কান্নায় ভেঙে পড়া লরিসকে সান্ত্বনা। ছবি: এএফপি।
তাঁর জন্যই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে হারতে হয়েছে লিভারপুলকে। লিভারপুলের শেষ রক্ষণের দায়িত্ব ছিল তাঁরই হাতে। কিন্তু যে ভাবে বেঞ্জিমা ও বেলের একটি গোল হজম করতে হয়েছে তাতে তিনি যে নিজেকেও ক্ষমা করতে পারছেন না। তার মধ্যে আসছে প্রাণনাশের হুমকি। তাঁর জীবন সংশয়ে। এই খবর পৌঁছে গিয়েছে পুলিশ প্রশাসনের কাছেও। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশে।
প্রাণনাশের হুমকির পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে নিয়ে চলছে চূড়ান্ত অপমানজনক সব আলোচনা। প্রথম গোলটি এসেছিল বেঞ্জিমার পা থেকে। বক্সের মধ্যে বল সরাসরি জমা হয়েছিল লিভারপুল গোলকিপার লরিস কারিউসের হাতে। সামনে তখন হতাশ বেঞ্জিমা।
লরিস এতটাই হাল্কা ভাবে বলটি থ্রো করলেন যে সেটা সোজা গিয়ে পড়ল বক্সের মধ্য়েই দাড়িয়ে থাকা বেঞ্জিমার পায়ে। সেই চলতি বলেই শট নিলেন বেঞ্জিমা। লরিসের কিছু করার ছিল না কারণ তিনি গোল ছেড়ে অনেকটাই বেরিয়ে এসেছিলেন বল ধরতে। গোলের বলটা তিনিই তুলে দিলেন রিয়েল মাদ্রিদকে।
আরও পড়ুন
‘কাপ জয়ের এই হ্যাটট্রিকের নায়ক জিদানই’
এর পর সমতায়ও ফিরেছিল লিভারপুল। কিন্তু আরও একটা ভুল করে বসলেন লরিস। বেলের দূরপাল্লার একটা দুর্বল শট হাতে ধরেও ফসকালেন। সেই বল সোজা চলে গেল গোলে। লিভারপুলে হারের পুরো দায় এখন তাঁরই ঘাড়ে। কিয়েভের মাঠে ম্যাচ শেষে কান্নায় ভেঙে পড়া লরিসের মনের কোণায় তখন থেকেই আশঙ্কাটা বাসা বাঁধতে শুরু করেছিল। মাঠ ঘুরে সমর্থকদের কাছে হাত জোড় করে ক্ষমাও চেয়েছিলেন। প্রতিপক্ষের ফুটবলাররা তাঁকে সান্ত্বনা দিলেও তাঁর দলের কেউই তাঁর পাশে দাঁড়াননি।
ম্যাচ শেষে এ ভাবেই কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন লরিস কারিউস।
এরকম ঘটনা, নতুন কিছু নয়। এই লরিসের প্রাণনাশের হুমকি ফুটবল বিশ্বে আবার ফিরিয়ে এনেছে আন্দ্রে এস্কোবারের স্মৃতি। আমেরিকার বিরুদ্ধে নিজের গোলেই বল জড়িয়েছিলেন কলম্বিয়ান এই ডিফেন্ডার। যার ফলে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছিল দল। দেশে ফেরার পর বাড়ির সামনেই তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয় সেম সাইড গোল করার জন্য। তাঁকেও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এ বার লরিস।
লরিসকে উদ্দেশ্য করে মন্তব্য আসতে শুরু করেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেউ লিখেছে, ‘আশা করি তোমার পুরো পরিবারের মৃত্যু হোক।’ এক জন তো আরও ভয়ঙ্কর কথা লিখেছে, ‘আমি তোমার মেয়েকে খুন করব।’ পরে লরিস টুইটে লেখেন, ‘‘এখনও ঘুমোতে পারিনি। ঘটনাগুলো বার বার ঘুরে ফিরে মাথায় আসছে। আমি আমার দলের সদস্যদের কাছে ক্ষমা চাইছি। সমর্থকদের কাছেও। আমি জানি আমি বড় ভুল করেছি। আমি ওই সময়টাকে মুছে ফেলতে চাই কিন্তু সেটা সম্ভব নয়।’’