মোরিনহোর বিজয়োৎসবে বিতর্ক, বিরক্ত দিবালারাও

তুরিনে খেলা শেষের বাঁশি বাজতেই কানে এক হাত দিয়ে নিজের মুখটা যতটা সম্ভব বিকৃত করে মাঠে ঢুকে যান জোসে। মনে করা হচ্ছে, দর্শকদের দিকেই তাঁর এই বিশেষ অঙ্গভঙ্গি। যেন তাঁদের বলতে চেয়েছিলেন, আপনারা কিছু বলছিলেন?

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৫১
Share:

বিদ্রুপ: জেতার পরে জুভেন্তাস গ্যালারির দিকে তাকিয়ে মোরিনহো। এএফপি

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জুভেন্তাসকে হারিয়ে চমকে দেওয়ার পরে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ম্যানেজার জোসে মোরিনহোর উৎসব করার অঙ্গভঙ্গি নিয়ে ফুটবল বিশ্বে তোলপাড়। এমনকি, জুভেন্তাসের দুই ফুটবলার লিয়োনার্দো বোনুচ্চি ও পাওলা দিবালা সরাসরি জোসের কাছে গিয়ে ব্যাপারটা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করলেন। তার পরেই দ্রুত স্টেডিয়ামের টানেলের মধ্য দিয়ে ম্যান ইউ ম্যানেজারকে ড্রেসিংরুমে নিয়ে চলে যান তাঁর সতীর্থরা।

Advertisement

তুরিনে খেলা শেষের বাঁশি বাজতেই কানে এক হাত দিয়ে নিজের মুখটা যতটা সম্ভব বিকৃত করে মাঠে ঢুকে যান জোসে। মনে করা হচ্ছে, দর্শকদের দিকেই তাঁর এই বিশেষ অঙ্গভঙ্গি। যেন তাঁদের বলতে চেয়েছিলেন, আপনারা কিছু বলছিলেন? আমি শুনতে পাচ্ছি না! এর কারণও আছে। মোরিনহোর দাবি, পুরো ৯০ মিনিট ধরে তুরিনের দর্শকেরা তাঁকে বিদ্রুপ করে গিয়েছে। সেই কারণেই তিনি ম্যাচ শেষে অমন ভঙ্গি করেছিলেন।

খেলা শেষের সাংবাদিক সম্মেলনে আসা মোরিনহোকে আদৌ অনুতপ্ত মনে হয়নি, ‘‘ইটালির দারুণ সুন্দর একটি শহরে ওরা ৯০ মিনিট ধরে আমায় অপমান করে গেল। জবাবে আমি কিন্তু ওদের অপমান করিনি। যেটা করেছি সেটা খুবই তুচ্ছ একটা ব্যাপার।’’ প্রসঙ্গত ইটালিতে অতীতে মোরিনহো জুভেন্তাসের ‘চিরশত্রু’ ক্লাব ইন্টার মিলানের কোচ ছিলেন। যা মনে করিয়ে তাঁর কথা, ‘‘জানি ইন্টারের লক্ষ লক্ষ ভক্ত আমি যা করেছি তা দেখে খুশিই হয়েছে। তবে জুভেন্তাসকেও আমি শ্রদ্ধা করি। ওদের ফুটবলার, ম্যানেজার এবং ওদের ফুটবল দক্ষতাকেও।’’

Advertisement

মোরিনহোর এই ধরনের প্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল জুভেন্তাস কোচ মাসিমিলিয়ানো আলেগ্রিকে। তিনি খুব একটা গুরুত্ব দিতে চাননি। বলেছেন, ‘‘কে কী ভাবে জয়ের উৎসব পালন করবে তা তো আমি ঠিক করে দিতে পারি না। এটা তার ব্যক্তিগত রুচির ব্যাপার। তাই সেটা ঠিক না ভুল বলার আমি কেউ নই।’’ মোরিনহোর আচরণে কিন্তু হতাশ ম্যান ইউয়ের প্রাক্তন তারকা পল স্কোলস। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘মোরিনহোর উচিত ছিল এ রকম কিছু না করে নিজের সম্মানটা রক্ষা করা। যেখানেই উনি যান, সেখানেই কিছু না কিছু ঘটিয়ে ফেলেন। আমার তো মনে হয়, তুরিনে উনি যেটা করলেন তার কোনও দরকারই ছিল না। ভদ্রভাবে বিপক্ষ কোচের সঙ্গে করমর্দন করে চলে এলে ক্ষতিটা কী হত?’’ মোরিনহোর পাশেও দাঁড়িয়েছেন কেউ কেউ। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের প্রাক্তন মিডফিল্ডার ওয়েন হারগ্রিভস বলেছেন ‘‘আসলে এই সপ্তাহটাই দারুণ গেল জোসের। জুভেন্তাসকে হারানোর পরে এতটা করার দরকার না থাকলেও উনি তা করে ফেলেছেন আবেগের বশে।’’

এর আগেও পর্তুগিজ কোচের জয়ের উৎসব নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। কয়েক দিন আগেই ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে জুভেন্তাস ম্যাচের পরে তিনি দর্শকদের তিনটি আঙুল তুলে দেখিয়ে ছিলেন। সেটা করেছিলেন তুরিন থেকে ইংল্যান্ডে খেলা দেখতে আসা দর্শকদের মনে করিয়ে দিতে যে, ইন্টার মিলান তাঁর কোচিংয়ে তিনটি বড় ট্রফি জিতেছিল। ২০০৪ সালে পোর্তোর কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে যায় ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। তখনও খেলা শেষ হতেই হাঁটু মুড়ে টাচলাইনের ধারে অঙ্গভঙ্গি করেন জোসে। তখন তিনি পোর্তোর কোচ। এখন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের। দল পাল্টেছে, পাল্টায়নি তাঁকে ঘিরে বিতর্কের ঝড়!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন