‘‘...মুরলী বলেছে ওর আটশো টেস্ট উইকেটের রেকর্ড ভাঙবে অশ্বিন? বিশাল কমপ্লিমেন্ট কিন্তু। তবে আমার মনে হয়, অতটা হবে না।
ভাববেন না, তার মানে বলছি যে অশ্বিন খারাপ বোলার। আমার তো ওর বোলিং দেখতে এখন দারুণ লাগে। অশ্বিন খুব ভাল করেছে, ও সব ক্যারম বল-টল করা কমিয়ে দিয়ে। আসলে তোমার যদি অফস্পিনে ভাল কন্ট্রোল থাকে, ভেরিয়েশনের দরকার নেই। ওটা দিয়েই তুমি ব্যাটসম্যানকে মেরে দেবে। আমি দুসরাটা ভাল দিতে পারতাম। তাই বলে অফস্পিন থেকে কখনও সরে আসিনি।
যাক গে, অশ্বিন নিয়ে বলছিলাম। ওর বোলিং দেখতে ভাল লাগে বলছিলাম। কারণটা বলি। এখনকার দিনে তো দু’একজন বাদে তেমন চোখে টানার মতো স্পিনার দেখতে পাই না। আমাদের ইয়াসির শাহ আর ইন্ডিয়ার অশ্বিন— এদের বোলিংটা তাই দেখতে বেশ লাগে। কারণ এরা ব্যাটসম্যানকে আতঙ্কে রাখতে পারে। তুলনায় যেতে বললে দু’জনের মধ্যে অশ্বিনকেই এগিয়ে রাখব। চাইব, বিশ্বের সেরা স্পিনারদের লিস্টে ওরা দু’জন এক আর দু’নম্বর জায়গাটা বরাবর নিজেদের কাছে রেখে দিক।
আর মুরলীর বলা অন্যান্য কথার সঙ্গে আমি একমত। এই যে মুরলী বলছে, কুম্বলে আরও ভয়ঙ্কর করে দেবে অশ্বিনকে, ওটা আমিও মানি।
ইয়াসির তো পাল্টে গেল মুস্তাকের (মুস্তাক আহমেদ, বর্তমান পাকিস্তান বোলিং কোচ) হাতে পড়ে। অনিল তো সেখানে লেজেন্ড। অনিলের হাতে পড়ে অশ্বিন কতটা পাল্টাবে, একটা উদাহরণ দিয়ে বলি। ধরা যাক, একটা অন্ধকার ঘর। তার এক কোণে ব্যাট বল রাখা। এক কোণে খাবার। অন্য দু’টো কোণে বিছে আর সাপ রাখা আছে। কেউ যদি সেই অন্ধকারের মধ্যে ব্যাট-বল খুঁজতে যায়, তার সাপের কামড় খাওয়ারও আশঙ্কা থাকবে। কিন্তু ঘরে যদি আলো থাকে, সেটা হবে না। অশ্বিনের জীবনে অনিলের ইমপ্যাক্টটা এ রকমই হবে, আলোর মতো। অশ্বিন যদি কখনও কিছু নিয়ে সমস্যায় পড়ে, তার সমাধানে তো অনিলের মতো কাউকে লাগবে। ওর লেভেলে গিয়ে শোধরাতে হবে। পরিষ্কার বলছি, আজ যে অশ্বিনকে লোকে দেখছে, এক বছর পর তাকে আর দেখবে না। চিনবে এমন এক স্পিনার হিসেবে যাকে খেলা দুঃসাধ্য!
আমার মতে, যদি এ রকম ফর্ম চলে, যদি ফিট থাকে, কেরিয়ারের শেষে অশ্বিনের নামের পাশে শ’পাঁচেক উইকেট থাকা উচিত। মুরলী আসলে একটা জিনিস ধরেনি। ওর বডিটা। মুরলীর শরীরের গঠনটাই এ রকম যে, বড় চোট লাগবেই না। ক’বার চোটের কারণে বাইরে থেকেছে ও? সবার তো সে রকম হয় না। আল্লাহ্ না করুন, অশ্বিন কোনও চোট পায়। কিন্তু পেলে? আরও ছ’শো উইকেট নিতে গেলে সব মিলিয়ে দশ-পনেরো বছর খেলতে হবে। কিন্তু পাঁচশো হতেই পারে। আঠারো বার পাঁচ উইকেট তো এখনই।
আর সেটা হলেও বা কম কী? যদি ও পাঁচশো উইকেট নিয়ে শেষ করে, কুম্বলে-হরভজনের মতো বারবার বিপক্ষের হাত থেকে নিয়ে যেতে পারে ম্যাচ, বিশ্বের স্পিন-লেজেন্ডদের মধ্যে ঢুকে যাবে।...’’