ধোনির মতোই ঠান্ডা মাথায় কাজ সারে কোচ ফ্লেমিং

আইপিএলের এই দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচের আগে ফ্লেমিং বলেছিল, প্রথম ছয় ওভারে রান চাই। শুক্রবার বন্দর-শহরে শেন ওয়াটসন (৩২ বলে ৫০) ও ফ্যাফ ডুপ্লেসিকে  (৩৯ বলে ৫০) শুরুতে ব্যাট করতে পাঠিয়ে সেই কাজটাই করিয়ে নিল ফ্লেমিং।

Advertisement

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৯ ০৩:৫০
Share:

জুটি তে লুটি: শেন ওয়াটসন ও ফ্যাফ ডুপ্লেসি। ছবি পিটিআই।

আইপিএলের শুরু থেকেই দিল্লি ক্যাপিটালসের দুই মস্তিষ্ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও রিকি পন্টিংকে নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। দু’জনেরই ক্রিকেট-বুদ্ধি প্রখর। কিন্তু চেন্নাই সুপার কিংসের কোচ স্টিভন ফ্লেমিংও ক্রিকেটীয় কৌশলে কম যায় না।

Advertisement

আইপিএলের এই দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচের আগে ফ্লেমিং বলেছিল, প্রথম ছয় ওভারে রান চাই। শুক্রবার বন্দর-শহরে শেন ওয়াটসন (৩২ বলে ৫০) ও ফ্যাফ ডুপ্লেসিকে (৩৯ বলে ৫০) শুরুতে ব্যাট করতে পাঠিয়ে সেই কাজটাই করিয়ে নিল ফ্লেমিং। শুধু তাই নয়, দিল্লি ক্যাপিটালসকে ৬ উইকেটে হারিয়ে অষ্টমবার ফাইনালে নিয়ে গেল সিএসকে-কে। শান্ত মাথায় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ও কোচ ফ্লেমিংয়ের যুগলবন্দি হিসাব কষে খেলেই চেন্নাইকে পৌঁছে দিল ফাইনালে।

বিশাখাপত্তনমে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিল সিএসকে। কারণটা অবশ্যই শিশির। শক্ত পিচে বল পড়ে ব্যাটে আসবে। তখন রান তাড়া করার কাজটা সহজ হয়ে যাবে। ম্যাচে ঠিক সেটাই হল। ২০ ওভারে দিল্লির করা ১৪৭-৯ তাড়া করতে নেমে ঠিক সে ভাবেই জয়ের রান তুলে নেয় চেন্নাই।

Advertisement

ওয়াটসনদের জন্য ধোনিদের পরিকল্পনা ছিল, পাওয়ার প্লে-তে উইকেট দেওয়া চলবে না। সে ভাবেই খেলতে দেখলাম ডুপ্লেসি ও ওয়াটসনকে। ওয়াটসন হল ক্রিকেটের সেই বড় মঞ্চের খেলোয়াড়, যে প্রতিযোগিতা যত এগোয়, তত জ্বলে ওঠে। পাওয়ার প্লে-তে উইকেট না হারিয়ে ৪২ রান তোলে চেন্নাইয়ের দুই ওপেনার। আর এখানেই ম্যাচটা থেকে হারিয়ে যাওয়া শুরু দিল্লির। ১২.২ ওভারে যখন ওয়াটসন আউট হয়ে ফিরছে তখন চেন্নাইয়ের রান ১০৯-২। তার পরে কাজটা সহজ হয়ে যায় সুরেশ রায়না-ধোনিদের কাছে।

গুরু-শিষ্যের দ্বৈরথ অর্থাৎ ধোনি ও ঋষভ পন্থের মধ্যে ফাইনালে যাওয়ার লড়াই দেখতে শুক্রবার ভরে গিয়েছিল বিশাখাপত্তনমের মাঠ। সেই ম্যাচে ধোনি দেখিয়ে দিল, শান্ত মাথায় অধিনায়কত্ব করা কাকে বলে। দিল্লির বিরুদ্ধে বুদ্ধি করে ধোনি বোলারদের ব্যবহার করেছে ১৯ ওভার পর্যন্ত। শেষ ওভারে রবীন্দ্র জাডেজাকে (২-২৩) বল করতে ডাকা আমার মতে ঠিক সিদ্ধান্ত নয়। বরং ডাকা উচিত ছিল শার্দূল ঠাকুরকে। কারণ শেষের দিকের ব্যাটসম্যানরা স্পিনারকে সামনে পেলে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। তাই জাডেজার শেষ ওভারে ১৬ রান তোলে ইশান্ত শর্মা ও ট্রেন্ট বোল্ট।

চেন্নাই যতটা অঙ্ক কষে খেলল ততটাই তাড়াহুড়ো করতে দেখলাম দিল্লির ব্যাটসম্যানদের। দীপক চাহারকে তাড়াহুড়ো করে মারতে গিয়ে পৃথ্বী শ (৬ বলে ৫) ফিরল। শিখর ধওয়নও (১৪ বলে ১৮) সামনের পায়ের বল সেই তাড়াহুড়ো করে পিছনের পায়ে লেট কাট করতে গিয়ে ধোনির হাতে ক্যাচ দেয়। দিল্লি অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ারও (১৮ বলে ১৩) দ্রুত রান তুলতে গিয়ে ইমরান তাহিরের (১-২৮) গুগলির ফাঁদে পড়ে আউট।

বেচারা ঋষভ পন্থ! ধোনির এই ক্ষুরধার মস্তিষ্ক ও সতীর্থদের তাড়াহুড়োর জন্যই ম্যাচটায় কোনও সঙ্গী পেল না। তাই বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে মারতে গিয়েছিল শেষ পাঁচ ওভারে। ২৫ বলে ৩৮ করে আউট হয়ে গেল। ওর রানটাই দিল্লির ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ।

সব শেষে বলতে হবে ব্র্যাভোর কথা। চার ওভার বল করে ১৯ রানে ২ উইকেট পেল এই ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার। ধোনি ওকে বার বার বুঝিয়ে দিচ্ছিল কী করতে হবে। ব্যাটসম্যানকে খেলার জায়গা না দিয়ে উইকেট টু উইকেট বল করল ব্র্যাভো। স্লোয়ার ও নাক্‌ল বলও ছিল তার মধ্যে। গতির হেরফের করায় ব্যাটসম্যানরা ওকে মারতে পারেনি। শর্ট বল বা ফুল লেংথ বল করেইনি ও।

এ বার ফের সেই আইপিএলের এল ক্লাসিকো। লিগ পর্বে প্রথম দুই দলের দ্বৈরথ ফাইনালেও। ধুরন্ধর দুই ক্রিকেট অধিনায়কের জমজমাট লড়াই দেখার অপেক্ষায় ক্রিকেট ভক্তরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন