ভারতীয় বোর্ডের স্বীকৃতি চায় লক্ষদ্বীপ

দেশের অন্য কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মতোই রঞ্জি ট্রফি খেলতে চায় তারা। দেখিয়ে দিতে চায়, আরব সাগরের এই প্রত্যন্ত দ্বীপ থেকেও ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার মতো ক্রিকেটার তৈরি হয়। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৯ ০৪:২৩
Share:

প্রতিভা থেকেও লাভ হচ্ছে না লক্ষদ্বীপের। সে দ্বীপে একাধিক ক্রিকেট প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় বোর্ডের স্বীকৃতি পায়নি লক্ষদ্বীপ। গত বছরই, বোর্ডকে আবেদন করেন সে রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতরের পরামর্শদাতা রঞ্জিত কলরা। এ বছরও সেই একই আবেদন করা হয় সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত প্রশাসকদের কমিটি (সিওএ)-কে। কিন্তু এখনও কোনও জবাব পাওয়া যায়নি।

Advertisement

দেশের অন্য কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মতোই রঞ্জি ট্রফি খেলতে চায় তারা। দেখিয়ে দিতে চায়, আরব সাগরের এই প্রত্যন্ত দ্বীপ থেকেও ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার মতো ক্রিকেটার তৈরি হয়।

১৯৯২ সালে ক্রিকেট সংস্থা তৈরি হয় লক্ষদ্বীপে। ক্রিকেটের প্রতি উৎসাহ আন্দাজ করেই তা শুরু করা হয়। কিন্তু এখনও ভারতীয় বোর্ডের স্বীকৃতি পায়নি তারা। নিজেদের প্রতিভা তুলে ধরার জন্য এখনও ভরসা রাখতে হয় কেরল ক্রিকেট সংস্থার ওপর।

Advertisement

কোচি থেকে ৩৯৬ কিলোমিটার দূরত্ব লক্ষদ্বীপের। আরব সাগরের এই দ্বীপের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রচুর পর্যটক যান সে দ্বীপে। কোচি থেকে জাহাজ প্রতি খরচ হাজার টাকারও বেশি। পর্যটক হিসেবে এই খরচ কয়েক বার ব্যয় করা গেলেও নিয়মিত ক্রিকেট খেলতে আসার জন্য এত খরচ করা প্রায় অসম্ভব। তা হলে তাঁদের কী হবে? কোনও দিন রঞ্জি ট্রফির মতো প্রতিযোগিতায় খেলতে পারবেন তাঁরা?

দেশের সাতটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে শুধু দিল্লি ও পুদুচেরি ভারতীয় বোর্ডের স্বীকৃতি পেয়েছে। গত বারই সে স্বীকৃতি দেওয়া হয় পুদুচেরিকে। পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের মিজ়োরাম, নাগাল্যান্ড, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশকেও বোর্ডের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে জানা গিয়েছে যে, প্রতিবেশী দেশ মলদ্বীপকে সাহায্য করতে চায় ভারতীয় বোর্ড। যা দেখার পরে সিএবি যুগ্মসচিব অভিষেক ডালমিয়াকেও সাহায্য চান রঞ্জিত। অভিষেক সাহায্য করার চেষ্টা করেন। লক্ষদ্বীপ ক্রিকেটে সংস্থার সেই চিঠি সিওএ-কে পাঠান। তবুও কোনও জবাব পাওয়া যায়নি।

শনিবার রাতে লক্ষদ্বীপ থেকে ফোনে রঞ্জিত বলেন, ‘‘ভারতীয় বোর্ডকে একটাই অনুরোধ। প্রতিবেশী দেশের উদ্যোগ নেওয়ার আগে দেশের প্রতিকূল স্থানে নজর দিন। আমাদের দ্বীপে প্রতিভার অভাব নেই। কিন্তু সেই প্রতিভা তুলে ধরব কী ভাবে যদি আমাদের ছেলেরা সুযোগ না পায়?’’

জাহাজে লক্ষদ্বীপ থেকে কোচি যেতে সময় লাগে ১৫ থেকে ১৮ ঘণ্টা। সব সময় জাহাজ যেতে পারে না। কখনও ঘূর্ণিঝড়, কখনও প্রচণ্ড বৃষ্টি। বর্ষাকালে জাহাজ চলে না। জাহাজ ছাড়া বিমানের সাহায্য নিতে হয়। ঠিক সময় টিকিট কাটা না হলে তার দামও ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যায়। রঞ্জিত বলছিলেন, ‘‘কিন্তু ছেলেরা থেমে থাকছে না। চেষ্টা করে কোচি গিয়ে নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার। কিন্তু আর কত দিন কেরল আমাদের সাহায্য করবে? কেনই বা করবে?’’

লক্ষদ্বীপের পাশাপাশি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জও এখনও ভারতীয় বোর্ডের স্বীকৃতি পায়নি। অথচ মলদ্বীপে সাবা করিম ও অভয় শর্মাকে পাঠিয়ে তাঁদের সাহায্য করতে চায় বোর্ড। রঞ্জিত বলছিলেন, ‘‘মলদ্বীপকে সাহায্য করছে তাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু আমরা চাইব লক্ষদ্বীপেও যেন বোর্ডের প্রতিনিধি দল এসে এক বার ঘুরে যায়। তা হলেই তাঁরা বুঝতে পারবেন কেন বোর্ডের স্বীকৃতি পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে লক্ষদ্বীপ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন