যা হয়ে থাকে আর কী! টি-টোয়েন্টি যে একটা নিষ্ঠুর খেলা। এটা এমন এক ফর্ম্যাট যেখানে খোঁড়াও দৌড়তে পারে, প্রজাপতিও কামড়াতে পারে, বোবাও গান গাইতে পারে! তার সঙ্গে বৃষ্টির খামখেয়ালিপনা যোগ-টোগ হলে তো ব্যাপারটাই বর্বর দেখায়। আর এই সব কিনা খাবি খাওয়া অবস্থায় থাকা একটা ম্যাচে ঘটল শুক্রবার রাতে।
যে রাত একই সঙ্গে বিরাট ঔজ্জ্বল্য আর বোকামিতে ভরা! সানরাইজার্স হায়দরাবাদ বৃষ্টি থামার পর হওয়া টসে প্রথমে ব্যাটিং করার ফাঁদে পড়ে গেল। তা সত্ত্বেও ওয়ার্নার আর এনরিকে ঝড় তোলে আর তখন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু বন্যার মতো ক্যাচ ফেলে গেল। তার পরে ফের এক দফা বৃষ্টি উপ্পলের মাঠে। বেঙ্গালুরুর সামনে ডি-এল মেথডে যে টার্গেট এল, সেটা তাড়া করা ছোটবেলায় স্কুলে সেই থলের ভেতর দু’টো পা বেঁধে দৌড়নোর মতো।
কিন্তু কাহিনিতে আবার নাটকীয় টুইস্ট! স্টেইন আর ভুবি—আইপিএলের সাধারণত কৃপণ বোলার জুটি ঠিক উল্টো কাজটা করে বসল। তার পর আবার এক কিম্ভুত কাণ্ড! কোহলি ক্যাচ আউট হল কিন্তু নট আউট থাকল। ওয়ার্নার অধিনায়কত্বের এক নতুন উদাহরণ তৈরি করল। একটা ক্যাচকে ছক্কায় রূপান্তরিত করে দিয়ে! আর বেঙ্গালুরু বেঁচে গেল।
কোনও নিরপেক্ষ রবিবার আশায় থাকবে এই দু’দলের ক্ষমতার বিচারে ওরা দু’জনই প্লে-অফে জায়গা করে নেবে। প্রশ্ন হল, আজ দু’টো দলই নিজের নিজের প্রতিদ্বন্দ্বীকে কী ভাবে সামলাবে! হায়দরাবাদ তুলনায় কঠিনতর প্রতিপক্ষ মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মুখোমুখি হচ্ছে। বেঙ্গালুরুর আবার বাড়তি শত্রু—বৃষ্টি। যে ‘শত্রু’ ইতিমধ্যেই চার বার বেঙ্গালুরু ম্যাচে নাক গলিয়ে বসে আছে। এবং রবিবারও সে রকম কিছুর হুমকি দিচ্ছে। ক্রিকেট মাঠে বৃষ্টি খেলাটার উপর এক নির্মম অভিশাপ।
পারফর্মারদের মতো তাদের অগুণতি ভক্তেরও এখন নিদ্রাহীন রাত কাটানোর পালা। লিগ পর্যায়ের অন্তিম সময়টা সাসপেন্সে ভরপুর। প্রত্যেকটা দল সেই সাসপেন্সের মানানসই খেলুক, চিত্রনাট্যকাররা লুকনো তাসগুলো ফেলুক, লড়ুয়েরাও শেষমেশ দুভার্গ্যজনক সমাপ্তির মুখে পড়ুক! আমরা ফাইনাল বল হওয়া পর্যন্ত সঙ্গে আছি। প্রচণ্ড রকমের চড়াই-উতরাইয়ে ভরা আইপিএলের এলিমিনেটর রাউন্ডের জন্য মনকে তৈরি রাখছি।
পুরনো ওয়াইনের মতো আইপিএলের যত বয়স বাড়ছে, ততই আরও সুস্বাদু হচ্ছে!