ভারতের ক্রিকেট ইতিহাস বলে, আমরা দেশের মাঠে জিতি। বিশেষ করে এমন উইকেটে যা স্পিন সহায়ক আর যেখানে স্পিনারদের কাঁধেই বোলিংয়ের বেশির ভাগ দায়িত্বটা থাকে। এটা যেন নীতিবাক্যের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। সফরকারী দল আসবে ভাঙা মন ও হতাশা নিয়ে ফিরে যাবে। এমন একটা পরিস্থিতিতে ১৩টা হোম টেস্ট যেন অনেকটা টেলিফোন কোম্পানির বিনামূল্যে সুবিধা দেওয়ার মতো ব্যাপার। আপনি কাজের কাজ করলেন আবার পকেটেও টান পড়ল না। যেন এমন একটা পরীক্ষা যেখানে আপনি শুধু প্রশ্নপত্রই ঠিক করছেন না, নিজের নম্বরটাও নিজেই বসাচ্ছেন।
এ রকম একটা মেগা মরসুমের ক্রিকেট ভোজের ফিতে কাটা হচ্ছে নিউজিল্যান্ড সিরিজ দিয়ে। যারা দলের তিন স্লো বোলারকে কেন সামনে এগিয়ে দিচ্ছে, বোঝাই যাচ্ছে। যে তিন বোলার হল— ইশ সোধি, মিচেল স্যান্টনার আর মার্ক ক্রেগ। তবে তাঁদের সামনে একটা বড় চ্যালেঞ্জ হল ইকনমি রেট সব সময় কম রাখা। ক্লোজ ইন ফিল্ডার রেখে ব্যাটসম্যানদের ধৈর্যের পরীক্ষা নেওয়া। একটাও সেশনে শেকল খুলে দিয়েছ, কী বিপদ। স্কোরবোর্ডে রান কম থাকলে বিপক্ষের উপর চাপটা বেশি রাখা যায়।
নিউজিল্যান্ডের একটা সুবিধেও আছে। ওদের ডিপ ব্যাটিং লাইন আপ। সঙ্গে সিংহহৃদয়। প্রত্যেকে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করবে। ব্রেন্ডন ম্যাকালাম, স্টিভন ফ্লেমিংয়ের মতো পূর্বসূরিদের মধ্যে যে রকম দেখা যেত আর কী। কেউ এক জন আবার বলল, ওদের কোনও কোনও ব্যাটসম্যান সময় সময় মারকাটারি হয়ে উঠতেও পারে। মানে, স্পিনারদের উপর চড়াও হওয়া। তাতে কমপক্ষে একটা জিনিস হতে পারে, ফিল্ডিং ছড়িয়ে যাওয়া। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল নিউজিল্যান্ডের এই মিশনে কিছুটা সুবিধে হতে পারে কানপুরে। এক তো কানপুরে টেস্ট শুরুর প্রথম কয়েক দিন বল খুব একটা স্পিন করে না। তার উপর বর্ষার আতঙ্ক এখনও রয়েছে। মরসুমও শুরু হচ্ছে একটু তাড়াতাড়ি। তাই উইকেটও অতটা খটখটে থাকবে না। লড়াইটা তাই হবে ধৈর্যেরও। বিরাট কোহালিরাও খুব আক্রমণাত্মক হতে পারবে না। নিউজিল্যান্ডের এমন পেসার আছে যারা সকালের কন্ডিশনের সুবিধাটা তুলে নিতে পারে। ওপেনারদের ভূমিকাটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেএল রাহুল এখন যা পারফর্ম করছে তাতে ভারতের সুবিধা হওয়া উচিত। তবে হোম ব্যাটসম্যানদেরও কিন্তু স্পিনের সামনে অস্বস্তিতে পড়ার সুনাম যে নেই, তা কিন্তু নয়। ফুটওয়ার্ক, ধৈর্য আর দেখেশুনে খেলাটাই কিন্তু স্পিনের বিরুদ্ধে আসল মন্ত্র। (টিসিএম)