টানা ম্যাচ খেলে গম্ভীরদের চিন্তা ক্লান্তি

‘দিল্লি অভি দূর হ্যায়’— হিন্দিতে এই প্রবাদ থাকলেও ফিরোজ শাহ কোটলায় গিয়ে কিন্তু দশ দিন আগেই নাইটরা স্লোগান তুলে এসেছেন, ‘অব দিল্লি ভি হামারি’।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:০০
Share:

‘দিল্লি অভি দূর হ্যায়’— হিন্দিতে এই প্রবাদ থাকলেও ফিরোজ শাহ কোটলায় গিয়ে কিন্তু দশ দিন আগেই নাইটরা স্লোগান তুলে এসেছেন, ‘অব দিল্লি ভি হামারি’।

Advertisement

দূরে নয়। দিল্লি এখন নাইটদের শহর, কলকাতায়। শুক্রবার বিকেলে কাঠফাটা রোদে ইডেনে জাহির খান তাঁর দল নিয়ে নামবেন এ বারের আইপিএলের সবচেয়ে টগবগে ঘোড়া থামাতে। পারবেন কি?

বৃহস্পতিবার বিকেলে ইডেনে অনুশীলনে এসে জাহির ও মেন্টর রাহুল দ্রাবিড় দু’জনেই ভাল করে উইকেট দেখে নিয়ে কিউরেটরের সঙ্গে কথা বলে নিলেন। এর পর মাঠে দাঁড়িয়েই অনেকক্ষণ চলল রাহুল-জাহির বৈঠক। আটশোর বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচের অভিজ্ঞতার আদানপ্রদানে কি শেষ পর্যন্ত তৈরি হল কেকেআর-বধের ছক?

Advertisement

উইকেট সবুজ। কাগিসো রাবাডা, প্যাট কামিন্স, ক্রিস মরিস, জাহির খান ও মহম্মদ শামির পেস ব্রিগেডের এমন উইকেট দেখে খুশি হওয়ার কথা। সত্যিই কি খুশি তাঁরা? প্র্যাকটিসের মাঝে সাংবাদিকদের সামনে এসে দিল্লি অধিনায়ক জাহির খান বলে গেলেন, ‘‘সৌরভকে অভিনন্দন। দায়িত্ব নেওয়ার পর এমন উইকেট তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার জন্য। এই উইকেট দেখে আমরা যথেষ্ট আশাবাদী।’’

তবে আরসিবি যে পিচে ৪৯ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল, একই বাইশ গজে সম্ভবত শুক্রবারের দিল্লি-কলকাতা দ্বৈরথ হচ্ছে না। নতুন পিচে এই ম্যাচ হচ্ছে বলে জানালেন কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়।

তবে এই পিচের রংও সবুজ। ডেয়ারডেভিলসের অনুশীলনের সময় যখন সারা মাঠে দৌড়চ্ছিলেন ৪৯ অল আউটের অন্যতম নায়ক নেথান কুল্টার নাইল, তখন বারবার তাঁর চোখ চলে যাচ্ছিল মাঠের মাঝখানে। বোধহয় বোঝার চেষ্টা করছিলেন, আগের দিনের সেই মঞ্চই ফের মাতাবেন কি না। যখন জানলেন, এ অন্য উইকেট, তার পরেও তাঁকে বেশ খোশমেজাজেই ভক্তদের সঙ্গে সেলফি তুলতে ও সতীর্থদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গেল।

আরও পড়ুন:ফের ভারতীয় দলে ফিরে আসার স্বপ্ন দেখছেন উথাপ্পা

এইসব ঘটনা যখন ঘটছে ইডেনে, তখন বাইপাসের ধারে নাইটদের টিম হোটেলে এক অস্বাভাবিক নৈঃশব্দ। অন্য দিন হলে হয়তো নাইটদের লবিতে নেমে আত্মীয়-বন্ধুদের সঙ্গে খোশগল্প দেখা যেত বা কফিশপে অনেকে মিলে বসে আড্ডা মারতে দেখা যেত। নিদেনপক্ষে জিমে গা ঘামানো বা পুলে তাঁদের সাঁতার কাটা। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এ দিন ও সব কিছুই দেখা যায়নি।

দেখা যাবে কী করে? আগের রাতে ম্যাচ খেলেই তো পুণে শহর ছাড়তে হয়েছে গম্ভীরদের। ভোর পৌনে চারটের বিমান ধরতে হয়েছে কলকাতায় ফেরার জন্য। ভোর সাড়ে ছ’টায় এ শহরে পা রেখে সেই যে নিজেদের ঘরে ঢুকেছেন তাঁরা, তার পর আর কারও সাড়াশব্দ নেই সারা দিন-সন্ধেয়। এ যেন এক শো শেষ করেই কোনও যাত্রাদলের পরের শোয়ের জন্য অন্য শহরে রওনা হয়ে যাওয়া। গৌতম গম্ভীর আগের দিনই বলেছেন, ‘‘এত ঠাসা সূচি, যে আমাদের ছেলেদের ক্লান্তি ঘিরে ধরতে পারে।’’ এই ক্লান্তির সঙ্গে লড়াই করে নিজেদের ঠিকঠাক রাখাই এখন গম্ভীরদের প্রধান চ্যালেঞ্জ। আর তেমন কোনও দুশ্চিন্তা কোথায়? দলের সব বিভাগই তো সুপারহিট। কোনও ম্যাচে পেসাররা বিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিচ্ছেন তো অন্য ম্যাচে স্পিনার ও ব্যাটসম্যানরা ম্যাচ জেতাচ্ছেন। তাই দুশ্চিন্তার জায়গায় নেই নাইট শিবিরে।

আর কতই বা দূর? প্লে অফের দরজা খুলতে ছ’টা ম্যাচের মধ্যে অন্তত তিনটে জয় চাই গম্ভীরদের। তাই এ বার সে দিকেই তাকিয়ে এগোচ্ছেন তারা।

জাহিরের দিল্লি দূরে না থাকলেও, সেই দিল্লি কিন্তু এখনও দূরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন