অপেক্ষা... এটাই জীবনের কঠিনতম অংশ। তাই নয় কি? উইম্বলডনে যদি ঝমঝমে বৃষ্টি নামে, অল ইংল্যান্ডের লোকজনেরা তবু আমাদের একটা মোটামুটি ধারণা দেন কখন খেলা আবার শুরু হবে! কিন্তু যদি টিপটিপ বৃষ্টির মধ্যে সূর্যও লুকোচুরি খেলে চলে তখনই লকার রুমে অপেক্ষায় থাকাটা প্লেয়ারের কাছে যন্ত্রণার। এ রকম সময় ভিড় ঠাসা লকার রুমে দেখা যায় বিভিন্ন প্লেয়ার কী রকম নানা উপায়ে ম্যাচের থেকে নিজেরে মনটা সরিয়ে রাখে। যেমন ডেভিড ফেরার, যে আগের দিনই হেরে গিয়েছে সব সময় গল্পের বইয়ে মুখ গুঁজে রাখে। রাফায়েল নাদাল এ বার উইম্বলডনে না থাকলেও আগে বহু বার ওকে দেখেছি হেডফোন লাগিয়ে মিউজিকে ডুবে থাকতে। আবার নোভাক জকোভিচের মতো পারফেকশনিস্ট কালবিলম্ব না করে নিজের কিট গুটিয়ে উইম্বলডনের কাছেপিঠে প্রতি বার যে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকে ও, সেখানে সটান পাড়ি দেয় একটা টিপিক্যাল স্কুটিতে।
লকার রুমের এ রকম নানা অদ্ভুত ভাবভঙ্গির বাইরে প্লেয়ারের কাছে যেটা সবচেয়ে কঠিন ব্যাপার তা হল, বৃষ্টি থামার অপেক্ষার মাঝে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে পুরোপুরি ম্যাচ কন্ডিশনে থাকা। আরও স্পষ্ট ভাবে বললে ম্যাচ সিচুয়েশনে থাকতে পারা। কোনও ম্যাচ বৃষ্টিবিঘ্নিত বা ভেজা কোর্টে হলে খেলাটার রং পুরো উল্টে যাওয়ার প্রচুর সম্ভাবনা থাকে। বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকার সময় আপনি হয়তো ম্যাচে একটা অবস্থায় ছিলেন, তার পর কোর্টের কভার তোলার পর আবার যখন সেখানে নামলেন নিজেকে সম্পূর্ণ উল্টো পরিস্থিতিতে আবিষ্কার করতে পারেন। গত উইম্বল়ডনের ফাইনালিস্ট মুগুরুজা বা, গত বারের ডাবলস চ্যাম্পিয়ন রজার-তেকাউ জুটির আগের দিন অপ্রত্যাশিত হারের এটাও কিন্তু একটা বড় কারণ।
বৃষ্টির ধাক্কায় এখনই উইম্বলডনে জোর বেশি, বৃষ্টির জলেও যার ভেতরের আগুন নেভার নয়, সে-ই জয়ী হয়।
অপেক্ষার চিরকালীন ব্যালান্সিং ফ্যাক্টর তো এটাই। তাই না?