দায়িত্বে: ইস্টবেঙ্গলের কোচ হতে পারেন খালিদ জামিল।
সব কিছু ঠিকঠাক চললে ইস্টবেঙ্গলের কোচ হতে চলেছেন খালিদ জামিল। আজ বুধবার টিম নিয়ে কথা বলতে শহরে আসার কথা আইজল এফ সি-কে আই লিগ দেওয়া কোচের। মুম্বই থেকে ফোনে মঙ্গলবার খালিদ স্বীকারও করলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল থেকে যে চুক্তিপত্র আমাকে পাঠানো হয়েছিল, তার বেশির ভাগ শর্তেই রাজি আছি জানিয়ে তা পাঠিয়ে দিয়েছি। দু’একটি বিষয়ে কথা বলতে যাচ্ছি বুধবার। আমি মুম্বইতে ফেডারেশনের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে আসা ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের বলেছিলাম, টিম নিয়ে কথা বলতে কলকাতায় যাব।’’
প্রথমে ডেরেক পেরিরাকে কোচ করার কথা ভেবেছিলেন লাল-হলুদ কর্তারা। কিন্তু ডেরেক আইএসএলের ক্লাব গোয়া এফ সি-র সহকারী কোচ হয়ে যাওয়ায় খালিদকে প্রস্তাব দেওয়া হয়। খালিদ চাইছিল আইএসএলের ক্লাব মুম্বই সিটি এফ সি। এবং সেখানে বড় অঙ্কের টাকার টোপ দেওয়া হয়েছে খালিদকে। সে জন্যই ইস্টবেঙ্গলের প্রস্তাব পাওয়ার পরও তা নানা ভাবে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন এ বছর ফেডারেশনের বিচারে দেশের সেরা কোচ। কিন্তু তা সত্ত্বেও লাল-হলুদ কর্তারা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে গিয়েছেন। খালিদকে চূড়ান্ত করতে ইস্টবেঙ্গলের আগ্রহের কারণ কম বাজেটে প্রতিশ্রুতিমান ও অনামী ছেলেদের নিয়ে যে ভাবে অবনমন থেকে ফিরে আসা পাহাড়ি দলকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন এই তরুণ কোচ, তা কখনও হয়নি ভারতীয় ফুটবলে।
অগস্টের শুরুতেই শুরু হওয়ার কথা কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ। ফলে অন্তত তিন সপ্তাহ আগে শুরু করতে হবে অনুশীলন। যে-হেতু ইস্টবেঙ্গল পুরো মরসুমের জন্য খালিদকে কোচ চাইছে, তাই তাঁরা কোচের ব্যাপারটা মিটিয়ে ফেলতে আগ্রহী যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। ক্লাব সূত্রের খবর, চুক্তি পাকা হয়ে গেলেও খালিদের সঙ্গে টাকার অঙ্ক নিয়ে সামান্য সমস্যা রয়েছে। কর্তাদের আশা, সেটা নিয়ে সমস্যা হবে না।
আরও পড়ুন: ক্যানসার জয় করেই মস্কোতে পদক দুই খুদের
দেশের কনিষ্ঠতম আই লিগ জয়ী কোচ আজ শহরে এলেও তিনি-ই যে চূড়ান্ত, সরকারি ভাবে তা অবশ্য জানাতে চাইছেন না ইস্টবেঙ্গলের কোনও কর্তাই। এক কর্তা বললেন, ‘‘ফুটবলার থাকার সময় পার্ক সার্কাসের এক হোটেলে খালিদকে তুলে এনে রেখে দেওয়ার পরও ওকে খেলাতে পারিনি। তবে এটুকু বলতে পারি, আমাদের পাঠানো প্রায় সব শর্তই ও মেনে নিয়েছে। বাকি যা আছে তা মিটে যাবে আশা করছি।’’ খালিদ যে ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব নিতে চলেছেন সেটা জানিয়ে দিয়েছেন আইজল কর্তাদেরও। তাই নতুন কোচের সন্ধানে নেমেছে পাহাড়ি ক্লাবের কর্তারা।
কোচ এবং দল গঠনে ইস্টবেঙ্গল অনেকটা এগিয়ে গেলেও মোহনবাগানের কোনও হেলদোল নেই। তাদের স্পনসর সমস্যাও মেটেনি। গত তিন বছর যিনি টিম গড়ার টাকা দিতেন সেই প্রেসিডেন্ট টুটু বসু পদত্যাগ করেছেন। তার পর কর্মসমিতির বৈঠক কবে ডাকা হবে কেউ জানে না। তাই গত তিন বছরের কোচ সঞ্জয় সেনের ভবিষ্যৎ কী তা-ও কেউ বলতে পারছেন না। তেরো বছর পর আই লিগ দেওয়া কোচকে এ বারও দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত কর্তারা। স্পনসর না থাকায় কম বাজেটের টিম করতে চাইছে সবুজ-মেরুন। অন্তত মুখে সে রকমই বলা হচ্ছে। সঞ্জয়কে সরানো হলে কম বাজেটের দোহাই দেওয়া হবে বলে খবর। কারণ সাফল্যের বিচারে তাঁকে সরানো হলে নানা বিতর্ক হবেই।
এ দিকে প্রায় তেইশ বছর পর ইস্টবেঙ্গলের ফুটবল সচিব পদে নতুন মুখ আসতে চলেছে। সন্তোষ ভট্টাচার্যের জায়গায় দায়িত্ব নিচ্ছেন রাজা গুহ। সোমবার ছিল ক্লাব নির্বাচনে নমিনেশন জমা দেওয়ার শেষ দিন। এ বার অবশ্য কোনও নির্বাচন হচ্ছে না। কারণ শাসক গোষ্ঠীর প্যানেলই জমা পড়েছে শুধু। রাজা ছাড়া ফুটবল সচিব পদে আর কেউই দাঁড়াননি। নিজের দীর্ঘ দিনের পদ ছেড়ে দিলেও সন্তোষবাবু কর্মসমিতিতে থাকছেন। সচিব বা অন্য বড় কোনও পদে বদল হচ্ছে না এ বার। কর্মসমিতিতে নতুন মুখ অবশ্য আসছেন কয়েক জন।
ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানকে এ বার আই লিগ খেলতে হবে। দুই প্রধানের সামনে আর কোনও রাস্তা খোলা নেই। কিন্তু কাদের সঙ্গে খেলবে তাঁরা? বেঙ্গালুরু এফ সি এবং ডি এস কে শিবাজিয়ান্স নেই। জানা গিয়েছে, তাদের জায়গায় কেরল এবং বেঙ্গালুরুর দুটো টিম নেওয়া হবে।