বিশ্বকাপে যাচ্ছেন কুলদীপ ও চহাল, ইঙ্গিত কোহালির

তখন থেকেই কোহালির জোড়া স্পিন অস্ত্র কুলদীপ এবং চহাল। এবং, দু’জনে টানা ম্যাচ জিতিয়ে চলেছেন ভারতকে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:০০
Share:

নায়ক: সিরিজে ৩-০ এগিয়ে দেওয়ার দুই কুশীলব কুলদীপ ও যুজবেন্দ্রকে অভিনন্দন সতীর্থদের। —ফাইল চিত্র।

বিশ্বকাপের জন্য যে তিনি দুই ‘রিস্ট স্পিনার’-কে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে, তা বুঝিয়ে দিলেন বিরাট কোহালি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ছয় ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজে ৩-০ এগিয়ে গিয়েছে কোহালির ভারত। তার পরেই অধিনায়ক বলে দিয়েছেন, ২০১৯ বিশ্বকাপে ‘এক্স-ফ্যাক্টর’ হতে চলেছেন যুজবেন্দ্র চহাল এবং কুলদীপ যাদব। গত বছর জুনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হারের পর থেকে আর. অশ্বিন এবং রবীন্দ্র জাডেজাকে বাদ দিয়ে ওয়ান ডে নকশা করা শুরু করে ভারত। শ্রীলঙ্কা সিরিজ থেকেই আর সিনিয়র দুই স্পিনারকে খেলতে দেখা যায়নি।

Advertisement

তখন থেকেই কোহালির জোড়া স্পিন অস্ত্র কুলদীপ এবং চহাল। এবং, দু’জনে টানা ম্যাচ জিতিয়ে চলেছেন ভারতকে। বুধবার কেপ টাউনেও কোহালির অবিশ্বাস্য ১৬০-এর পরে ভারত তোলে ৩০৩-৬। আর দক্ষিণ আফ্রিকা গুটিয়ে যায় মাত্র ১৭৯ রানে। কুলদীপ এবং চহাল দু’জনেই চারটি করে উইকেট নেন। চলচি এক দিনের সিরিজে তিনটি ম্যাচে ব্যাটে যেমন আগুন ঝরাচ্ছেন কোহালি, তেমনই বল হাতে রহস্যের জাল বুনে চলেছেন যুজ-কুল রিস্ট স্পিন জুটি। তিন ম্যাচে তাঁরা মিলিত ভাবে নিয়েছেন ২১ উইকেট। গড় অবিশ্বাস্য— ৯.০৫। কথা উঠে গিয়েছে দুই তরুণ স্পিনারকে এ বার টেস্টেও খেলানো উচিত কি না?

কোহালি স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়েছেন যে, কুলদীপ এবং চহাল টেস্টের জন্য তাঁদের দাবি জোরাল করতে শুরু করেছেন। ‘‘টেস্টে ওদের সম্ভাবনার ব্যাপারটা নিয়ে এখনই হয়তো মাথা ঘামানোর সময় আসেনি। কিন্তু এটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে, ওরা নিজেদের দাবি জোরাল করতে শুরু করেছে। এ রকম কন্ডিশনে এসে এমন ধারাবাহিকতা নিয়ে বল করে যাওয়া এবং নিয়মিত ভাবে উইকেট তুলতে পারা— এ রকম আমরা আগে কখনও দেখিনি।’’ এখানেই না থেমে অধিনায়ক বলে চলেন, ‘‘ওদের দু’জনকে স্পিনের রহস্যের জাল বুনতে দেখাটা সত্যিই দারুণ ব্যাপার। আমার কোনও ভাষা নেই ওদের অবদান বোঝানোর জন্য।’’ আরও বলেন, ‘‘ওরা দু’জনেই খুব পরিশ্রম করছে উন্নতি করার জন্য। দু’জনেই খুব সাহসী চরিত্র। মার খেলেও উইকেট নেওয়ার মনোভাব ছেড়ে বেরিয়ে আসে না। পরের ম্যাচেই হয়তো ওরা ৭০ রান দিতে পারে। কিন্তু আমি জানি, আক্রমণ করতে থাকলে ওরা দু’তিনটে উইকেটও তুলে নেবে।’’

Advertisement

বুধবার ম্যাচ জেতার পরে সাংবাদিক সম্মেলনে আসা কোহালির সামনে এর পরেই ওঠে বিশ্বকাপের প্রসঙ্গ। অধিনায়ক বলে দেন, ‘‘বিশ্বকাপ আমরা দেশের বাইরে খেলব (২০১৯ বিশ্বকাপের আসর বসছে ইংল্যান্ডে)। আমার তাই মনে হয় ওরা দু’জনে বিরাট এক্স-ফ্যাক্টর হতে যাচ্ছে।’’ কোহালির কথায় পরিষ্কার ইঙ্গিত, ইংল্যান্ডে আগামী বছরের বিশ্বকাপে অশ্বিনদের চেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে কুলদীপ এবং চহাল-কেই।

আরও পড়ুন: ‘ওয়ান ডে-তে সর্বকালের সেরা বিরাটই’

দুই ভারতীয় ‘রিস্ট স্পিনার’-এর রহস্য উদ্ধার করতে গিয়ে জেরবার দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানেরা। ডুমিনি বলছেন, তাঁদের ফের টিম মিটিং করতে হবে কুলদীপদের রহস্য ভেদ করার জন্য। ১২৪ রানে তৃতীয় ওয়ান ডে হারার পরে ডুমিনির পর্যবেক্ষণ, ‘‘ওদের গুগলিটা আমরা কিছু বুঝেই উঠতে পারছি না। যথেষ্ট দক্ষতা দেখাতে পারিনি আমরা। আমাদের রণনীতিকে ওরা সফল হতে দেয়নি। খুবই বুদ্ধি করে মন্থির গতিতে বল করেছে ওরা।’’

ডুমিনি এ রকম বললেও ঘটনা হচ্ছে, শুধু কুলদীপের চায়নাম্যান বলটাই নয়, কোনও ডেলিভারিই ঠিক মতো বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা। সুনীল গাওস্কর বুধবার ম্যাচের পরে টিভি-তে বলছিলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানেরা হাত দেখেই খেলছেন না। অথচ, ভাল মানের স্পিন খেলার প্রথম শর্তই হচ্ছে, হাত দেখে খেলতে হবে। ‘‘লেগস্পিনার যখন গুগলি করে, তার হাতের তালুটা দেখা যায়। সেটা দেখেই বুঝতে হয় যে, গুগলি আসছে। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের দেখে মনে হচ্ছে, ওরা সেই ধৈর্য আর অধ্যাবসায়টুকুও দেখাতে নারাজ,’’ বলছিলেন গাওস্কর।

দুই স্পিনারের রহস্য ভেদ করার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা আপাতত তাকিয়ে এ বি ডিভিলিয়ার্সের দিকে। ওয়ান্ডারার্সে ‘পিঙ্ক ডে’ ক্রিকেট উৎসবে চোট সারিয়ে ফিরছেন এ বি। এখন তিনি যদি কোহালির জবাব হয়ে উঠতে পারেন!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন