লড়াইয়ের মহড়া শুরু হয়ে গেল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবে

ডার্বির আগে ইস্টবেঙ্গলে খালিদের বিশেষ ক্লাস

সকাল সওয়া ন’টা। ফুটবলারদের নিয়ে মাঠে নামলেন লাল-হলুদ কোচ। অথচ ডার্বির তিন দিন আগে অনুশীলনে নেই প্রথম দলের কোনও ফুটবলার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:২৯
Share:

অনুশীলন: আই লিগ ডার্বিতে বাগানকে টেক্কা দিতে প্রস্তুতি চলছে ইস্টবেঙ্গল মাঠে।ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

আই লিগে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ডার্বির তিন দিন আগে লাল-হলুদ শিবিরে আশ্চর্য বৈপরিত্য।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ময়দানের ক্লাব তাঁবুতে সমর্থকদের ভিড়। তুঙ্গে টিকিটের চাহিদা। কিন্তু কোচ খালিদ জামিলকে দেখে বোঝা যাচ্ছে, তিনি দ্বৈরথের প্রস্তুতিতে মগ্ন।

সকাল সওয়া ন’টা। ফুটবলারদের নিয়ে মাঠে নামলেন লাল-হলুদ কোচ। অথচ ডার্বির তিন দিন আগে অনুশীলনে নেই প্রথম দলের কোনও ফুটবলার। অর্ণব মণ্ডল, গুরবিন্দর সিংহ, সুরাবুদ্দিন মল্লিক-সহ দ্বিতীয় দলের ফুটবলারদের অনুশীলন করালেন ঘণ্টা দু’য়েক ধরে। আইজল এফসি-র বিরুদ্ধে রক্ষণের ভুলেই দু’টো গোল খেয়ে জয় হাতছাড়া হয়েছে। এ দিন তাই সে দিনের রিজার্ভ বেঞ্চে থাকা ডিফেন্ডার নিয়ে আলাদা অনুশীলন করালেন তিনি। তবে ব্রাজিলীয় ডিফেন্ডার এদুয়ার্দো ফেরেইরা মাঠে এলেও অনুশীলন করেননি। কোচের সঙ্গে কথা বলে উঠে যান। খালিদ বিশেষ অনুশীলন করালেন অর্ণব-গুরবিন্দরকে সামনে রেখে। রবিবার মোহনবাগানের বিরুদ্ধে রক্ষণ শক্তিশালী করতে এই দুই অভিজ্ঞ ডিফেন্ডারকে খেলানোর ভাবনা যে শুরু করে দিয়েছেন, তার ইঙ্গিত এ দিনই পাওয়া গিয়েছে।

Advertisement

অনুশীলন শেষ হওয়ার পরে একে একে ক্লাবে পৌঁছলেন মাহমুদ আল আমনা, কাতসুমি ইউসা-রা! কেন? ব্যাপারটা স্পষ্ট হল একটু পরেই। একেবারে স্কুলের ছবি। সাংবাদিক সম্মেলন কক্ষে ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর নিয়ে বসে রয়েছেন ‘শিক্ষক’ খালিদ। ছাত্র ফুটবলাররা তাঁর ডাকের অপেক্ষায় বসে রয়েছেন কাফেটেরিয়াতে। সওয়া এগারোটা নাগাদ শুরু হল খালিদ ‘স্যার’-এর ক্লাস। একে একে ডেকে পাঠাতে শুরু করলেন আমনা, কাতসুমি, উইলিস প্লাজা-দের। আইজল এফসি ম্যাচে কারা কী ভুল করেছেন, তা প্রজেক্টরের মাধ্যমে বড় স্ক্রিনে দেখালেন লাল-হলুদ কোচ।

আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গল রক্ষণ ভাঙবোই, ডার্বির আগে হুঙ্কার ডিকাদের

টিম মিটিংয়ে সকলের সামনে ভুল ধরিয়ে দেওয়া খালিদের একেবারেই পছন্দ নয়। তিনি প্রত্যেক ফুটবলারকে আলাদা করে ডেকে আইজল ম্যাচ বিশ্লেষণ করলেন। শুধু তাই নয়। কী ভাবে খেললে ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে না, সেটাও দেখিয়ে দিলেন। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ক্লাস নিয়ে ফুটবলারদের ছুটি দিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ।

ঘণ্টা দু’য়েক অনুশীলনের পর লম্বা ক্লাস। ফুটবলাররা রীতিমতো বিধ্বস্ত। ক্লান্ত সকাল থেকে ক্লাব তাঁবুতে হাজির হওয়া সমর্থকরাও। হঠাৎই বদলে গেল আবহ। বাড়ি ফেরার আগে সমর্থকদের আশ্বস্ত করে এদুয়ার্দো বললেন, ‘‘সনি নর্দে একা খেলবে না। মোহনবাগানের পুরো দলটাই শক্তিশালী। তা ছাড়া ম্যাচটা তো হবে ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগানের মধ্যে। আমার সঙ্গে সনির লড়াই নয়।’’

গত মরসুমের ডার্বিতে মোহনবাগানেই ছিলেন এদুয়ার্দো। আই লিগে শিলিগুড়ির ডার্বিতে দুর্দান্ত খেলে আটকে দিয়েছিলেন উইলিস প্লাজা-দের। এ বার তিনি লাল-হলুদে। তার উপরেই মূল দায়িত্ব থাকবে সনি-দের আটকানোর। এদুয়ার্দো বললেন, ‘‘আমরা এই মুহূর্তে শুধু নিজেদের নিয়েই ভাবতে চাই। আমি এই ক্লাবে এসেছি আই লিগ জিততে। অন্য কোনও দিকে মন দিতে চাই না।’’

রবিবারের ডার্বিতে নিজেকে প্রমাণ করতে মরিয়া প্লাজা-ও। গত বছর দুর্দান্ত শুরু করেও ছন্দ হারিয়ে ফেলেছিলেন। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ত্রিনিদাদ ও টোব্যাগো জাতীয় দলের স্ট্রাইকার বলেছেন, ‘ডার্বিতে গোল করবই। আগে মনঃসংযোগ নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। এ বার ফুটবলেই ডুবে আছি।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘আমার স্ত্রী সন্তানসম্ভবা। ভাই আমার উপর নির্ভরশীল। তাই দায়িত্ব এখন অনেক বেড়ে গিয়েছে।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন