মহড়া: ইডেনে ফুটবলে ব্যস্ত ঋষভ (বাঁ দিকে) ও রাবাডা। নিজস্ব চিত্র
ক্যারিবীয় ক্রিকেট সবসময়ই বিনোদনমূলক, বর্ণময় এবং আকর্ষক। তাই না? আইপিএলে এখনও পর্যন্ত কী দুরন্ত খেলাই না দেখাচ্ছে ক্যারিবিয়ান রাজারা। ক্রিস গেল, কায়রন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেল...এরা সবাই অবিশ্বাস্য ক্রিকেট খেলছে। কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে পোলার্ড তো দুরন্ত খেলল। ওর বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের থেকেও আমার বেশি ভাল লেগেছে ওর ধৈর্য। যে কারণে রোহিত শর্মার অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী অধিনায়ক হিসেবে চাপের মুখেও নিজের কাজটা পোলার্ড দারুণ ভাবে সামলাল।
ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে পোলার্ড বা রাসেলদের মতো যদি কেউ ব্যাট করতে পারে সে ঋষভ পন্থ। আমি বিশ্বাস করি দিল্লি ক্যাপিটালস বা ভারতীয় দলের হয়ে কোনও আশা নেই এ রকম পরিস্থিতিতেও ম্যাচ জেতাতে পারে ঋষভ।
কলকাতা নাইট রাইডর্সের বিরুদ্ধে দিল্লি ক্যাপিটালসকে জিততে হলে ঋষভের দারুণ একটা ইনিংস চাই। এই ম্যাচে জয়টা দিল্লির জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। ঋষভ এক জন বিশেষ ক্রিকেটার। যাঁর যে কোনও ফর্ম্যাটে বিধ্বংসী ব্যাটিং করার ক্ষমতা রয়েছে। শুধু সাদা বলের ক্রিকেটেই নয়, টেস্ট ক্রিকেটেও ঋষভ কী করতে পারে সেটা দেখিয়ে দিয়েছে। গত বছর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওভাল টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে ও রকম কঠিন পরিস্থিতিতে ঋষভের অসাধারণ সেঞ্চুরিটা নিশ্চয়ই অনেকের মনে রয়েছে।
ছেলেটার মধ্যে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আমি যতদূর দেখেছি নিজের প্রতিভা দেখানোর জন্য যতটা প্রয়োজন ততটা সময় ও ক্রিজে দিচ্ছে না। প্রথম থেকেই চালিয়ে খেলতে শুরু করে দিচ্ছে। প্রথম কয়েকটা বল ওকে ‘ভি’ এর মধ্যে খেলতে হবে। তা সে যে ফর্ম্যাটেই হোক। লং অন, লং অফের দিকে যত বেশি সম্ভব বল ঠেলে দিয়ে চোখটা ঠিক করে নিতে হবে। তার পরে বাকি কাজটা করার জন্য ওর সেই ক্ষমতা এবং শট রয়েছে।
পোলার্ড ওর বড় শটগুলো খেলার আগে কিন্তু ক্রিজে কিছুটা সময় নিয়েছিল। পোলার্ড, রাসেলও কিন্তু সোজা বাউন্ডারিগুলোকেই লক্ষ্য করে শট খেলছিল। লং অন, লং অফ এবং কিছুটা মিড উইকেট ঘেঁষে। ঋষভ কিন্তু পোলার্ড, রাসেলের এই ব্যাপারটা অনুসরণ করতে পারে।
ঋষভকে দ্রুত পরিণত হয়ে উঠতে হবে। পারফরম্যান্সের দিক থেকে আরও ধারাবাহিক হতে হবে। দেখা যাচ্ছে ও ম্যাচটা অনেক দূর টেনে নিয়ে গিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারছে না। কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে অনবদ্য ব্যাটিংয়ে প্রায় দলকে জিতিয়ে দিয়েছিল ঋষভ। জয় প্রায় হাতের মুঠোয় চলে এসেছিল। তখনই ও ফিরে গেল। দিল্লিও ম্যাচটা হারল। আরসিবির বিরুদ্ধেও ও অপরাজিত অবস্থায় ম্যাচটা শেষ করতে পারত। জয়ের জন্য মাত্র তিন রান প্রয়োজন ছিল তখন। সেই সময়ও ও আউট
হয়ে যায়।
পন্থকে ফিনিশার হয়ে উঠতে হবে, দিল্লি আর ভারতীয় ক্রিকেট দলের যেটা চাই। আমার বিশ্বাস ওর সেই ক্ষমতা রয়েছে। কেকেআরের বিরুদ্ধে ওর ইনিংস তাই শুধু দিল্লির জন্যই নয়, বিশ্বকাপের দল নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখেও খুব গুরুত্বপূর্ণ। একা হাতে ম্যাচ জেতাতে পারে বলে আমি নিশ্চিত ভাবে চাইব বিশ্বকাপে দলে থাকুক ঋষভ। (টিসিএম)