ইডেনে ঋদ্ধির মন্ত্রই ভরসা নগরকোটির

জয়পুরের ১৮ বছরের ছেলেটির হাত থেকে প্রায়ই ১৪৫-১৫০ কিমি গতিতে বল বেরোতে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন গ্লেন ম্যাকগ্রা, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়-রা।

Advertisement

রাজীব ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৮ ০৩:৪৬
Share:

লক্ষ্য: আইপিএলে গতির ঝড় তুলতে চান নগরকোটি। ফাইল চিত্র

রিচার্ড হেডলির দেশে গিয়ে ব্যাটসম্যানদের কাছে যে ভাবে ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন, আইপিএলেও কি তেমনই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারবেন কেকেআরের তরুণ ‘স্পিডস্টার’ কমলেশ নগরকোটি? ইডেনের গতি ও বাউন্সে ভরা বাইশ গজ আছে যখন, চিন্তা কী?

Advertisement

তবু একটা চিন্তা রয়েই গিয়েছে তাঁর। ইডেনের দর্শক। ডেথ ওভারে রান-আপ নেওয়ার সময় ৬৫ হাজার দর্শক একসঙ্গে চিৎকার করলে সেই মেজাজ ধরে রাখতে পারবেন? যা ছিল যুব বিশ্বকাপে?

জয়পুরের ১৮ বছরের ছেলেটির হাত থেকে প্রায়ই ১৪৫-১৫০ কিমি গতিতে বল বেরোতে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন গ্লেন ম্যাকগ্রা, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়-রা। এই বয়সে কী করে এমন গতিতে টানা বোলিং করে কেউ! টুর্নামেন্টে নয় উইকেট নেন কমলেশ। বিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের শিরদাঁড়ায় শীতল স্রোত নামাতে তাই এ বার তিন কোটি ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে তাঁকে নিয়েছে নাইট শিবির।

Advertisement

কিন্তু আইপিএল গ্রহের এই আনকোরা নাগরিক ইডেনে চাপ সামলাবেন কী করে? সেই দাওয়াই তাঁকে বাতলে দিয়েছেন ইডেনের ঘরের ছেলে, ভারতীয় টেস্ট দলের উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহা। বেঙ্গালুরুতে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে সম্প্রতি দেখা হয় দু’জনের। সেই সাক্ষাতেই ঋদ্ধির কাছ থেকে নেন মূল্যবান টিপস।

শুক্রবার কমলেশ ‘আনন্দবাজার’-কে বলেন, ‘‘ঋদ্ধিদার সঙ্গে কথা বলে অনেক কিছু জানতে পারি। ঋদ্ধিদা বলেছে, ‘মাঠে নেমে দর্শকদের নিয়ে ভাববিই না। ভাবলে নিজের কাজটা করতেই পারবি না। বাইরে অনেকে অনেক কথা বলবে, সেগুলো ভুলে যাবি। এগুলো মনে রাখলে বা দর্শকদের দিকে কান দিলেই সর্বনাশ।’ মাঠে নামার সময় ঋদ্ধিদার কথাগুলো নিশ্চয়ই মনে রাখব।’’ ইডেনে কখনও খেলেননি তরুণ কমলেশ। যেখানকার বাউন্স ও গতির বাইশ গজ তাঁর মতো গতিময় বোলারকে স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় রয়েছে। বাইশ গজের সাহায্যের আশায় কমলেশও। বললেন, ‘‘শুনেছি ইডেনের উইকেটে বাউন্স, গতি থাকবে। টিভিতেও দেখেছি ইডেনের ম্যাচ। সন্ধেবেলা গঙ্গার দিক থেকে নাকি হাওয়াও দেয়। নিউজিল্যান্ডেও অনেকটা একই রকম পরিবেশ পেয়েছিলাম। ইডেনে পরিবেশ থেকে সাহায্য পেলে আশা করি আইপিএলেও ভাল কিছু করে দেখাতে পারব।’’

গত কয়েক দিন ধরে তো প্রস্তুতি চলছেই। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিধ্বংসী পেস জুটির অপেক্ষায় আছেন সেনা অফিসারের এই পুত্র। মিচেল স্টার্ক ও মিচেল জনসন। এই নিয়ে বলেন, ‘‘ওদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে চাই। কী করে শরীর তৈরি রাখেন, কী ভাবে গতি, লাইন ও লেংথ একসঙ্গে বজায় রাখার জন্য অনুশীলন করতে হয়। এ ছাড়াও ওদের প্র্যাকটিস দেখার জন্য মুখিয়ে আছি। এগুলো আমার কাছে অনেক কিছু। ভাল পারফরম্যান্সের পাশাপাশি শেখাটাও আমার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ।’’

ক্রিকেটের ব্যাপারে খোলামেলা হলেও তিন কোটি ২০ লক্ষ টাকার কথা শুনলেই নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন কমলেশ। বলেন, ‘‘নিলামে আমার নাম ওঠার সময় তো টেনশনে নিউজিল্যান্ডে হোটেলের বাথরুমে গিয়ে বসেছিলাম। আমার কাছে আইপিএলে সুযোগ পাওয়াটাই বড় খবর। এত টাকা পাওয়াটা নয়। টাকা নিয়ে আমার বাবা ভাববেন।’’

আর একটা ইচ্ছেও আছে। ‘‘বন্ধু ঈশানের (পোড়েল) কাছ থেকে কিছু বাংলা শব্দ শেখা।’’

আগামী দু’মাস যে তাঁর ঠিকানা নাইটদের শহর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন