হ্যাটট্রিক হয়নি শুনে উৎসবের বদলে হতাশা

তাঁর দশ বছরের বর্ণময় ফুটবলার জীবনে মনে হয় কখনও এরকম অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়তে হয়নি জেজে লালপেখলুয়াকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৭ ০৩:৫৩
Share:

তাঁর দশ বছরের বর্ণময় ফুটবলার জীবনে মনে হয় কখনও এরকম অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়তে হয়নি জেজে লালপেখলুয়াকে।

Advertisement

কোচ সঞ্জয় সেনের সঙ্গে যখন সাংবাদিকদের সামনে এসেছিলেন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তখন তাঁর মুখে ছিল হাজার ওয়াটের আলো। আর যখন ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে টিম বাসে উঠলেন তখন মুখে শুধুই অন্ধকার।

‘‘মোহনবাগানের হয়ে এটা আমার প্রথম হ্যাটট্রিক। টিমের জয়ের মতোই এটা আমার কাছে মূল্যবান।’’ দেশের অন্যতম সেরা স্ট্র্ইকার যখন এটা বলছিলেন তখনও খোঁজ চলছিল বিরতির আগে তাঁর করা গোলটা আদৌ জেজের কি না? কারণ ডানদিক থেকে মোহনবাগানের বলবন্ত সিংহ যখন বলটা তুলেছিলেন বিপক্ষের বক্সে, তখন জেজের সঙ্গে ভ্যালেন্সিয়ার হুসেন নিহানও সেটা ফলো করছিলেন। জেজে চেয়েছিলেন বলটা গোলে ঢোকাতে, আর নিহান নিজেদের গোল বক্স থেকে সেটা বাইরে পাঠাতে চেয়েছিলেন। বলটা কার পায়ে লেগে মলদ্বীপের ক্লাবের গোলে ঢুকেছিল তা বোঝা যায়নি অনেক দূরের প্রেস বক্স থেকে। টিভি সম্প্রচার ছিল না। ফলে তা বারবার দেখাও যায়নি। মাইকে ঘোষণাও করে দেওয়া হয় ওটা জেজেরই গোল। এবং সেটা ধরে নিয়েই এএফসি কাপে প্রথম ভারতীয় হিসাবে জেজের হ্যাটট্রিকের খবর ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। ব্রেকিং নিউজ দেখাতে থাকে বিভিন্ন চ্যানেল। মিজো স্ট্রাইকার এটা শুনে বলে ফেলেন, ‘‘এই গৌরব ক্লাবের সভ্য-সমর্থকদের উৎসর্গ করছি।’’ পাশে বসে থাকা মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেনও বলেন, ‘‘জেজে হ্যাটট্রিক পেয়েছে। ও আরও গোল করবে আশা করি। বলবন্তও গোল পেতে পারত। কিন্তু পারেনি। তবে আমার বিশ্বাস বলবন্তও গোল পাবে পরের ম্যাচগুলোতে।’’

Advertisement

এসব শোনার পরও কাঁটাছেড়া চলতে থাকে জেজের দ্বিতীয় গোল নিয়ে। যিনি এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে পারেন সেই চিনের ম্যাচ কমিশনার লিউ জিনসংয়ের খোঁজ শুরু হয়। তিনি তখন রেফারিদের সঙ্গে কথা বলে কাগজপত্র তৈরিতে ব্যস্ত। তাঁর কাছে খবর পাঠানো হয় এক ফেডারেশন কর্মীর মাধ্যমে। জানতে চাওয়া হয়, গোলটা কার নামে দেওয়া হয়েছে। ম্যাচ শেষ হওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা পরে ঘোষণা করা হয়, গোলটা জেজের নয়। ওটা আত্মঘাতী। এএফসি-র ওয়েবসাইটেও লেখা হয়, ওটা হুসেন নিহানেরই পায়ে লেগে গোলে ঢুকেছে। আত্মঘাতী গোল।

এই ঘোষণার মিনিট দশেক পরেই জেজে বেরিয়ে আসেন নিজেদের ড্রেসিংরুম থেকে। সঙ্গী আনাস। তাঁকে এএফসি-র সিদ্ধান্ত শোনানোর পর দেশের অন্যতম সেরা স্ট্র্ইকারের মুখে নামে অন্ধকার। বলে যান, ‘‘বলটা কিন্তু আমার পায়েও লেগেছিল। কী আর করা যাবে! টিম জিতেছে তাতেই খুশি।’’ এ কথা বলতে বলতেই টিম বাসের দিকে হাঁটা লাগান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন