সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে শেষ ওভারে হারিয়ে আইপিএলের চলতি মরশুমের দ্বিতীয় এলিমিনেটারে পৌঁছে গেল দিল্লি ক্যাপিটালস। কঠিন পিচে মানসিক দৃঢ়তা দেখিয়ে দুর্দান্ত জয় ছিনিয়ে নিলেন পন্থরা। জেতা ম্যাচ মাঠে ফেলে আসা থেকে কঠিন ম্যাচ জেতা— এ যেন বদলে যাওয়া দিল্লি। কী ভাবে এতটা পাল্টে গেল দিল্লি? মেন্টর সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় মানসিক দৃঢ়তাই কি এর অন্যতম কারণ?
বিশাখাপত্তনমের এই পিচটায় বল একটু পুরনো হয়ে গেলে রান তোলা কঠিন ছিল, কিন্তু দিল্লি সেই কঠিন কাজটাই সহজ করে দিল।
এই ম্যাচে দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন, সেই সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল না, তা প্রমাণ করলেন দাদার মেন্টরশিপে থাকা ক্রিকেটাররা।
দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে কিমো পল সবচেয়ে বেশি ৩ উইকেট নেন। তাঁর বোলিং জয়ের একটা বড় কারণ।
অমিত মিশ্র ৪ ওভারে ১৬ রান দিয়ে এক উইকেট নেন। প্রবীণ অমিত যেন এই মরসুমে একেবারে বদলে যাওয়া বোলার। ইশান্ত শর্মাও ২ উইকেট পান।
১৬৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দিল্লি কী রকম শুরু করে, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পৃথ্বী শ এবং শিখর ধওয়ন প্রথম থেকেই ভাল রান রেট রেখে দিয়েছিলেন।
পৃথ্বী দুর্দান্ত ছন্দে ছিলেন। খলিল আহমেদের তৃতীয় ওভারে ১৭ রান তুলে অনেকটাই এগিয়ে দন দলকে। পৃথ্বী শ নিজের আইপিএল কেরিয়ারের চতুর্থ অর্ধ শতকটি করে ফেললেন এই ম্যাচেই। ৩৮ বলে ৫৬ রান করেন ওপেনার পৃথ্বী।
১০ ওভারে দিল্লি ক্যাপিটালস ১ উইকেটে ৮৩ রান করে ফেলে। প্রথম দিকে এই রান তুলে নেওয়াটা খুব জরুরি ছিল। ফলে পরের দিকে কঠিন উইকেটে রশিদরা দুর্দান্ত কামব্যাক করলেও ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায়নি সৌরভের ছেলেরা।
শ্রেয়স আর পৃথ্বী আউট হয়ে গেলেও জয়ের অন্যতম নায়ক ঋষভ পন্থ। কলিন মুনরো আর অক্ষর পটেলকে রশিদ খান ফিরিয়ে দিলেও ক্রিজে রয়ে গিয়েছিলেন পন্থ।
দিল্লির জয়ের জন্য ৩ ওভারে ৩৪ রানের প্রয়োজন ছিল কিন্তু ১৮তম ওভারের প্রথম ৪ বলে ঋষভ পন্থ ২০ রান করে ম্যাচ দিল্লির দিকে ঘুরিয়ে দেন।
বাসিল থাম্পির করা ১৮ নম্বর ওভারের প্রথম চারটে বলে দুটো ছয়, দুটো চার মেরে ম্যাচটা ঘুরিয়ে দেয় ওই ঋষভই (২১ বলে ৪৯, দুটো চার, পাঁচটা ছয়)।
কেন উইলিয়ামসন এ দিন একটা বড় ভুল করে ফেলেন। ইনিংসের ১৮তম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ওভার বাসিল থাম্পিকে দেওয়া উচিত হয়নি তাঁর। ২২ রান দেন থাম্পি। বরং ২ ওভার বাকি থাকা খলিল আহমেদকে বল দিলে ম্যাচের ফল হয়ত অন্যরকম হত।
২০১২ সালের পরে দিল্লি ক্যাপিটালস আবার পৌঁছেছে প্লে অফে। সৌরভের হার না মানা দৃঢ় মনোভাবই দিল্লির ক্রিকেটারদের শরীরী ভাষায় ফুটে উঠছে। বিশেষ করে ঋষভের ভাল খেলার পিছনে দাদার মেন্টরশিপের বড় ভূমিকা রয়েছে, যা জয়ের পথ মসৃণ করছে দিল্লির।