হতাশ: ঘরের মাঠে গোল পেলেন না সালাহ।—ছবি এএফপি।
লিভারপুল ০ • বায়ার্ন মিউনিখ ০
নাটক ছিল না। দু’দলই সুযোগ তৈরি করল নামমাত্র। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লিভারপুল বনাম বায়ার্ন মিউনিখ লড়াই মারাত্মক হতাশ করল অ্যানফিল্ডের দর্শকদের। মঙ্গলবার রাতে ইউরোপের সেরা প্রতিযোগিতায় এমন ম্যাড়ম্যাড়ে ম্যাচ দেখে ফুটবল বিশ্লেষকেরা বললেন একটাই কথা, দু’দলই পরস্পরকে অতিরিক্ত সমীহ করতে গিয়ে শেষ করে দিল ফুটবলের বিনোদনকে।
একই সঙ্গে এটাও সত্যি যে বায়ার্ন বোঝাল কেন তারা ইউরোপের অন্যতম সেরা। কেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রেকর্ড অসম্ভব ভাল। গোল করতে না পারলেও দেখাল, অ্যাওয়ে ম্যাচে, তাও লিভারপুলের বিরুদ্ধে ঘর সামলে কতটা নিখুঁত খেলা যায়। জার্মান ক্লাবের বড় সুবিধা প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে ফিরতি ম্যাচ খেলবে অ্যালিয়াঞ্জে নিজেদের মাঠে। ১৩ মার্চ। বায়ার্নের সমস্যা একটাই। পরপর হলুদ কার্ড দেখে ফিরতি ম্যাচ থেকে ছিটকে গেলেন দলের সেরা ডিফেন্ডার জোশুয়া কিমিচ।
লিভারপুলের জার্মান ম্যানেজার য়ুর্গেন ক্লপ হয়তো ভেবেছিলেন নিজেদের মাঠে অন্তত একটা গোল করবে দল। সেটা না হওয়ায় বলে ফেললেন, ‘‘এই ফলের স্বপ্ন দেখে ছেলেরা নামেনি। আমার তো মনে হয় দ্বিতীয়ার্ধে আমরা বা ওরা গোলের সুযোগই তৈরি করতে পারিনি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোনও ম্যাচের রাত এতটা বিবর্ণ হতে পারে না। তবে ফলের দিক থেকে বলতে পারি, ঠিকই আছে। কেউই তো জেতার মতো খেলিনি।’’
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ সাত বারে ছ’বারই সেমিফাইনালে খেলেছে বায়ার্ন। তাদের অভিজ্ঞতার কাছেই ম্লান হয়ে গেল লিভারপুল- আক্রমণের ত্রয়ী। কে বলবে মহম্মদ সালাহ, সাদিয়ো মানে, রবের্তো ফির্মিনোরা এ বারের প্রিমিয়ার লিগে ৭৪ গোল করেছেন! বায়ার্ন ম্যানেজার নিকো কোভাচের কথাতেও সেটা স্পষ্ট, ‘‘আমার মনে পড়ে না খুব বেশি ক্লাব এখানে থেকে হার বাঁচিয়ে ফিরেছে বলে। এই যে ওদের গোল করতে দিলাম না, তার কারণ টেকনিক্যালি নিখুঁত খেলেছে ছেলেরা। কৌশলগত সিদ্ধান্তও ঠিকঠাক নিয়েছে।’’
দিনটা সালাহরও ছিল না। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আগে কখনও ‘মিশরীয় মেসি’কে এতটা নিষ্প্রভ দেখায়নি। গোল করতে পারেননি। গোলের পরিস্থিতি সৃষ্টিতেও ব্যর্থ। আক্রমণে অন্যদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। তবে লিভারপুলের হয়ে সেরা ফুটবল খেললেন ব্রাজিলীয় ফাবিনহো। তাঁর জন্যই রবার্ট লেওনডস্কিকে আগাগোড়া শান্ত দেখাল। দু’দলই সুযোগ যেটুকু তৈরি করার করেছে প্রথমার্ধে। সুযোগ না বলে যাকে অর্ধেক সুযোগও বলা যায়। একবার শুধু সাদিয়ো মানে ডাইভ দিয়ে হেড করে গোলের পরিস্থিতি তৈরি করেন। কিন্তু অসাধারণ দক্ষতায় দলকে বিপন্মুক্ত করেন মানুয়েল ন্যয়ার।
গতবারের ফাইনালিস্ট লিভারপুল ম্যানেজার ক্লপ অবশ্য ভক্তদের হতাশ হতে বারণ করলেন, ‘‘জানি এখানে ফল গোলশূন্য রেখে ওরা আমাদের থেকে বেশিই খুশি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আমাদের আশা নেই। আতঙ্কিত হওয়ারও দরকার নেই। পরের ম্যাচের আগে তিন সপ্তাহ হাতে। যত দিন যাবে তত ছেলেদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে। সেটা কিন্তু বায়ার্নকে উদ্বেগে রাখবে।’’