টোকেন দিয়েও লাল-হলুদের জবি এটিকেতে

জবির সই নিয়েও কি এটিকে বনাম ইস্টবেঙ্গল লড়াই শুরু হবে? এ দিন রাত পর্যন্ত যা খবর তাতে ইস্টবেঙ্গল কর্তারা অপেক্ষা করছেন, বিনিয়োগকারীদের সবুজ সঙ্কেতের জন্য। সেটা পেলেই কাগজপত্র নিয়ে লড়াইতে নামবেন কর্তারা।

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:০৬
Share:

এটিকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলেন আই লিগের সর্বোচ্চ ভারতীয় গোলদাতা জবি জাস্টিন। ফাইল চিত্র।

ইস্টবেঙ্গলের ক্লাবের কাছে এখনও রয়েছে তাঁর ‘টোকেন’। শোনা যাচ্ছে, পরের মরসুমে খেলার জন্য একটি চিঠিও নাকি বিনিয়োগকারীদের দিয়ে রেখেছিলেন জবি জাস্টিন।

Advertisement

এই আবহে সবাই যখন ধরে নিয়েছিলেন লাল-হলুদ জার্সিতেই পরের মরসুমে খেলবেন তিনি, তখনই নাটকীয় ভাবে বুধবার সকালে এটিকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলেন আই লিগের সর্বোচ্চ ভারতীয় গোলদাতা। রেকর্ড অর্থে জবির তিন বছরের জন্য এটিকের সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তি করে ফেলার পর ময়দান জুড়ে ফিরছে টোলগে ওজবের সই বিতর্কের স্মৃতি। সাত বছর আগে অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকারের সই নিয়ে কলকাতার দুই প্রধানের মধ্যে হয়েছিল দীর্ঘ টানাপড়েন। সেখানেও ইস্টবেঙ্গলের কাছে ছিল ‘টোকেন’ আর মোহনবাগানের কাছে ছিল চুক্তিপত্র। লাল-হলুদ কর্তারা দাবি করেছিলেন, নতুন মরসুমে খেলবেন বলে টোলগে তাঁদের কাছ থেকে অগ্রিম নিয়েছেন। আইএফএ-র কোর্টে বল গড়িয়েছিল। শেষ পর্যন্ত টোলগে মোহনবাগানে খেলেছিলেন, তবে তাঁকে ক্ষমা চেয়ে চিঠি দিতে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলকে।

টোলগে ছাড়াও সই বিতর্কে জড়িয়েছেন অমিত দাশ, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, অবিনাশ রুইদাশরা। ঘটনা হল, প্রতি ক্ষেত্রেই জড়িয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের নাম। স্নেহাশিসের সই সঠিক কি না তা প্রমাণ করতে ডাকতে হয়েছিল বিশেষজ্ঞও।

Advertisement

জবির সই নিয়েও কি এটিকে বনাম ইস্টবেঙ্গল লড়াই শুরু হবে? এ দিন রাত পর্যন্ত যা খবর তাতে ইস্টবেঙ্গল কর্তারা অপেক্ষা করছেন, বিনিয়োগকারীদের সবুজ সঙ্কেতের জন্য। সেটা পেলেই কাগজপত্র নিয়ে লড়াইতে নামবেন কর্তারা। ইস্টবেঙ্গলের এক শীর্ষ কর্তা বললেন, ‘‘জবির টোকেন ক্লাবের কাছে আছে। শুনেছি পরের মরসুমে খেলবে বলে একটি চিঠিও নাকি ও কোম্পানিকে দিয়েছে। কিন্তু যত ক্ষণ না বিনিয়োগকারী সংস্থার চেয়ারম্যান আমাদের কিছু বলছেন, তত ক্ষণ কিছু করব না।’’ বিনিয়োগকারী সংস্থার চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার বললেন, ‘‘আমার কিছু বলার নেই। ই-মেল করে সংবাদ মাধ্যমকে সব জানাব।’’ রাত পর্যন্ত কোনও ই-মেল অবশ্য আসেনি।

দলের সেরা স্ট্রাইকার চলে যাওয়ার পর বিনিয়োগকারীদের কোনও হেলদোল নেই দেখে ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে তীব্র ক্ষোভ। ফুটবলার বিভাগের এক কর্তা বললেন, ‘‘জবি তো তিন মাস আগে থেকে থাকার জন্য ওদের ফোন করছে। ওরা যদি গুরুত্ব না দেয় তা হলে এ রকমই হবে। এক এক করে ফুটবলার চলে যাবে অন্য দলে।’’

জবিকে সই করিয়েছেন, ওর থেকে কি টোকেন নিয়েছেন? প্রশ্ন শুনে এটিকের এক কর্তা আকাশ থেকে পড়লেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘টোকেন? সেটা আবার কী? জবির সঙ্গে চুক্তি করেছি আমরা। সেই চুক্তির কপি লিগ কমিটিকে পাঠিয়ে দিয়েছি। এটাই তো আইএসএলের নিয়ম।’’ আর আই এফ এ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, ‘‘জবির টোকেন এবং চিঠি নিয়ে এসে যদি ইস্টবেঙ্গল আমাদের হস্তক্ষেপ চায়, তা হলে ফেডারেশনের সঙ্গে কথা বলব।’’

জবির সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের চুক্তি ৩১ মে পর্যন্ত। সে জন্যই এটিকে প্রাথমিক চুক্তি করেছে তাঁর সঙ্গে। মূল চুক্তি কার্যকর হবে ১ জুন থেকে। কিন্তু এটিকের সঙ্গে লড়াইতে গেলে কি জবিকে ফেরাতে পারবে ইস্টবেঙ্গল? জবির কি শাস্তি হতে পারে? আইএফএ-র আইন যাঁদের নখদর্পণে সেই রকম এক পোড় খাওয়া ময়দানী কর্তা বললেন, ‘‘শুধু টোকেন দিলেই হবে না। যদি টোকেনের সঙ্গে ফুটবলারটির পরের মরসুমে খেলার জন্য সম্মতির কোনও চিঠি ইস্টবেঙ্গল জমা দেয়, তা হলে জবির এটিকে-তে খেলা মুশকিল। শুধু টোকেনের গুরুত্ব নেই সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের কাছে। টোকেন আইএফএর তৈরি করা নিয়ম। ফেডারেশনে চুক্তিপত্রই আসল। আইএসএল ফুটবলারেরা সরাসরি ফেডারেশনে নথিভুক্ত হয়।’’ জবি ‘সম্মতির চিঠি’ দিয়েছেন কি না তা নিয়ে ধোঁয়াশা রেখেছেন বিনিয়োগকারীরা। ক্লাব কর্তারাও বলছেন ‘শুনেছি দিয়েছে’। যা পরিস্থিতি, তাতে ওই প্রতিশ্রুতির চিঠি থাকলেই ইস্টবেঙ্গল ফেরাতে পারবে জবিকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন