মহড়া: ফিটনেস ট্রেিনং সনি নর্দের। শনিবার সকালে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
রেড রোডের প্রজাতন্ত্র দিবসের জমকালো কুচকাওয়াজ বা ক্লাব তাঁবুর বাইরে সবুজ-মেরুন জনতার অসংখ্য প্রত্যাশার জ্বলজ্বলে মুখের সঙ্গে ওই ঘরটার কোনও মিল নেই!
একশো আঠাশ বছরের মোহনবাগান তাঁবুর সব ঘরে আলো জ্বলছে। শুধু ওই ঘরটি ছাড়া!
অন্ধকার ঘরে নিজের দুই সহকারীকে নিয়ে বসে আছেন খালিদ জামিল। সামনে একটা বোর্ড। বাইরের আলো ঠিকরে এসে পড়ছে সেই বোর্ডের উপর। আই লিগের খেতাব থেকে দূরে চলে যাওয়ার পর অন্ধকার ঘোচাতে যে আলোর খোঁজে আজ, রবিবার যুবভারতীতে নামছেন খালিদ। কাচের বাইরে থেকে বোঝাই যাচ্ছিল তিনি আলোচনা করে চলেছেন ডার্বির রণনীতি নিয়ে। সন্ধ্যা নেমেছে ময়দানে। তাতেও অবিচল খালিদ।
পাশের রাস্তায় সকালের ট্যাবলো প্রদর্শনী চলছে যখন, তাঁবুতে তখনই চলে এসেছিলেন খালিদ। তার পরে বেলা সাড়ে বারোটা থেকে এক ঘণ্টার অনুশীলন। সেটা শেষ করে বিকেল সাড়ে তিনটে পর্যন্ত দফায় দফায় ফুটবলারদের সঙ্গে আলোচনা। দিপান্দা ডিকাদের মানসিকভাবে চাঙ্গা করার জন্য যা করে থাকেন খালিদ। মোহনবাগানের এক প্রবীণ সদস্য তাঁবুর বারান্দায় বসে বিস্মিত ভাবে বলছিলেন, ‘‘বহু কোচ দেখলাম পঁচাত্তর বছরের জীবনে। দল নিয়ে এ রকম ডুবে থাকা কোনও কোচ দেখিনি। অমল দত্তকে দেখতাম দু’বেলা অনুশীলনের সময় দুপুরে ক্লাব তাঁবুর বেঞ্চিতে শুয়ে থাকতেন।’’ হয়তো খালিদ সম্পর্কে তাঁর ধারণা কম। মুম্বই নিবাসী কোচ যে এ রকমই।
জীবনের প্রথম ডার্বি জেতার জন্য কী করতে চান, তা অবশ্য রেড রোডের এ দিন সকালের সেনাদের অস্ত্র প্রদর্শনীর মতো দেখিয়ে দিয়েছেন খালিদ। জবি জাস্টিন, টোনি ডোভালদের বিপক্ষে শুরুতে কোনও ঝুঁকি নিতে চান না সবুজ-মেরুন কোচ। দায়িত্ব নেওয়ার পর যে ফর্মেশনে দল নামিয়ে পরপর দুটো ম্যাচ জিতেছিলেন সেটাই রাখছেন ডার্বিতে। সামনে ডিকাকে একমাত্র স্ট্রাইকার করে, মাঝমাঠ জমাট রেখে ৪-৫-১ এ দল সাজাচ্ছেন তিনি। পাঁচ বিদেশির তিন জনই মাঝমাঠে। সনির সঙ্গে ইউতা কিনয়োয়াকি এবং ওমর এলহুসেইনি। পরে পরিস্থিতি বুঝে ইউতা বা ওমরকে তুলে হেনরি কিসেক্কাকে হয়তো নামাবেন। অনুশীলনে আরও একটি বিষয়ে জোর দিতে দেখা গেল তাঁকে। কর্নার এবং ফ্রি-কিক অনুশীলন। ইস্টবেঙ্গলের লালরিনডিকা রালতেদের ফ্রি কিক রুখতে ও নিজেদের সেট-পিস থেকে সাফল্য আনা, দুটোতেই শান দিয়ে রাখলেন তিনি।
আরও পড়ুন: খালিদ না আলেসান্দ্রো, কাল ডার্বিতে বাজিমাত করবেন কোন কোচ
কোচ বা ফুটবলাররা এ দিন কথা বলেননি। সনি নর্দে বলেও গেলেন, ‘‘কোচ আমাদের কথা বলতে বারণ করেছেন।’’ সনি নিজেও অবশ্য তাই করছেন। অনুশীলনের পর নাগাড়ে বল মেরে গেলেন গোলে। খালিদের মতো হাইতি মিডিয়োরও যে দেখিয়ে দেওয়ার ডার্বি আজ।