মিচেলের হেডেই দু’গোল ইস্টবেঙ্গলের। —নিজস্ব চিত্র।
ইস্টবেঙ্গল ২ (মিচেল)
কাস্টমস ০
ইস্টবেঙ্গল দুই
মিচেল দুই
প্রথমটি ৭৮ মিনিটে। দ্বিতীয়টি অতিরিক্ত সময়ে।
বুধবার ইস্টবেঙ্গলকে জেতালেন যিনি তিনি একজন ডিফেন্ডার। জোড়া গোল করে অবশ্য স্ট্রাইকার হওয়ার কোনও স্বপ্ন তিনি দেখছেন না। বরং নিজের ডিফেন্সিভ কোয়ালিটি বাড়াতে তিনি বদ্ধপরিকর। তবুও সুযোগ পেলে যে আবারও গোল করবেন সেটাও বুঝিয়ে গেলেন ম্যাচ শেষে। উচ্চতা অনেকটা হওয়ায় উঁচু হয়ে আসা বলগুলো খুব সহজেই মাথায় পেয়ে যান ডিওন মিচেল। তাই সেট পিস পেলে আর কথা নেই। সোজা রক্ষণ ছেড়ে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে পড়েন। তার পরই একটা সঠিক বলকে কী ভাবে গোলে পাঠাতে হয় তিনি যে সেটা খুব ভাল করে জানেন তা প্রমাণ হয়ে গেল বুধবার বিকেলে। একটি ক্রস আর একটি ফ্রিকিককে গোলে রূপান্তরিত করলেন মিচেল। আর ম্যাচ শেষে বলে গেলেন, ‘‘সঠিক জায়গায় বল পেলে আবারও গোল করব।’’ তবে অবশ্যই রক্ষণ সামলে।
আরও পড়ুন
ফুটবলের মক্কা সাজছে বিদেশি ঢঙে, যুবভারতী টেক্কা দেবে এতিহাদকেও
বিরাটের আস্তানায় হঠাৎ হাজির অনুষ্কা
৬৭ মিনিটে কেভিন লোবো মাঠে নামতেই যেন খোলস খুলে বাইরে এল ইস্টবেঙ্গল। জয় এল ঠিকই কিন্তু জয়ের পিছনে রয়ে গেল একগুচ্ছ প্রশ্ন। যে প্রশ্নের উত্তর সহজেই এড়িয়ে গেলেন কোচ খালিদ জামিল। বরং জানিয়ে গেলেন তিনি খুশি। গোল এসেছে, গোলের সুযোগও তৈরি হয়েছে এটাই বা কম কিসে? আর একটু সময় লাগবে পুরো দল গুছিয়ে উঠতে। ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে এই মরসুমে প্রথম নামলেন প্রাক্তন অধিনায়ক গুরবিন্দর সিংহ। তিনিও সেই একই গান গেয়ে গেলেন। ‘‘নতুন দল আরও একটু সময় চাই।’’ আর কোচ খালিদের মন্তব্য, ‘‘আমি তো খুশি। গোলের সুযোগ তো তৈরি হয়েছে প্রথমার্ধে।’’ কোনটাকে গোলের সুযোগ বললেন তা অবশ্য বোঝা গেল না। কাস্টমসের মতো দলের বিরুদ্ধে ৭৮ মিনিট পর্যন্ত আটকে থাকল ইস্টবেঙ্গল। আর দলের দুই স্ট্রাইকার? প্রশ্ন থেকেই গেল। সুহেরকে দেখা গেল এক, দু’বার গোলের জন্য ছটফট করতে। কিন্তু উইলিস প্লাজা? কেন তাঁকে মনে ধরেছে ইস্টবেঙ্গল কোচিং টিমের, এটাও একটা বড় প্রশ্ন। যদিও পুরো ম্যাচ না খেলিয়েই প্লাজাকে তুলে নামাতে বাধ্য হলেন প্রকাশ সরকারকে।
ইস্টবেঙ্গল বনাম কাস্টমস ম্যাচের একটি মুহূর্ত। বুধবার ইস্টবেঙ্গল মাঠে।
প্রথমার্ধের ৪৫ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলকে যে ক’বার নড়াচড়া করতে দেখা গেল তা পুরোটাই ডান প্রান্তে। বাম প্রান্ত ততটাই অচল। মাঝ মাঠে খেলাটাই তৈরি হল না ৬০ মিনিট পর্যন্ত। বরং দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোলের সুযোগ চলে এসেছিল কাস্টমসের সামনে। যা হারাতে হল অনভিজ্ঞতার জন্য। লাইনের বাইরে এসে বল হাত দিয়ে ধরলেও ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার লুই ব্যারেটোকে কার্ড দেখানো হল না। যদিও সেই প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ খালিদ জামিল। রেফারি যেন কিছুই দেখতে পেলেন না। ম্যাচ শেষে কাস্টমস কোচ রাজীব দের গলায় একরাশ হতাশা। বলছিলেন, ‘‘সবাই তো দেখলেন কী হল। আমি আর নতুন করে কী বলব।’’
ম্যাচ শেষে ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের কুল ডাউন।
দীর্ঘদিন পর ফুটবলে ফিরলেন কেভিন লোবো। সেই আগের মতো চেনা ছন্দ না থাকলেও এখনও নেমে খেলার মোর যে তিনি ঘুরিয়ে দিতে পারেন সেটা আবারও প্রমাণ হল। তিনি নামার পর থেকেই মাঝ মাঠ থেকে গোলের বল তৈরি হতে শুরু করল। শেষ গোলের পিছনে ভূমিকাও রেখে গেলেন। সেই মাপা ফ্রিকিক আবার দেখা গেল। ইস্টবেঙ্গল মাঝ মাঠকে নেতৃত্ব দিতে হয়তো আরও একটু সময় লাগবে। কিন্তু তার আগে পর্যন্ত যাঁরা ছিলেন তাঁরা কেউই সেই ভরসাটা দিতে পারেননি। শেষ বেলায় কেউ তো দিলেন। রালতের পরিবর্তে নেমে সুরাবুদ্দিন মল্লিকও আশা জাগালেন। সেই পুরনো, চেনা নামেই না শেষ পর্যন্ত ভরসা রাখতে হয় ইস্টবেঙ্গলকে। প্রথম দুই ম্যাচে ভাল জায়গায় রয়েছে ইস্টবেঙ্গল।