বয়সটা কোনও বাধা নয়। এই আপ্তবাক্যটা যে কতটা প্রযোজ্য তাঁর জন্য, সেটা বুঝিয়ে দিলেন ওয়াসিম জাফর। ভারতের এই প্রাক্তন ওপেনার এই মরসুমে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছেন বিদর্ভের হয়ে। বৃহস্পতিবার ইরানি কাপে ৪০ বছর বয়সি জাফর অবশিষ্ট ভারতীয় দলের বিরুদ্ধে যে ব্যাটিংটা করলেন, সেটা যে কোনও তরুণ ব্যাটসম্যান করতে পারলে রীতিমতো গর্বিত হতেন। দিনের শেষে জাফর অপরাজিত ২৮৫ রানে। আজ, শুক্রবার কেরিয়ারে আরও একটা ট্রিপল সেঞ্চুরি পাওয়া খুব একটা কঠিন কাজ না হওয়ারই কথা জাফরের কাছে।
এই ম্যারাথন ইনিংস খেলার পথে মুম্বইয়ের প্রাক্তন ব্যাটসম্যান ভেঙে দিয়েছেন নানা রেকর্ডও। তিনি হলেন পঞ্চম ভারতীয়, যিনি চল্লিশ বছর বা তার বেশি বয়সে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরি করলেন। একই সঙ্গে তিনি হলেন এশিয়ার প্রথম ব্যাটসম্যান যিনি চল্লিশ বছর বয়সে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আড়়াই শো রান বা তার বেশি রানের ইনিংস খেললেন। একই সঙ্গে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৮ হাজারেরও বেশি রান হয়ে গেল জাফরের। যে ক্লাবে তিনি ষষ্ঠ ভারতীয়। এক নম্বরে আছেন সুনীল গাওস্কর, ২৫ হাজার ৮৩৪ রান করে।
জাফরের এই ইনিংসে মুগ্ধ ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটারেরা। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় টুইট করেছেন, ‘ওয়েল ডান... বুড়ো মানুষটা দারুণ খেলেছে।’ ভিভিএস লক্ষ্মণের প্রতিক্রিয়া, ‘নিজের কেরিয়ারের এই পর্যায়ে এসেও জাফরের এই মানসিকতা দেখে মুগ্ধ হতে হয়। কী সহজে ইনিংসটা খেলল ও।’ হরভজন সিংহ মনে করেন, ‘ভারতের হয়ে আরও বেশি দিন খেলা উচিত ছিল ওয়াসিম জাফরের।’
বৃহস্পতিবার নাগপুরে দেখা যায়, জাফর কেরিয়ারের অষ্টম ডাবল সেঞ্চুরি করার পরেই হাততালি দিচ্ছেন অবশিষ্ট ভারতীয় দলের পৃথ্বী শ। ভারতের হয়ে যখন প্রথম ম্যাচ খেলেছিলেন জাফর, তখন ১৯ বছরের পৃথ্বীর বয়স ছিল তিন মাস! ভারতের বিশ্বকাপ জয়ী যুব দলের অধিনায়ক খুব কাছ থেকে দেখলেন কী ভাবে এক বর্ষীয়ান ক্রিকেটারের ব্যাট শাসন করে গেল অবশিষ্ট ভারতীয় দলের বোলিং আত্রমণকে। যে বোলিং আক্রমণে ছিল আর. অশ্বিন এবং জয়ন্ত যাদবের মতো ভারতীয় দলে খেলে আসা নাম। রয়েছেন তরুণ পেসার সিদ্ধার্থ কল। কিন্তু কেউই সামান্য ছাপ রাখতে পারেননি জাফরের ওপর।
জাফর এবং গণেশ সতীশের (১২০) সেঞ্চুরির ওপরে ভর করে দ্বিতীয় দিনের শেষে বিদর্ভ তুলেছে তিন উইকেটে ৫৯৮। ১২৩ রান দিয়ে অশ্বিন পেয়েছেন এক উইকেট।