কুশল মেন্ডিস: ব্যাটিং ১৬৯।
ইডেনে ২০০১-এ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারতের ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের ছায়া যেন শ্রীলঙ্কার পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে।
সে বার ম্যাচের মোড় ঘোরানো ইনিংস খেলেছিলেন ভিভিএস লক্ষ্মণ। এ বার সেই ভূমিকায় শ্রীলঙ্কার অখ্যাত ব্যাটসম্যান কুশল মেন্ডিস।
সেবার বিপক্ষে ছিল অস্ট্রেলিয়া। এ বারও তারাই।
প্রথম ইনিংসে ১১৭-য় অল আউট হওয়া শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে প্রায় দু’শো রানে এগিয়ে। হাতে চার উইকেট। প্রথম ইনিংসে ২০৩-এ শেষ হয়ে যাওয়া স্টিভ স্মিথের অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ হলে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট ইতিহাসেও ভারতের মতো একটা ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের অধ্যায় লেখা থাকবে। কুশল মেন্ডিসের মধ্যে শ্রীলঙ্কার ভিভিএস লক্ষ্মণকে দেখতে চান বলে এ দিন টুইট করেন বহু সমর্থক।
এ দিনের অভাবনীয় সেঞ্চুরির আগে যাঁর ক্রিকেট কেরিয়ারে মাত্র একটা প্রথম শ্রেণির সেঞ্চুরি ছিল, সেই শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন জুনিয়র বিশ্বকাপ ক্যাপ্টেন কুশল মেন্ডিস দলকে তৃতীয় দিনের শেষে ১৬৯ নট আউট। দ্বিতীয় ইনিংসে দলকে ১৯৭ রানে এগিয়ে দিয়েছেন। শুক্রবার পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে ব্যাট হাতে কুশল নামবেন মাত্র ন’টা টেস্টের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অফস্পিনার অলরাউন্ডার দিলরুয়ান পেরেরার সঙ্গে। টেস্ট ক্রিকেটে যাঁর সর্বোচ্চ ৯৫।
দিনের শেষে যে এমন এক ছবি দেখা যাবে সারা স্টেডিয়াম জুড়ে, তা ইনিংসের শুরুতে কেউ ভাবতেই পারেনি। স্কোরবোর্ডে যখন ৬-২, তখন ব্যাট হাতে নামেন কুশল। যিনি প্রথম ইনিংসে মাত্র সাত বল খেলতে পেরেছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে সেই মেন্ডিসই দীনেশ চণ্ডীমলের (৪২) সঙ্গে ১১৭-র পঞ্চম উইকেট পার্টনারশিপ খেলে দলের ড্রেসিংরুমে কুশল সংবাদ নিয়ে আসেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে যাঁর সবচেয়ে বড় ইনিংসটি ১০৮-এর, সেই কুশল মেন্ডিসের ব্যাট থেকে ১৬৯ রান আসা। তাও আবার এমন এক টেস্টে, যাতে দু’দলের আর কোনও ব্যাটসম্যানই হাফ সেঞ্চুরিও করতে পারেননি, এটা সম্ভবত কেউই ভাবতে পারেননি।
শ্রীলঙ্কার হাতে এখনও চার উইকেট। সঙ্গে দুটো দিনও। অলরাউন্ডার রঙ্গনা হেরথের এখনও ব্যাট করা বাকি। শেষ ইনিংসে অস্ট্রেলিয়াকে আড়াইশো-তিনশোর টার্গেট দিলে তাদের পক্ষে কাজটা মোটেই সোজা হবে না বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। আর সেই মুহূর্তেরই অপেক্ষায় সারা শ্রীলঙ্কা।