Sports News

ছন্নছাড়া ফুটবল শেষেও তিন গোলে জয় মোহনবাগানের

মরসুমের শুরুর ৯০ মিনিটে জয় এল ঠিকই কিন্তু থেকে গেল একগুচ্ছ প্রশ্ন। কলকাতার লিগের প্রথম ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল জিতেছিল ৪-১ গোলে। মোহনবাগান জিতল ৩-০তে। দুই বড় ক্লাবের শুরুর লড়াইটা প্রায় সমানে সমানেই হল। ইস্টবেঙ্গলের চার তো মোহনবাগানে তিন।

Advertisement

সুচরিতা সেন চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৭ ২১:০৫
Share:

মোহনবাগান বনাম সাদার্ন সমিতি ম্যাচের একটি দৃশ্য। —নিজস্ব চিত্র।

কলকাতা লিগ

Advertisement

মোহনবাগান ৩ (ক্রোমা, আজহারউদ্দিন, শিলটন সিডনি)

সাদার্ন সমিতি ০

Advertisement

মাঠ ছাড়তে ছাড়তে একটাই আফসোস শোনা যাচ্ছিল, ‘ইস ৪ গোল হল না।’

চার গোল না হওয়ার পিছনের কারনটা কিন্তু বেশ মজার। অতিরিক্ত সময়ের খেলা চলছে তখন। নিখিল কদমের একটা কর্নারে বক্সের মধ্যেই ব্যাকহেড করেছিলেন কিংসলে। সেই হেড এসে পড়েছিল চেস্টারপলের পায়ে। গোলের ভিতরেও ঢুকে গিয়েছিল বল। কিন্তু মাটিতে ড্রপ করার আগেই সেই বল গোলের ভিতর থেকে বাইরে বের করে দেন স্বয়ং কামো। ম্যাচের শেষের এই দৃশ্য কিন্তু মজার কারণ মোহনবাগান ম্যাচ জিতে নিয়েছে ৩-০ গোলে। না হলে টের পেতেন কামো কত ধানে কত চাল।

আরও পড়ুন

অভিষেক ম্যাচে জোড়া গোল করে নতুন নায়ক লুকাকু

ফুটবলটা কিন্তু একই আছে: নেমার

মরসুমের শুরুর ৯০ মিনিটে জয় এল ঠিকই কিন্তু থেকে গেল একগুচ্ছ প্রশ্ন। কলকাতার লিগের প্রথম ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল জিতেছিল ৪-১ গোলে। মোহনবাগান জিতল ৩-০তে। দুই বড় ক্লাবের শুরুর লড়াইটা প্রায় সমানে সমানেই হল। ইস্টবেঙ্গলের চার তো মোহনবাগানে তিন। সপ্তাহের প্রথম দিন কিন্তু মোহনবাগান গ্যালারি ছিল ভর্তি। যে যেখানে ছিল সেখান থেকেই পৌঁছে গিয়েছিলেন প্রিয় দলকে সমর্থন করতে। ২২ হাজারের গ্যালারির প্রায় পুরোটাই ছিল ভর্তি। সবুজ-মেরুণ মশাল জ্বালিয়েই খেলার শুরু। শেষটাও হল জয়ের উল্লাসেই। তার মধ্যে হোসে র‌্যামিরেজ ব্যারেটোকে নিয়েও মাততে দেখা গেল বাগান সমর্থকদের। পুরো ম্যাচটাই বসে দেখলেন তিনি। কিছুটা নস্টালজিকও শোনাল তাঁর গলা। সেই মোহনবাগান মাঠ, সেই মোহনবাগান গ্যালারি আর সেই মোহন জনতার তাঁকে ঘিরে উচ্ছ্বাস। সবই চেনা কিন্তু একটু হলেও অন্যরকম অনুভূতি। জার্সিটা পরে নামার দিন পেড়িয়ে এসেছেন অনেক আগেই। তবুও সুযোগ পেলেই পুরনো ক্লাবে চলে আসেন। এ দিনও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। সদস্য গ্যালারিতে বসে দেখলেন পুরো ম্যাচ। যদিও মোহনবাগানের এই খেলা দেখে মনে মনে ব্যাথাই পাওয়ার কথা।

ফ্লাডলাইটে মোহনবাগান মাঠে কলকাতা লিগ।

শুরু থেকে শেষ, কেটে গেল ম্যাচের তাল খুঁজে পেতে। পুরোটাই প্রায় ছন্নছাড়া। সেটপিস থেকে ভাগ্যিস গোল এল। কতবার যে গ্যালারিতে বল পাঠালেন বাগান ফুটবলাররা তার আর হিসেব নেই। এর মধ্যেই এল তিন গোল। প্রতিপক্ষ সাদার্নের অবস্থা ছিল আরওই খারাপ। অধিনায়ক দীপঙ্কর রায় পেনাল্টি মিস না করলে দক্ষিণ কলকাতার এই ক্লাব ব্যবধান কমাতে পারত। বরং প্রথমার্ধে গোল হতে দেয়নি সাদার্ন রক্ষণ ও দীর্ঘাকায় গোলকিপারের হাত। যদিও চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় গোলকিপার ভাস্কর রায়কে। প্রায় ছ’মিনিট খেলা বন্ধ থাকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নষ্ট হওয়া সময় পুরো খেলাননি রেফারি। মাত্র ৫ মিনিট অতিরিক্ত সময়ই দেওয়া হয়েছিল।

খেলা শুরুর আগেই মোহনবাগান গ্যালারিতে জ্বলল মশাল।

রিকি লালানমাওমার দুটো কর্নার কাজে লেগে গিয়েছিল মোহনবাগানের। ৫২ মিনিটে প্রথম গোলটি এল কর্নার থেকে কিংসলের মাথা হয়ে ক্রোমার শটে। দ্বিতীয় গোল ৬৯ মিনিটে আজহারউদ্দিনের। তার আগেই অবশ্য পর পর দু’বার গোলে শট নিয়েও আটকে গিয়েছেন ক্রোমা। দ্বিতীয় সেভের পর সেই বল পেয়ে গিয়েছিলেন আজহার। মরসুমের শুরুতেই নিজের নামের পাশে গোল লিখে নিয়ে ভরসার মর্যাদা দিলেন অনূর্ধ্ব-২৩ এঈই ফুটবলার। শেষ গোলকি এল ৮৪ মিনিটে শিলটনসিডনি ডি’সিলভার পা থেকে। দলরাজের ক্লিয়ার করা বলকেই জটলার মধ্যে থেকে গোলে পাঠান শিলটন। প্রথমার্ধের ছন্নছাড়া ফুটবলের কিছুটা বদল হয় দ্বিতীয়ার্ধে। আক্রমণে ওঠে মোহনবাগান। মিসও কর তার মধ্যে থেকেই গোলও আসে। আজকের খেলা দেখার পর কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী হয়তো দল নিয়ে আরও একটু পরীক্ষা-নিরিক্ষা করবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন