকা আন্দ্রে রাসেল। পিটিআই
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের শিমরন হেটমায়ার প্লেটে করে প্লে-অফ খেলার একটা সুযোগ তুলে দিয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্সের হাতে। কিন্তু সেই সুযোগটা রবিবার ছুড়ে ফেলে দিল কেকেআর। ওয়াংখেড়েতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছে নয় উইকেটে হেরে বিদায় নিল এ বারের আইপিএল থেকে। ভাল নেট রানরেট থাকার সুবাদে চতুর্থ দল হিসেবে প্লে-অফে চলে গেল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।
কেকেআরের এই বিশ্রী হারের পিছনে কয়েকটা কারণ উঠে আসছে। এক, রাসেলের ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে গোঁয়ার্তুমি। দুই, স্কুলের বাচ্চাদের মতো অধিনায়কত্ব। তিন, ভুল ব্যাটিং অর্ডার। চার, ভুল দল নির্বাচন। পাঁচ, মুম্বইয়ের মাঠে মুম্বইকে দেখলেই ঘাবড়ে যাওয়া।
আইপিএলের ধারাভাষ্যের কাজে আমি এখন মুম্বইয়ে। এখানে কুমার সঙ্গকারার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। সঙ্গা জানতে চাইছিল, কেকেআর এত ব্যাটিং অর্ডার পাল্টায় কেন? উত্তরটা আমিও খুঁজে পাইনি। এই রাসেল মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে ইডেনে তিন নম্বরে নেমে জিতিয়ে দিয়েছিল। সেই রাসেলকে এ রকম একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কি না নামানো হল পাঁচে! দেখে মনে হচ্ছে, কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্ট ঠিক করে উঠতে পারল না, রাসেলকে ক’টা বল খেলতে দেবে। এ দিন অধিনায়ক দীনেশ কার্তিকের আর একটা মারাত্মক ভুল সিদ্ধান্ত ছিল খারাপ ফর্মে থাকা রবিন উথাপ্পাকে ফের তিন নম্বরে নামানো। ক্রিস লিন শুরুটা ভাল করেছিল। কিন্তু শুভমন গিল আউট হওয়ার পরে উথাপ্পা নেমে পুরো ছন্দটা নষ্ট করে দেয়। তিনে নামা ব্যাটসম্যান শেষ ওভারে আউট হচ্ছে ৪৭ বলে ৪০ করে! উথাপ্পা নামার পরে একটা সময় পাণ্ড্য ভাইয়েরা— হার্দিক এবং ক্রুণাল মিলে পাঁচ ওভারে ১৪ রান দিয়ে দুই উইকেট নেয়। ওখানেই নাইটদের ব্যাটিং লাইনচ্যুত হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: নেতৃত্বে গলদ না দল পরিবর্তনে ভুল, নাইটদের জঘন্যতম হারের কারণ কী?
এই ‘নক-আউট’ ম্যাচে কেকেআরের দল নির্বাচনও অবাক করার মতো। কুলদীপ যাদবের মতো স্পিনারকে বাইরে রেখে নামল। কুলদীপ যতই খারাপ ফর্মে থাকুক, ও উইকেট নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। টিম লিস্টে আর একটা নাম দেখে হাঁ হয়ে গিয়েছি। রিঙ্কু সিংহ! রিঙ্কু কী করে, তা বোধ হয় নাইটদের অন্ধ ভক্তও বলতে পারবে না। কেকেআরে কোচ আছে, সহকারী কোচ আছে, মেন্টর আছে। সব মিলিয়ে প্রায় এক ডজন সাপোর্ট স্টাফ আছে। কিন্তু বাইশ গজে কাজের কাজ করার লোক খুব কম।
কেকেআর ১৩৩ করার পরে ম্যাচটা শেষ হয়ে গিয়েছিল। ২৩ বল বাকি থাকতে, নয় উইকেটে জেতার পাশাপাশি রোহিত শর্মা ব্যাটিং প্র্যাক্টিসও সেরে নিল। মুম্বইয়ে এসে মুম্বইকে খেলতে গেলেই নাইটরা যেন কেঁপে যায়। না হলে রবিবারের আগে মুম্বইয়ের মাঠে ১০ ম্যাচে ন’টি হারে কোনও দল!
রাসেলের জন্য এ দিন নিখুঁত পরিকল্পনা করে নেমেছিল মুম্বই। শুরুতেই শরীর লক্ষ্য করে আক্রমণ। রাউন্ড দ্য উইকেটে এসে রাসেলকে প্রথম বলটাই বাউন্সার দিয়েছিল মালিঙ্গা। কিন্তু বলটা ওয়াইড হয়। পরের বলটা আবার শর্ট। বলটা বুক সমান উচ্চতায় উঠে ছোবল মারল। রাসেল মাথাটা সরাতে পারলেও গ্লাভস ছুঁয়ে বল উইকেটকিপার কুইন্টন ডি’ককের হাতে চলে গেল।
কেকেআর বোধ হয় মানসিক ভাবে ওখানেই ম্যাচটা হেরে যায়!