আমাদের দলের পাশে থাকুন, কেরলবাসীকে আবেদন জবির

শনিবার একই সময়ে কোয়েম্বত্তূরে মিনার্ভা এফসি-র বিরুদ্ধে খেলবে চেন্নাই। এটা কি ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারদের মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে? জবি ও আলেসান্দ্রো দু’জনেই বলছেন, ‘‘একেবারেই না। আমরা শুধু গোকুলমকে নিয়েই ভাবছি। তা ছাড়া প্রত্যেকেই পেশাদার। নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন।’’

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

কোঝিকোড় শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৯ ০৪:৪১
Share:

তিন অস্ত্রের দিকে তাকিয়ে লাল-হলুদ শিবির।

অধরা আই লিগ জয়ের স্বপ্ন তাঁকে ঘিরেই দেখতে শুরু করেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকেরা। কিন্তু সেই জবি জাস্টিনই থুতু কাণ্ডে নির্বাসিত হয়ে ছিটকে গিয়েছেন মাঠের বাইরে। মনেপ্রাণে চেয়েছিলেন নিজের রাজ্য কেরলের মাটিতে গোকুলম এফসি-কে হারিয়ে ফুটবলজীবন স্মরণীয় করতে রাখতে। কিন্তু আইজল এফসি ম্যাচের ঘটনা জবির জীবনটাই বদলে দিয়েছে। সতীর্থেরা যখন কোঝিকোড়ে আই লিগ জয়ের প্রস্তুতিতে মগ্ন, লাল-হলুদ স্ট্রাইকার তখন ভগ্নহৃদয়ে মাঠের বাইরে।

Advertisement

শুক্রবার দুপুরে ফোনে আনন্দবাজারকে জবি বলছিলেন, ‘‘কী যে হয়ে গেল হঠাৎ! এ রকম একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দল খেলছে, অথচ আমি নেই, এর চেয়ে যন্ত্রণার কিছু হতে পারে না।’’ এই মুহূর্তে আই লিগের যা পরিস্থিতি তাতে কিছুটা হলেও সুবিধেজনক জায়গায় চেন্নাই সিটি এফসি। তা-ই ইস্টবেঙ্গলকে জিতলেই হবে না। অপেক্ষা করতে হবে চেন্নাইয়ের পয়েন্ট নষ্টের। এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে কি চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্ভব? জবি বলছেন, ‘‘আমি দারুণ ভাবেই আত্মবিশ্বাসী ইস্টবেঙ্গলের আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারে। তার উপরে কার্ড সমস্যা কাটিয়ে বোরখা গোমেস পেরেস দলে ফিরছে।’’ ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়াও আত্মবিশ্বাসী জয়ের ব্যাপারে। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছেন, ‘‘প্রত্যেকেই আত্মবিশ্বাসী ও জেতার জন্য মরিয়া। আমরা এই মুহূর্তে শুধু সামনের দিকেই তাকাতে চাই।’’

শনিবার একই সময়ে কোয়েম্বত্তূরে মিনার্ভা এফসি-র বিরুদ্ধে খেলবে চেন্নাই। এটা কি ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারদের মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে? জবি ও আলেসান্দ্রো দু’জনেই বলছেন, ‘‘একেবারেই না। আমরা শুধু গোকুলমকে নিয়েই ভাবছি। তা ছাড়া প্রত্যেকেই পেশাদার। নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন।’’ আর চেন্নাই-মিনার্ভা ম্যাচে গড়াপেটার আশঙ্কা? আলেসান্দ্রো তা-ও উড়িয়ে দিলেন। বললেন, ‘‘মিনার্ভা যে পেশাদার দল মাঠের ভিতরে ও বাইরে বহুবার প্রমাণ করেছে। আমার মনে হয় ওরা সেরা খেলাটাই খেলবে। আমি বিশ্বাস করি না যে, এই ম্যাচে গড়াপেটা হবে।’’ লাল-হলুদ শিবিরের অনেকে অবশ্য চিন্তিত রেফারিং নিয়ে। গোকুলম-ইস্টবেঙ্গল ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন রাহুল কুমার গুপ্ত। চলতি আই লিগে তিনি দু’টো ম্যাচ খেলিয়েছেন লাল-হলুদের। একটাতেও জেতেননি জবিরা। ঘরের মাঠে ড্র করেছেন রিয়াল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে। কোয়েম্বত্তূরে চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে হেরেছে। অভিযোগ, সেই ম্যাচে ন্যায্য পেনাল্টি থেকে নাকি বঞ্চিত করেছেন এই রেফারি। ফেডারেশনের কর্তারা অবশ্য রেফারিং নিয়ে অভিযোগ শুনতে রাজি নন।

Advertisement

আই লিগের প্রথম পর্বে যুবভারতীতে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ১-৩ হেরেছিল গোকুলম। ঘরের মাঠে বদলা নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে থাকবে তারা। তার উপরে নিজেদের দর্শকদের সমর্থনও পাবে গোকুলম। খেলতে না পারলেও অদ্ভুত একটা কাণ্ড করেছেন জবি। কেরলের বন্ধুদের আবেদন করেছেন ইস্টবেঙ্গলকে সমর্থন করার। শুধুই তা-ই নয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, ‘‘শনিবার আমরা এই মরসুমের শেষ ম্যাচ খেলতে নামছি। ইস্টবেঙ্গল এখনও খেতাবি দৌড়ে রয়েছে। কেরলের ফুটবলপ্রেমীদের কাছে আমার আবেদন, শনিবার কোঝিকোড়ের স্টেডিয়ামে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে গলা ফাটান।’’

গোকুলম কোচ গিফ্ট রাইখানও ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে রাখলেন। তবে জানিয়ে দিলেন, শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে তাঁর দল। বললেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলকে আটকানো কঠিন। তবে আমাদের কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। দেখা যাক, কী হয়।’’ তিনি যোগ করলেন, ‘‘এই ম্যাচ থেকে কিছু পাওয়ার বা হারানোর নেই। তাই শেষ ম্যাচ স্মরণীয় করে রাখতে চাই আমরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন