—ফাইল চিত্র।
সেই ১৯৯০ সালে তাঁর অভিষেক ঘটেছিল ডেভিস কাপে। ২৮ বছর পরে তিনি আজ এমন একটা কীর্তির মঞ্চে দাঁড়িয়ে, যেখান থেকে তাঁকে সরানো শুধু কঠিনই নয়, দুঃসাধ্য। ৪৪ বছর বয়সে ডেভিস কাপ ডাবলসে নিজের ৪৩তম জয় তুলে নিলেন তিনি— লিয়েন্ডার পেজ। এত দিন যুগ্মভাবে ইতালির নিকোলা পিয়েত্রাঞ্জেলির সঙ্গে একাসনে থাকার পরে শনিবার থেকে বিশ্বরেকর্ডের মালিক এখন চিরতরুণ লিয়েন্ডারই।
লিয়েন্ডার-রোহন বোপান্নার দুরন্ত জয় ভারতকে চিনের বিরুদ্ধে টাইয়ে ফিরিয়ে এনেছিল। যে ম্যাচে লিয়েন্ডাররা ৫-৭, ৭-৬ (৫), ৭-৬ (৩) ফলে হারিয়ে দেন মো জিন গং-জে জং জুটিকে। হয়তো বা চল্লিশোর্ধ তারকার লড়াই প্রেরণা জুগিয়েছিল তাঁর তরুণ সহযোদ্ধাদের। কারণ যাই হোক না কেন, রিভার্স সিঙ্গলসে রামকুমার রামনাথন এবং প্রজ্ঞেশ গুণেশ্বরণ জিতলেন। এবং ৩-২ ফলে চিনকে হারিয়ে ওয়ার্ল্ড গ্রুপ প্লে অফে উঠে গেল ভারত।
ভারতের এই প্রত্যাবর্তনের দিনে অবশ্য নায়ক এক জনই। লিয়েন্ডার। যাঁকে নিয়ে সচিন তেন্ডুলকর টুইট করেন, ‘এই গতিতে এগোতে থাকলে লিয়েন্ডার তো অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে। ডেভিস কাপের ইতিহাসে সব চেয়ে সফল ডাবলস খেলোয়াড় হওয়ার জন্য অভিনন্দন। দেশ তোমার জন্য গর্বিত, বন্ধু।’ আর লিয়েন্ডার নিজে কী বলছেন? সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘‘গর্বিত বোধ করছি। এই রেকর্ড আমি উৎসর্গ করছি আমার বাবা, আমার অভিভাবক, আমার মেয়ে আইয়ানা, সেই সব ডেভিস কাপ অধিনায়ক যাদের নেতৃত্বে আমি খেলেছি, এবং ডেভিস কাপে আমার সব ডাবলস সঙ্গীকে। এই রেকর্ড ভারতের।’’
লিয়েন্ডার আশা করছেন, তাঁর এই রেকর্ড ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করবে। ভারতের সব চেয়ে সফল টেনিস খেলোয়াড় বলেছেন, ‘‘এই রেকর্ড দেখে তরুণ প্রজন্ম যেন বিশ্বাস করতে শেখে, ভারতীয়দের বিশ্বসেরা হওয়ার ক্ষমতা আছে।’’ এর পরেই স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন ওঠে, এ বার কী? বিশ্বরেকর্ডের পরে অবসর নেওয়ার কি কোনও ভাবনা আছে? লিয়েন্ডারের জবাব, ‘‘দেশের জন্য আমি সব সময় আছি। আমি মনে করি, এখনও দলের তরুণ খেলোয়াড়দের উদ্বুদ্ধ করার ক্ষমতা আমার আছে। আমি এখনও ওদের থেকে সেরাটা বার করে আনতে পারি। পাশাপাশি ডাবলসে ভারতকে পয়েন্ট এনে দেওয়ার ক্ষমতাও আছে আমার।’’
দীর্ঘ ডেভিস কাপ জীবনে কোন ঘটনা স্মরণীয় হয়ে আছে? লিয়েন্ডার বলছেন, ‘‘একটা সময় আমি আর মহেশ (ভূপতি) টানা চব্বিশটা ম্যাচ জিতেছিলাম। আমি আর মহেশ যখনই একসঙ্গে খেলতে নেমেছি, নিজের মধ্যে ভুলবোঝাবুঝি ভুলে দেশের হয়ে খেলেছি। এ জন্যই মহেশকে আমি সম্মান করি।’’